সারা দেশের শিক্ষক সমাজ ক্ষুদ্ধ। দ্রুত বরখাস্ত বাতিলের দাবী
নিজস্ব প্রতিবেদক,১মে১৭ঃ গাজীপুরের কালীগঞ্জে উপজেলা শিক্ষা শামীম আহমেদ হাতে প্রধান শিক্ষক লাঞ্ছিতের হয়েও সেই শিক্ষক আব্দুল্লাহ আল মামুন সাময়ীক বরখাস্ত হয়েছেন। প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের ঢাকা বিভাগীয় উপ-পরিচালক ইন্দু ভূষণ দেব স্বাক্ষরিত সাময়ীক বরখাস্তের একটি চিঠি উপজেলা শিক্ষা অফিসে এসে পৌঁছেছে। গত শনিবার দুপুরে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বর্তমান উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা মো. সোহাগ হোসেন।
এদিকে প্রধান শিক্ষককে লাঞ্চিত করে পুরস্কার পেলেন সেই উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা। তার আবেদনের প্রেক্ষিতে তিনি অন্য উপজেলায় বদলী হলেন।
সুত্র জানায় কালীগঞ্জের ব্রাহ্মণগাঁও প্রাথমিক বিদ্যালয় পরিদর্শনে গিয়েছিলেন প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা। তিনি কী করেছেন? তার স্বীকারোক্তি নিম্নরূপ :’বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক কোনো তথ্য দিচ্ছিলেন না। তাই রাগ উঠে গিয়েছিল।’ রাগের মাথায় এই কর্মকর্তা কী করেছেন? গত ০৯ ফেব্রুয়ারী বৃহস্পতিবার প্রধান শিক্ষকের কাছে পরিদর্শক স্কুল সম্পর্কে বিভিন্ন তথ্য চান। এসব তথ্য প্রদানের জন্য প্রধান শিক্ষক একজন শিক্ষককে দায়িত্ব দেন। তথ্য প্রদানে কিছুটা বিলম্ব হচ্ছিল। তাতে ক্ষুব্ধ হন শিক্ষা কর্মকর্তা। এ বিলম্ব ইচ্ছাকৃত হতে পারে। স্কুল কর্তৃপক্ষ কিছু বিষয় লুকাতে পারেন। বিদ্যালয়ের অনিয়ম-দুর্নীতিও থাকতে পারে। শিক্ষা কর্মকর্তা কাঙ্ক্ষিত তথ্য না পেলে বিদ্যালয়টির প্রধান শিক্ষকের বিষয়ে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে সুপারিশ করতে পারতেন। তাৎক্ষণিক কিছু পদক্ষেপ গ্রহণের সুযোগও তার ছিল। ব্যবস্থাপনা কমিটিকেও অভিযোগ জানানো যেত। কিন্তু শিক্ষা কর্মকর্তার রাগ উঠে গিয়েছিল এবং তাতেই ঘটল বিপত্তি। তিনি টেবিলে থাকা স্ট্যাপলার ছুড়ে মারেন প্রধান শিক্ষককে লক্ষ্য করে; যার পরিণতিতে তাকে যেতে হয় হাসপাতালে। ওই অঞ্চলের প্রাথমিক শিক্ষকরা ঘটনায় ক্ষুব্ধ। তারা বিচার চাইছেন। ওই কর্মকর্তা উপজেলায় থাকলে তারা ক্লাস নেবেন না, স্কুলে যাবেন না বলে হুমকি দিয়েছেন। তাদের ক্ষোভ যৌক্তিক এবং দ্রুত প্রতিকার কাম্য। কিন্তু বিদ্যালয়ে না গেলে শিক্ষার্থীদের পড়াশোনায় বিঘ্ন ঘটবে। সেটা কেন তারা ঘটতে দেবেন? তাদের দাবি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে ইতিমধ্যে পেীছেছে। সেখানে প্রতিকার না মিললে আরও ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে যাওয়া যেতে পারে। গণমাধ্যম তাদের পাশে আছে। এ অবস্থায় কোমলমতি শিশুদের পড়াশোনার ক্ষতি হয় এমন কিছু কোনোভাবেই সমর্থনযোগ্য নয়। অন্যায়ের প্রতিকারের জন্য ন্যায়ের পথে চলতে সমস্যা নেই। শিক্ষকদের কাছ থেকে এ নৈতিক শিক্ষা কিন্তু শিক্ষার্থীরা প্রত্যাশা করতেই পারে।
যেখানে শাস্তি হবে ঐ উপজেলা শিক্ষা অফিসারের সেখানে শাস্তি পেল বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক। হায়রে প্রাথমিক বাংলার অভাগা শিক্ষক ।
এ ব্যাপারে ফেসবুকে নিন্দার ঝড় উঠেছে।
নাসির উদ্দিন নামে একজিন লিখেছেন ,কোনোমতেই এই ঘৃণ্য অপকর্ম মেনে নেওয়া যায় না……..নতুবা সহসায় এমন অাদেশ জারি করা হবে যে অামরা ফেবুতে (নেটে) বিভাগীয় কোন বিষয় তুলে ধরতে পারব না।অাশা করি সমিতি কার্যকর ব্যবস্থা নিবে……
আইয়ুব খান নামে একজন লিখেছেন,অন্যায় আদেশের জন্য ধিক্কার জানাই।
এ ব্যপারে প্রধান শিক্ষক সমিতির কেন্দ্রিয় সিনিয়ার যুগ্ন সাধারন সম্পাদক স্বরুপ দাস বলেন পুনরায় তদন্ত করে যে অপরাধী তার বিচার হওয়া প্রয়োজন। বিনা কারনে একজন প্রধান শাস্তি পাবে এটা মেনে নেয়া যায় না। আমরা শিক্ষক আব্দুল্লাহ আল মামুন সাময়ীক বরখাস্ত বাতিলের দাবীর পাশাপাশি এ রকম অন্যায় আদেশ না করার জন্য অনুরোধ করছি।
চলবে।