যিনি ইউপি সচিব তিনিই কলেজ শিক্ষক, দুদকের মামলা

Image

নিজস্ব প্রতিবেদক,১১ সেপ্টেম্বর ২০২২: কানু কুমার নাথ (যিনি ইউপি সচিব) নামে এক ব্যক্তি চট্টগ্রামের হাটহাজারীর মির্জাপুর ইউনিয়ন পরিষদে ইউপি সচিব পদে কর্মরত। তিনি ফটিকছড়ির হেয়াকো বনানী ডিগ্রি কলেজের শিক্ষকও।

একসঙ্গে দুটি পদে কর্মরত থেকে সরকারি কোষাগার (কলেজ হতে গৃহীত) থেকে মোট ৫০ লাখ ৫৭ হাজার ২৩৯ টাকা উত্তোলন পূর্বক আত্মসাৎ করেছেন তিনি।
এ ঘটনায় রোববার (১১ সেপ্টেম্বর) চট্টগ্রামের দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) সমন্বিত জেলা কার্যালয়- ২ এ একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। কমিশনের সহকারী পরিচালক নুরুল ইসলাম বাদী হয়ে মামলাটি দায়ের করেন।

বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন দুদকের উপ-পরিচালক মো. আতিকুল আলম। তিনি বলেন, দণ্ডবিধির ৪২০/৪০৯ তৎসহ ১৯৪৭ সালের দুর্নীতি প্রতিরোধ আইনের ৫ (২) ধারায় একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে।

মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়েছে, কানু কুমার নাথ ১৯৯১ সালে চট্টগ্রাম জেলার হাটহাজারী উপজেলার ৩ নম্বর মির্জাপুর ইউনিয়ন পরিষদে ইউপি সচিব হিসাবে যোগ দেন। পরে ১৯৯৪ সালের ৫ মে আগের চাকরির তথ্য গোপন করে তিনি ফটিকছড়ির হেয়াকো বনানী ডিগ্রি কলেজে প্রভাষক হিসেবে যোগ দেন। ১৯৯৫ সালের ১ জুন তিনি এমপিওভুক্ত প্রভাষক হন। পরে তিনি ২০০২ সালে একই কলেজে সহকারী অধ্যাপক পদে পদোন্নতি পান। তার কলেজ ইনডেক্স নম্বর- ৪১১০৯০।

কানু কুমার নাথের একইসঙ্গে দুটি প্রতিষ্ঠানে চাকরি করার বিষয়ে সরেজমিনে অধিকতর তদন্তের জন্য কলেজের মধ্যেই পাঁচ সদস্যের একটি কমিটি করা হয়। কমিটির সদস্যরা তদন্ত শেষে অভিযোগের বিষয়ে প্রাথমিক সত্যতা পান। ২০২১ সালের ১৩ ফেব্রুয়ারি কমিটি তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করে।

অনুসন্ধানকালে প্রাপ্ত রেকর্ডপত্র যাচাই করে দেখা যায়, আসামি কানু কুমার নাথ হেয়াকো বনানী ডিগ্রি কলেজে ১৯৯৫ সালের নভেম্বর থেকে ২০২১ সালের জানুয়ারি পর্যন্ত সরকারি খাত (কলেজ হতে গৃহীত) থেকে বেতন-ভাতা বাবদ মোট ৫০ লাখ ৫৭ হাজার ২৩৯ টাকা উত্তোলন করেছেন।

দুই প্রতিষ্ঠানে চাকরি করে সরকারি তহবিল থেকে বেতন ভাতা উত্তোলন সংক্রান্ত বিষয়ে চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসকের কার্যালয় থেকে আরেকটি তদন্ত কমিটি গঠিত হয়। একসঙ্গে দুই প্রতিষ্ঠানে চাকরি করা স্থানীয় সরকার (ইউনিয়ন পরিষদ) কর্মচারী চাকরি বিধিমালা, ২০১১ এর বিধি ৩৩ এর উপবিধি ১(গ) ও ২(চ) এর সুস্পষ্ট লঙ্ঘন, যা জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের তদন্তে প্রমাণিত হয়েছে।

এ বিষয়ে আসামী কানু কুমার নাথের বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা দায়ের করা হয়। পরে বিভাগীয় তদন্তে অভিযোগের সত্যতা পাওয়ায় চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের স্থানীয় সরকার শাখার আদেশমূলে তার বেতন বর্তমান স্কেলের নিম্ন স্কেলে অবনমিত করা হয়। এর পরিপ্রেক্ষিতে এ আদেশে অনুসারে গত ২০২১ সালের ১৪ ডিসেম্বর থেকে কানু কুমার নাথ ইউপি সচিব হিসেবে ৩ নম্বর মির্জাপুর ইউনিয়ন পরিষদে অদ্যাবধি কর্মরত রয়েছেন।

কানু কুমার নাথ সরকারি চাকরি হিসেবে ইউনিয়ন পরিষদ সচিব পদে কর্মরত থেকে অসৎ উদ্দেশ্যে তথ্য গোপন করে ইচ্ছাকৃতভাবে প্রতারণার আশ্রয় নিয়ে হেয়াকো বনানী ডিগ্রি কলেজে প্রভাষক পদে যোগ দিয়ে এইসঙ্গে দুটি সরকারি পদে কর্মরত থেকে সরকারি কোষাগার (কলেজ হতে গৃহীত) থেকে মোট ৫০ লাখ ৫৭ হাজার ২৩৯ টাকা টাকা উত্তোলনপূর্বক আত্মসাৎ করেছেন। এ কারণেই দুদক তার বিরুদ্ধে মামলা করেছে।

Image Not Found

Leave a Reply

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।