নতুন শিক্ষাক্রমে প্রথম পাবলিক পরীক্ষা ২০২৬ সালে

Image

নতুন শিক্ষাক্রমে প্রথম পাবলিক পরীক্ষা বা এসএসসি ২০২৫ খ্রিষ্টাব্দের শেষে বা ২০২৬ খ্রিষ্টাব্দের শুরুতে অনুষ্ঠিত হবে। চলতি বছর যেসব শিক্ষার্থী বিভাগ বিভাজন ছাড়া নবম শ্রেণিতে নতুন শিক্ষাক্রমে পড়াশোনা শুরু করেছেন তারা এ শিক্ষাক্রমের প্রথম এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নেবেন।

দশম শ্রেণির শেষে দশটি বিষয়ে এ পরীক্ষা হবে। এ পরীক্ষা প্রতিটি বিষয়ের ৫০ শতাংশ শিখনকালীন মূল্যায়ন ও ৫০ শতাংশ সামষ্টিক মূল্যায়ন বা পরীক্ষার মাধ্যমে হবে।

আরো পড়ুন: IELTS ছাড়াই প্রাথমিক ও মাধ্যমিকের শিক্ষকদের জন্য জাপানের বৃত্তি

এ বিষয়ে জানতে চাইলে আন্তশিক্ষা বোর্ড সমন্বয় কমিটির সভাপতি এবং ঢাকা মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডের সভাপতি অধ্যাপক তপন কুমার সরকার  বলেন, নতুন শিক্ষাক্রমে দশম শ্রেণির শেষে পাবলিক পরীক্ষা নেয়ার কথা বলা আছে।

এটির নাম এসএসসিই থাকবে। ২০২৫ খ্রিষ্টাব্দের দশম শ্রেণির শিক্ষার্থীরা নতুন শিক্ষাক্রমে পড়াশোনা শুরু করবেন। সে বছরের শেষে বা ২০২৬ খ্রিষ্টাব্দের শুরুতেই এসএসসি ও সমমান পরীক্ষা নেয়া হতে পারে।

তিনি আরো বলেন, এ পরীক্ষা আয়োজনের জন্য আমাদের কিছু প্রস্তুতির বিষয়ও আছে। প্রশ্ন প্রণেতা, পরীক্ষক, নিরীক্ষকদের প্রশিক্ষণ দিতে হবে। বোর্ডগুলো নিজ নিজ উদ্যোগে এ প্রশিক্ষণ দেবে।

জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড (এনসিটিবি) দশম শ্রেণির শেষ পাবলিক পরীক্ষাকে দশম শ্রেণির যোগ্যতা যাচাইয়ের পাবলিক পরীক্ষা বলছে।

বাংলা, ইংরেজি, গণিত, ইতিহাস ও সামাজিক বিজ্ঞান, বিজ্ঞান, জীবন ও জীবিকা, ডিজিটাল প্রযুক্তি, স্বাস্থ্য সুরক্ষা, ধর্ম শিক্ষা এবং শিল্প ও সংস্কৃতি এ দশটি বিষয়ে দশম শ্রেণি শেষে এ পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে।

আগে নবম শ্রেণি থেকেই বিভাগ বিভাজন শুরু হলেও নতুন শিক্ষাক্রমে তা হচ্ছে না। তাই এটাকে একমূখী শিক্ষা বলেও অভিহিত করা হচ্ছে। দশম শ্রেণির যোগ্যতা যাচাইয়ে প্রতিটি বিষয়ে ৫০ শতাংশ শিখনকালীন মূল্যায়ন ও ৫০ শতাংশ সামষ্টিক মূল্যায়ন (পরীক্ষা) হবে।

এনসিটিবি প্রণীত জাতীয় শিক্ষাক্রম রূপরেখায় বলা হয়েছে, প্রচলিত পরীক্ষা পদ্ধতি নিচুস্তরের বুদ্ধিবৃত্তিক বিকাশের মূল্যায়ন করতো। তাই প্রচলিত পাবলিক পরীক্ষা পদ্ধতি বহাল রেখে শিক্ষাক্রমের মূল উদ্দেশ্য অর্থাৎ শিক্ষার্থীর জ্ঞানের পাশাপাশি দক্ষতা, দৃষ্টিভঙ্গি ও মূল্যবোধ অর্জন সম্ভব হবে না। তাই নতুন শিক্ষাক্রমে পাবলিক পরীক্ষায় সামষ্টিক মূল্যায়নের পাশাপাশি শিখনকালীন মূল্যায়ন অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।

এনসিটিবির কর্মকর্তারা বলছেন, বিভাগ বিভাজন উঠিয়ে দেয়ায় নতুন শিক্ষাক্রমে নবম-দশম শ্রেণি পর্যন্ত সব শিক্ষার্থীই দশটি অভিন্ন বিষয় পড়বেন। তারপর উচ্চমাধ্যমিকে গিয়ে বিভাগ বিভাজন হবে।

উচ্চমাধ্যমিকে তিনটি বিষয় সবার জন্যই বাধ্যতামূলক থাকবে। আর নির্বাচিত বিষয়গুচ্ছ (যেমন পদার্থ, রসায়ন, জীববিজ্ঞান, অর্থনীতি ইত্যাদি) থেকে একজন শিক্ষার্থী তার আগ্রহ অনুযায়ী যেকোনো তিনটি বিষয় নির্বাচন করতে পারবেন। এ ক্ষেত্রে বিষয় নির্বাচনের ক্ষেত্রেও নমনীয়তার সুযোগ পাবেন।

অর্থাৎ কোনো শিক্ষার্থী চাইলে বিজ্ঞান বিষয়ের পাশাপাশি অন্য বিভাগের বিষয়ও নেয়ার সুযোগ পাবেন। এছাড়া পেশাগত দক্ষতার জন্য আরেকটি বিষয় ঐচ্ছিকভাবে নেয়ার সুযোগ থাকবে। নতুন শিক্ষাক্রমে একাদশ শ্রেণি শেষে এবং দ্বাদশ শ্রেণি শেষে আলাদা পাবলিক পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে। দুই পরীক্ষার ফলের ভিত্তিতে সম্মিলিত ফল দেয়া হবে।

রূপরেখায় বলা হয়েছে, একাদশ ও দ্বাদশ শ্রেণির পাবলিক পরীক্ষায় তিনটি আবশ্যিক বিষয়ে ৩০ শতাংশ শিখনকালীন মূল্যায়ন ও ৭০ শতাংশ সামষ্টিক মূল্যায়ন হবে।

তিনটি নৈর্বাচনিক বা বিশেষায়িত বিষয়ে বিষয়কাঠামো ও ধারণায়ন অনুযায়ী সামষ্টিক মূল্যায়নের পাশাপাশি অ্যাসাইনমেন্ট ও প্রজেক্টভিত্তিক মূল্যায়ন, ব্যবহারিক ও অন্যান্য উপায়ে শিখনকালীন মূল্যায়নের সুযোগ থাকবে। প্রয়োগিক একটি বিষয় বা ঐচ্ছিক বিষয়ে হাতে-কলমে কাজের মাধ্যমে শিখনকালীন মূল্যায়ন হবে।

Image Not Found

Leave a Reply

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।