নিজস্ব প্রতিবেদক | ০৮ এপ্রিল, ২০২২
বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ ও লেখক অধ্যাপক মুহম্মদ জাফর ইকবাল বলেছেন, মুন্সিগঞ্জের শিক্ষক হৃদয় মণ্ডলের সাথে যা হয়েছে তা আমার জন্য অত্যন্ত দুঃখের। দুঃখের এই কারণে যে, আমি শিক্ষকতা জীবনে বিজ্ঞানই পড়িয়েছি ছাত্র-ছাত্রীদের। আরও বেশি দুঃখের কারণ এই জন্য যে, দশম শ্রেণির বিজ্ঞান বই যেটি বাংলাদেশের হাইস্কুল পর্যায়ে পড়ানো হয় সেটি সম্পাদনার সাথে আমি জড়িত।
আরো পড়ুনঃ অবিলম্বে স্কুলশিক্ষক হৃদয় মণ্ডলের মুক্তি চায় ঢাবি শিক্ষক সমিতি
এক প্রতিক্রিয়ায় ভয়েস অব আমেরিকাকে তিনি আরো বলেন, আমার সম্পাদনা বা রচিত একটি বই বাচ্চাদের যেখানে এইসব প্রশ্নের উত্তর দিতে পারেনি, এই বই পড়ান এমন একজন শিক্ষককে করাগারে যেতে হয়েছে, এই দুঃখের তো কোনো শেষ নাই। আমি শুধু একটি কথাই বলতে চাই শিক্ষক হৃদয় মণ্ডলকে সসম্মানে মুক্তি দিতে হবে। নইলে আমাকেও যেন গ্রেফতার করা হয়।”
বাংলাদেশের মুন্সিগঞ্জ সদর উপজেলার বিনোদপুর রাম কুমার উচ্চবিদ্যালয়ের বিজ্ঞান ও গণিতের শিক্ষক হৃদয় চন্দ্র মণ্ডলের বিরুদ্ধে শ্রেণিকক্ষে ধর্ম অবমাননার অভিযোগে মামলা দিয়ে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। ইসলাম ধর্মকে অবমাননার অভিযোগে গত ২২ মার্চ বাদী হয়ে ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে মামলাটি করেন বিদ্যালয়ের অফিস সহকারী মো. আসাদ। ওই দিনই শিক্ষক হৃদয় চন্দ্র মণ্ডলকে গ্রেপ্তার করা হয়।
এর আগে গত ২০ মার্চ বিদ্যালয়টির দশম শ্রেণির মানবিক শাখার বিজ্ঞান ক্লাস নিচ্ছিলেন হৃদয় চন্দ্র মণ্ডল। সেখানে একটি বিষয় নিয়ে তার সঙ্গে শিক্ষার্থীদের কয়েকজনের পক্ষে-বিপক্ষ কথোপকথন হয়। একপর্যায়ে কোনো একজন শিক্ষার্থী ওই কথোপকথনের ভিডিও ধারণ করেন এবং বিনোদপুর রাম কুমার উচ্চবিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. আলাউদ্দীনকে জানান। প্রধান শিক্ষক হৃদয় চন্দ্র মণ্ডলকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেন। এই ঘটনা শিক্ষার্থীরা স্থানীয়দের জানায়। পরদিন সকালে স্থানীয়রা বিদ্যালয়ে এসে ওই শিক্ষককে গ্রেপ্তারের দাবিতে স্লোগান দেন। এরপর পুলিশ এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করে ও শিক্ষক হৃদয় চন্দ্র মণ্ডলকে আটক করে নিয়ে যায়।