নিজস্ব প্রতিবেদক,২১ ডিসেম্বর, ২০২২:
এমপিওভুক্ত ৬৮ হাজার শিক্ষক নিয়োগে চতুর্থ গণবিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছে বেসরকারি শিক্ষক নিবন্ধন ও প্রত্যয়ন কর্তৃপক্ষ (এনটিআরসিএ)। চতুর্থ ধাপে এ শিক্ষক প্রক্রিয়ায় বিভিন্ন বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ৬৮ হাজার ৩৯০টি এমপিওভুক্ত বা প্যাটার্নভুক্ত এন্ট্রি লেভেলের শিক্ষক নিয়োগ দেয়া হবে।
এসব পদের মধ্যে বিভিন্ন এমপিওভুক্ত স্কুল কলেজের ৩১ হাজার ৫০৮টি পদ এবং মাদরাসা ও কারিগরি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ৩৬ হাজার ৮৮২টি পদ রয়েছে। আগামী ২৯ ডিসেম্বর বেলা ১২টা থেকে অনলাইনে শিক্ষক নিয়োগের আবেদন শুরু হবে। আগামী ২৯ জানুয়ারি পর্যন্ত আবেদন গ্রহণ চলবে। আর ১ ফেব্রুয়ারি রাত ১২টা পর্যন্ত আবেদনের ফি দিতে পারবেন। বুধবার রাতে বেসরকারি শিক্ষক নিয়োগের চতুর্থ গণবিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে এনটিআরসিএ।
আরো পড়ুন: শিক্ষক নিয়োগ : দুই শর্তে গণবিজ্ঞপ্তি প্রকাশের সম্মতি
জানা গেছে, ১ হাজার টাকা ফি দিয়ে একটি মাত্র আবেদনে ৪০টি প্রতিষ্ঠান পছন্দ দিতে পারবেন প্রার্থীরা। ২০২০ খ্রিষ্টাব্দের ২৫ মার্চ যেসব প্রার্থীর বয়স ৩৫ বছর বা তার কম তারা শিক্ষক নিয়োগে আবেদনের সুযোগ পাবেন।
গণবিজ্ঞপ্তিতে এনটিআরসিএ জানিয়েছে, ৬৮ হাজার ৩৯০টি শিক্ষক শূন্যপদের তালিকা এনটিআরসিএর (www.ntrca.gov.bd) এবং টেলিটকের ওয়েবসাইটে (http://ngi.teletalk.com.bd) ২৯ ডিসেম্বর বেলা ১২টায় প্রকাশ করা হবে। এ সময়ের পর থেকে আবেদন করা যাবে। বিষয় পদ ও প্রতিষ্ঠানের ধরন অনুযায়ী নিবন্ধনধারীরা শিক্ষক নিয়োগে আবেদন করতে পরবেন।
আবেদনকারীর যোগ্যতা নিয়ে গণবিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, সংশ্লিষ্ট বিষয়, পদ ও প্রতিষ্ঠানের ধরন অনুযায়ী নিবন্ধনধারী হতে হবে, এনটিআরসিএ কর্তৃক প্রকাশিত সম্মিলিত মেধা তালিকার অন্তর্ভুক্ত থাকতে হবে, মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগ এবং কারিগরি ও মাদরাসা শিক্ষা বিভাগ থেকে জারিকৃত সর্বশেষ জনবল কাঠামো ও এমপিও নীতিমালা অনুযায়ী কাম্য শিক্ষাগত যোগ্যতা সম্পন্ন হতে হবে। কাম্য শিক্ষাগত যোগ্যতার বিবরণ দেখার জন্য এনটিআরসিএর ওয়েবসাইটের ‘চতুর্থ গণবিজ্ঞপ্তি’ নামের সেবা বক্সে ক্লিক করতে হবে।
শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগ এবং কারিগরি ও মাদরাসা শিক্ষা বিভাগ থেকে জারিকৃত সর্বশেষ জনবল কাঠামো ও এমপিও নীতিমালা অনুযায়ী প্রার্থীকে আবশ্যিকভাবে কেবলমাত্র তার শিক্ষক নিবন্ধন সনদে উল্লিখিত বিষয় সংশ্লিষ্ট পদ ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে আবেদন করতে হবে। আবেদনকারী মিথ্যা তথ্য প্রদানের মাধ্যমে আবেদন করলে এবং তদানুযায়ী নিয়োগ সুপারিশ প্রাপ্ত হলে উক্ত সুপারিশ বাতিলসহ তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
আবেদনকারীর বয়স নিয়ে গণবিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, প্রার্থীর বয়স ২০২০ খ্রিষ্টাব্দের ২৫ মার্চ ৩৫ বছর বা তার কম হতে হবে। প্রত্যেক আবেদনকারী নিবন্ধন সনদ অনুযায়ী একই পর্যায়ে (স্কুল/কলেজ) একটি মাত্র আবেদন করতে পারবেন।
একজন প্রার্থী শূন্য পদের তালিকা থেকে তার আবেদনে সর্বোচ্চ ৪০ টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের চয়েস বা পছন্দ দিতে পারবেন। পছন্দ দেয়ার পর কোন প্রার্থী যদি তার চয়েস বা পছন্দ বহির্ভূত দেশের যে কোন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে চাকুরি করতে ইচ্ছুক হন তবে তাকে ই-অ্যাপ্লিকেশন ফরমে প্রদর্শিত ‘আদার অপশন (Other Option)’ নামের বক্সে ইয়েস ক্লিক করতে হবে। যদি ইচ্ছুক না হোন তবে নো ক্লিক করতে হবে।
প্রতিষ্ঠান পছন্দ দেয়ার ক্ষেত্রে সর্তকতা অবলম্বন করতে প্রার্থীদের বলেছে এনটিআরসিএ। এনটিআরসিএ বলেছে, যেসব প্রতিষ্ঠানের সংশ্লিষ্ট শূন্যপদের বিপরীতে কাম্য সংখ্যক শিক্ষার্থী নেই যেসব প্রতিষ্ঠানের এমপিও পরবর্তীতে বা ভবিষ্যতে বাতিল হতে পারে বিধায় বিভিন্ন বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে প্রাপ্ত যেসব এমপিওভুক্ত প্রতিষ্ঠানে শূন্য পদের বিপরীতে কাম্য সংখ্যক শিক্ষার্থী নেই সেসব পদে পরবর্তীতে বা ভবিষ্যতে নিয়োগ সুপারিশ দেয়া যাবে না।
এনটিআরসিএর জানিয়েছে, কোন প্রার্থীর যদি স্কুল ও কলেজ উভয় পর্যায়ের সনদ থাকে এবং তিনি যদি উভয় পর্যায়ের পদে আবেদন করেন তবে প্রথমে তাকে কলেজ পর্যায়ে বিবেচনা করা হবে। কলেজ পর্যায়ে নির্বাচিত না হলে স্কুল পর্যায়ে বিবেচনা করা হবে। কলেজ পর্যায়ে নির্বাচিত হলে স্কুল পর্যায়ে বিবেচনা করা হবে না। সব আবেদনের জন্য আবেদনকারীকে নির্ধারিত এক হাজার টাকা ফি প্রদান করতে হবে। নির্ধারিত ফি প্রদান না করলে আবেদনটি বাতিল হবে।
আবেদন ফি প্রদানের তারিখ ও সময় নিয়ে এনটিআরসিএ বলছে, অনলাইনে আবেদন ফরম পূরণ ও ফি জমা দেয়া শুরুর তারিখ ও সময় ২৯ ডিসেম্বর বেলা ১২টা। অনলাইনে আবেদন জমা দেয়ার শেষ তারিখ ও সময় ২৯ জানুয়ারি রাত ১২টা। ২৯ জানুয়ারি রাত ১২টা থেকে শুধু অ্যাপ্লিকেশন আইডি পাওয়া প্রার্থীরা ১ ফেব্রুয়ারি রাত ১২টা পর্যন্ত এসএমএসের মাধ্যমে ফি জমা দিতে পারবেন।
গণবিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, শিক্ষক নিয়োগ সংক্রান্ত পরিপত্রের একটি অনুচ্ছেদের কার্যকারিতা সাময়িকভাবে স্থগিত করায় কর্মরত শিক্ষকদের (এমপিওভুক্ত) আবেদন করার সুযোগ নেই। তবে স্কুল পর্যায়ে যদি কোন নিবন্ধন সনদধারী ও এমপিওভুক্ত প্রার্থীর কলেজ পর্যায়ের শিক্ষক নিবন্ধন সনদ থাকে এবং তিনি যদি কলেজ পর্যায়ে এমপিওভুক্ত না হন তবে তার শিক্ষক নিবন্ধন সনদে উল্লিখিত কলেজ পর্যায়ের পদে ও প্রতিষ্ঠানে আবেদন করতে পারবেন। বিপরীতক্রমে কলেজ পর্যায়ে নিবন্ধন সনদধারী এমপিওভুক্ত প্রার্থীর যদি স্কুল পর্যায়ের শিক্ষক নিবন্ধন সনদ থাকে এবং তিনি যদি স্কুল পর্যায়ে এমপিওভুক্ত না হন তবে তার নিবন্ধন সনদে উল্লিখিত স্কুল পর্যায়ের পদে ও প্রতিষ্ঠানে আবেদন করতে পারবেন। যদি কোন প্রার্থী কোনো বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে চাকরিরত বা এমপিওভুক্ত হওয়া সত্ত্বেও তথ্য গোপন করে আবেদন করে নির্বাচিত হন তবে তার নির্বাচন বাতিল করা হবে এবং তার এমপিও বাতিলের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে জানানো হবে।
এনটিআরসিএ জানিয়েছে, মহিলা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ক্ষেত্রে সহকারী শিক্ষক (শারীরিক শিক্ষা) পদের জন্য শুধুমাত্র মহিলা প্রার্থীরা আবেদন করতে পারবেন। মহিলা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পুরুষ প্রার্থীদের আবেদন গ্রহণযোগ্য হবে না। প্রার্থী মিথ্যা তথ্য দিয়ে এ ধরনের প্রতিষ্ঠানে আবেদন করে নির্বাচিত হলে তার নির্বাচন বাতিল করা হবে। সহকারী শিক্ষক (ধর্ম ও নৈতিক শিক্ষা) পদে চাকরি প্রত্যাশী আবেদনকারীকে অবশ্যই সে ধর্মের অনুসারী হতে হবে। মিথ্যা তথ্য দিয়ে আবেদন করলে নির্বাচন বাতিল করা হবে। অনলাইনে ফরম পূরণের ক্ষেত্রে আবেদনকারীর নামের বানানসহ অন্যান্য তথ্য নিবন্ধন সনদে বর্ণিত তথ্যের অনুরূপ হতে হবে। নামের বানান নিবন্ধন সনদের অনুরূপ না হলে বা ভুল বানান ব্যবহার করলে কম্পিউটার প্রোসেসিংয়ে বিভ্রাট ঘটবে যার দায় সংশ্লিষ্ট আবেদনকারীকে বহন করতে হবে। যে সকল পদের বিপরীতে মহিলা কোটা প্রদর্শিত হবে, সে সকল পদে শুধুমাত্র মহিলা প্রার্থীগণ আবেদন করবেন। অবশিষ্ট সব পদে পুরুষ-মহিলা উভয় প্রার্থী আবেদন করতে পারবেন। অনলাইনে সফলভাবে আবেদন পেশ করার পর এনটিআরসিএর পক্ষ থেকে স্বয়ংক্রিয়ভাবে একটি এসএমএস পাঠানো হবে। এছাড়া আবেদনকারীকে স্ব-উদ্যোগে দাখিলকৃত আবেদনের (Applicant’s copy) একটি প্রিন্ট কপি সংরক্ষণ করতে হবে।
সমন্বিত জাতীয় মেধা তালিকা থেকে মেধার ভিত্তিতে প্রাথমিকভাবে নির্বাচনের পর নির্বাচিত প্রার্থীর প্রাক নিয়োগ জীবন বৃত্তান্ত যাচাই এর জন্য নিরাপত্তা ভেরিফিকেশন করা হবে। নিরাপত্তা ভেরিফিকেশনের ভিত্তিতে প্রার্থীকে চূড়ান্ত ভাবে বাছাই করে নিয়োগের জন্য সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের প্রধান বরাবর সুপারিশপত্র পাঠানো হবে। নির্বাচিত প্রার্থী এবং সংশ্লিষ্ট শিক্ষা প্রতিষ্ঠান প্রধানকে এসএমএসের মাধ্যমে অবহিত করা হবে। নিয়োগ সুপারিশে বর্ণিত সময়সীমার মধ্যে যদি কোন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান সুপারিশকৃত প্রার্থীকে নিয়োগ পত্র প্রদানে ব্যর্থ হয় তবে জনবল কাঠামো ও এমপিও নীতিমালা অনুযায়ী ওইসব প্রতিষ্ঠানের ম্যানেজিং কমিটি বা গভর্নিং বডি বাতিণের জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।