ঘাটাইলে মহিলা কলেজ ৯ বছর ধরে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ দিয়ে চলছে

টাঙ্গাইল প্রতিনিধি : ২৯ এপ্রিল :কোন ভাবেই ভারপ্রাপ্তের ভার থেকে যেন মুক্ত হতে পারছে না টাঙ্গাইলের ঘাটাইল উপজেলার একমাত্র মহিলা বিদ্যাপীঠ ব্রাহ্মণশাসন মহিলা কলেজ। ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ দিয়ে চলায় অনেকটাই স্থবির প্রশাসনিক কার্যক্রম। কলেজটি ১৯৯৮ খ্রিস্টাব্দে প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পর এমপিওভুক্ত হয় ২০১০ খ্রিস্টাব্দে। বর্তমানে কলেজটিতে ৩ শতাধিক শিক্ষার্থী পড়াশোনা করছে।

প্রথম অধ্যক্ষ ছিলেন এ এফ এম গোলাম কিবরিয়া। তিনি অন্যত্র চলে যাওয়ার পর দুই বছর ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের দায়িত্ব পালন করেন জুলফিকার আলী লিটন। এর পর অধ্যক্ষ হিসেবে যোগদান করেন শেখ ফিরোজ আহম্মেদ তিনিও অন্যত্র চলে যান। জেষ্ঠ্যতার ভিত্তিতে দায়িত্ব বর্তায় লুৎফুননাহার এর উপর। কথা থাকে তিন মাসের ভিতর যোগ্য নিয়মিত একজন অধ্যক্ষ নিয়োগের। ক্ষমতা পেয়ে তিনি নিয়মিত অধ্যক্ষ নিয়োগের কথা ভুলে যান, ২০০৮ খ্রিস্টাব্দ থেকে অদ্যবধি পর্যন্ত দীর্ঘ ৯ বছর ধরে পদটি ধরে আছেন তিনি। আর এ ৯ বছরে তার বিরুদ্ধে একাধিক অভিযোগ জমা পড়েছে বিভিন্ন দপ্তরে।

অনুসন্ধানে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ লুৎফুননাহার এর বিরুদ্ধে শিক্ষক-কর্মচারীদের বিভিন্ন অভিযোগ, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার তদন্ত ও অতিরিক্ত জেলা প্রশাসকের শিক্ষা বোর্ড বরাবর আবেদনসহ লিখিত তথ্য উঠে আসে।

লিখিত এসব তথ্য থেকে জানা যায়, ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ লুৎফুননাহারের অনিয়ম ও দুর্নীতি অভিযোগ এনে ২৭ জন শিক্ষক-কর্মচারীর  মধ্যে ২৬ জনই তার বিরুদ্ধে ২ বার অনাস্থা প্রদান করেন। সর্বশেষ অনাস্থা দেন শিক্ষকরা চলতি বছরের  ৩১ এপ্রিল।

এছাড়া কলেজটিতে নিয়মিত পরিচলনা পরিষদ কমিটি নেই দীর্ঘ প্রায় ৯ মাস। শিক্ষকরা নিয়মিত কমিটির করার কথা বললে উল্টো তাদের বিরুদ্ধে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ থানায় অভিযোগ দায়ের করেছেন বলে জানা যায়।

যোগদানের পর থেকেই অবৈধভাবে অর্থ আত্মসাৎ, অনুপস্থিত থেকে হাজিরা খাতায় সাক্ষরসহ নানা অভিযোগ রয়েছে।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আবুল কাশেম মুহাম্মদ শাহীন এর তদন্ত প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ অদক্ষতা ও অনভিজ্ঞতার কারণে কমিটি গঠনে অহেতুক সময় ক্ষেপণ করছেন। তিনি অনেক দিন ধরে ভারপ্রাপ্ত হিসেবে দায়িত্বে নিয়োজিত আছেন। শিক্ষার সুষ্ঠু পরিবেশের জন্য এবং প্রতিষ্ঠানটিকে একটি কার্যকর প্রতিষ্ঠানে রুপান্তরকরণের লক্ষ্যে একজন নিয়মিত অধ্যক্ষ নিয়োগ প্রদান জরুরী। তিনি এ প্রতিবেদনটি অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও তথ্য যোগাযোগ প্রযুক্তি) বরাবর পাঠান।

অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও তথ্য যোগাযোগ প্রযুক্তি) মো.মখলেছুর রহমান ঘাটাইল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার তদন্ত ও অন্যান্য দিক পর্যালোচনা করে ২০১৭ খ্রিস্টাব্দের ১৪ মার্চ শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান বরাবর একটি আবেদন  পাঠান। যাতে লেখা আছে কলেজটিতে দীর্ঘদিন ধরে নিয়মিত অধ্যক্ষ না থাকায় ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ নিজেই যাবতীয় কাজ করে থাকেন। নিয়মিত কমিটি ও অধ্যক্ষ নিয়োগের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ।

এ বিষয়ে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ লুৎফুননাহার বলেন, আমাকে সরানোর জন্য একটি রাজনৈতিক মহল উঠে পরে লেগেছে। পুরোটাই আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র।

Image Not Found

Leave a Reply

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।