এমপিওভূক্তি নিয়ে সংসদে ক্ষোভ, শিক্ষামন্ত্রীর অসহায়ত্ব প্রকাশ

‍sangsadনিজস্ব প্রতিবেদক: বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এমপিওভূক্তি নিয়ে আবারো সংসদে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন সংসদ সদস্যরা। তারা সংসদ অধিবেশনের প্রশ্নোত্তর পর্বে একের পর এক প্রশ্নে কবে, কিভাবে এমপিওভূক্তির কাজ শুরু হবে তা জানতে চেয়েছেন। জবাবে অসহায়ত্ব প্রকাশ করে শিক্ষামন্ত্রী নূরুল ইসলাম নাহিদ বলেছেন, আমার কোনো জবাব নেই। তবে, বিকল্পের অপেক্ষায় আছি। দ্রুতই শুরু করা সম্ভব হবে বলে আশা করি।

আজ মঙ্গলবার বিকেলে স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে সংসদ অধিবেশনে শুরু হয়। শুরুতেই প্রশ্নোত্তরের মুখোমুখী হন শিক্ষা মন্ত্রী। এসময় সম্পুরক প্রশ্নের সুযোগ নিয়ে তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেন সরকারী দলের সদস্য আ খ ম জাহাঙ্গীর হোসাইন। তিনি বলেন, আমরা শিক্ষা প্রতিষ্ঠান নিবন্ধন দিবো। সাবজেক্ট খোলার অনুমোদন দিবো। নিয়মিত শিক্ষা কার্যক্রম মনিটারিং করবো। কিন্তু এমপিওভূক্ত করবো না। এটা হতে পারে না। তিনি আরো বলেন, যোগ্য হওয়া সত্ত্বেও এমপিওভূক্ত না করতে পারলে নিবন্ধন বন্ধ রাখেন। অনার্স-ডিগ্রি খোলার অনুমতি দিবেন না। এবিষয়ে সরকার কি ভাবছে তা জানতে চান তিনি।

জবাবে শিক্ষা মন্ত্রী বলেন, আমি মাননীয় সংসদ সদস্যের বক্তব্যের সঙ্গে শতভাগ একমত। কিন্তু এবিষয়ে আমার কাছে জবাব নেই। আমি বেতন দিতে পারবো না, অথচ অনুমোদন দিবো। এটা আমিও চাই না। কিন্তু তারপরও সংসদ সদস্যদের চাপের মুখে অনুমোদন দিতে হয়। তিনি বলেন, এমপিওভূক্তির জন্য চেষ্টা চলছে। কোথা থেকে অর্থ পাওয়া যায়। এবিষয়ে নানা বিকল্প নিয়ে আলোচনা হয়েছে। দ্রুতই কোন একটা সমাধান আসবে বলে আশা করি।

এর আগে একই বিষয়ে সম্পুরক প্রশ্ন উত্থাপন করেন সরকার দলীয় হুইপ আতিউর রহমান আতিক ও মনিরুল ইসলাম। তাদের প্রশ্নের জবাবে শিক্ষা মন্ত্রী বলেন, এনিয়ে নিয়মিত আলোচনা চলছে। সরকারের কাছে নানা ভাবে বিষয়টির গুরুত্ব তুলে ধরা হয়েছে। অর্থের অপেক্ষায় আছি। অর্থ পেলেই এমপিও শুরু হবে। তিনি আরো বলেন, এমপিওভূক্ত না হলে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের উন্নয়ন কাজ হবে না, এটা ঠিক নয়। এমপিও’র সঙ্গে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের উন্নয়নের কোন সম্পর্ক নেই। এমপিদের কাছে তালিকা চাওয়া হয়েছে। তালিকা অনুযায়ী বেসরকারী শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের উন্নয়নে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

বেসরকারী শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এমপিওভূক্তি নিয়ে লিখিত প্রশ্ন উত্থাপন করেন সরকারী দলের সদস্য সিরাজুল ইসলাম মোল্লা, বেগম সেলিনা আখতার বানু, আলী আজম, বেগম আখতার জাহান, বেগম নূর জাহান বেগম, নবী নেওয়াজ, বেগম জেবুন্নেসা আফরোজা ও মোর্শেদ আলম এবং বিরোধী দল জাতীয় পার্টির ফখরুল ইমাম ও তরিকত ফেডারেশনের এম এ আওয়াল। তাদের প্রশ্নের জবাবে অনেকটা অভিন্ন জবাব দেন শিক্ষা মন্ত্রী। তিনি জানান, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এমপিওভূক্তি একটি চলমান প্রক্রিয়া। মহাজোট সরকারের বিগম মেয়াদে এক হাজার ৬২৪টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এমপিও করা হয়। এরপর প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এমপিওভূক্তি নির্দেশিকা সংশোধন করা হয়েছে। এরপর বেসরকারী শিক্ষক নিয়োগ বিধিমালা সংশোধনের জন্য কমিটি গঠন করা হয়েছে। ওই কমিটির প্রতিবেদন ও অর্থ বরাদ্দ পাওয়ার পর এমপিওভূক্তির বিষয়টি বিবেচনা করা হবে।

আওয়ামী লীগের কামাল আহমেদ মজুমদারের প্রশ্নের জবাবে নূরুল ইসলাম নাহিদ জানান, দেশের সকল স্কুল, কলেজ ও মাদ্রাসায় শিক্ষার্থীদের মধ্যে মাদক ও তামাকের অপব্যবহার রোধে সচেতনতা সৃষ্টির জন্য কমিটি গঠনসহ বিভিন্ন কর্মসূচী গ্রহণ করা হয়েছে। এছাড়া শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে মাদকাসক্ত শিক্ষার্থীদের বিশেষভাবে মনিটারিং করার জন্য বিভাগ, জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে কমিটি আছে।

Facebooktwitterredditpinterestlinkedinby feather
Image Not Found

Leave a Reply

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।