ডেস্ক,২১ এপ্রিল ২০২৩: গত মার্চে দেশের বিভিন্ন বেসরকারি এমপিওভুক্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শূন্য থাকা ৩২ হাজারের বেশি পদে নিবন্ধিত প্রার্থীদের শিক্ষক পদে নিয়োগের প্রাথমিক সুপারিশ করেছিলো বেসরকারি শিক্ষক নিবন্ধন ও প্রত্যয়ন কর্তৃপক্ষ (এনটিআরসিএ)।কিন্তু মাস পেরুলেও তাদের পুলিশ ভেরিফিকেশনই শুরু হয়নি।
৩২ হাজার নতুন শিক্ষকের যোগদান
এদিকে নতুন শিক্ষকরা দ্রুত যোগদান করে এমপিওভুক্ত হতে চাইছেন। তবে, প্রথমবারের মতো অনলাইনে পুলিশ ভেরিফিকেশনের আয়োজন গুছিয়ে উঠতে সময় লাগছে।
আরো পড়ুন: জাল সনদধারীদের শিক্ষক পদে নিয়োগের কোনো সুযোগ নেই
এমন পরিস্থিতিতে ঈদের পর পুলিশ ভেরিফিকেশন ফরম পূরণ শুরুর ইচ্ছা এনটিআরসিএর। সংস্থাটি চাইছে, ভিরোল ফরম পূরণ শুরু করে ভেরিফিকেশন চলমান থাকা অবস্থায় প্রার্থীদের চূড়ান্ত সুপারিশ করতে। তবে তা নির্ভর করছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের ‘গ্রিন সিগন্যালের’ ওপর। এনটিআরসিএর কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে এসব তথ্য জানা গেছে।
গত ১২ মার্চ বিভিন্ন বেসরকারি স্কুল-কলেজ, মাদরাসা ও কারিগরি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ৩২ হাজার ৪৩৮ প্রার্থীকে শিক্ষক পদে নিয়োগের প্রাথমিক সুপারিশ করা হয়েছিলো। পরিকল্পনা ছিলো এপ্রিলের প্রথম সপ্তাহে ভিরোল ফরম পূরণ শুরু করার। কিন্তু কারিগরি জটিলতায় তা সম্ভব হয়নি।
জানতে চাইলে এনটিআরসিএর শিক্ষাতত্ত্ব ও শিক্ষামান সংশ্লিষ্ট শাখার পরিচালক কাজী কামরুল আহছান শিক্ষাবার্তাকে বলেন, সুরক্ষা সেবা বিভাগ পুলিশ ভেরিফিকেশনের আয়োজন করছে। এবার ফরম পূরণ হবে অনলাইনে। এ জন্য সফটওয়্যার প্রস্তুত করা হচ্ছে।
কিন্তু প্রথমেই ৩২ হাজার নতুন শিক্ষকের যোগদান নিয়ে পুলিশ ভেরিফিকেশনের প্রস্তুতি নিতে কিছুটা সময় লাগছে। তারা সফটওয়্যারের একটি কমন কাঠামো প্রস্তুত করেছে। কিন্তু বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের বিভিন্ন পদের যোগ্যতাসহ অন্যান্য অনেক বিষয় আলাদা। এনটিআরসিএকে জানানো হয়েছে সেসব দিকের প্রস্তুতি চলছে।
জানতে চাইলে এনটিআরসিএর সচিব মো. ওবায়দুর রহমান দৈনিক শিক্ষা বার্তাকে বলেন, আশা ছিলো ঈদের আগেই পুলিশ ভেরিফিকেশনের ফরম পূরণ শুরু করার। কিন্তু সুরক্ষা সেবার প্রস্তুতি শেষ হয়নি, তাই কার্যক্রম শুরু করা যায়নি। তবে, ঈদের পর পুলিশ ভেরিফিকেশনের ফরম পূরণ শুরু করতে পারবে বলে আশা করছি।
তবে, সুনির্দিষ্টভাবে কবে নাগাদ ফরম পূরণ শুরু হবে সে বিষয়ে কোনো মন্তব্য করেননি তিনি। কর্মকর্তারা বলছেন, সুরক্ষা সেবা বিভাগ সফটওয়্যার প্রস্তুত করলেই ভিরোল ফরম পূরণ শুরু হবে।
এদিকে এনটিআরসিএর অপর এক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, সুরক্ষা সেবা অন্যান্য বিভাগের ২০০-৪০০ পদে নিয়োগে অনলাইন পুলিশ ভেরিফিকেশন ফরম পূরণ শুরু করতে পারতো। কিন্তু তারা তা না করে ৩২ হাজার শিক্ষক নিয়োগের অনলাইন ভেরিফিকেশন করতে চেয়েছে। এতেই এ পরিস্থিতি।
এদিকে নতুন শিক্ষকরা দ্রুত যোগদান করতে চাচ্ছেন। নিয়ম অনুযায়ী পুলিশ ভেরিফিকেশনের পর প্রার্থীদের চূড়ান্ত সুপারিশ করার কথা। কিন্তু বছর পেরুলেও তৃতীয় চক্রে শিক্ষক নিয়োগের ৩৪ হাজার প্রার্থীর পুলিশ ভেরিফিকেশন এখনো শেষ হয়নি। এনটিআরসিএর কর্মকর্তারা বলছেন, মাত্র কয়েকশ প্রার্থীর পুলিশ ভেরিফিকেশনের কাজ শেষ হয়েছে।
একটি সুত্র জানিয়েছে, এমন পরিস্থিতিতে পুলিশ ভেরিফিকেশন চলমান রেখে চতুর্থ গণবিজ্ঞপ্তিতে সুপারিশ পাওয়া ৩২ হাজার প্রার্থীকে চূড়ান্ত সুপারিশ করতে চাচ্ছে এনটিআরসিএ। তবে, এজন্য শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অনুমতি পেতে হবে।
জানতে চাইলে এনটিআরসিএর সচিব মো. ওবায়দুর রহমান দৈনিক আমাদের বার্তাকে বলেন, তৃতীয় গণবিজ্ঞপ্তির পুলিশ ভেরিফিকেশনের কাজ শেষ হয়নি। কয়েকশ প্রার্থীর তথ্য এসেছে। আমরা তথ্য দ্রুত পাঠালেও মাঠ পর্যায়ের কাজ শেষ হতে সময় লাগে। আর পুলিশের অন্যান্য কাজও আছে।
পুলিশ ভেরিফিকেশন শুরু হলে আমরা তা চলমান রেখে প্রার্থীদের চূড়ান্ত সুপারিশের বিষয়ে ভাববো। ভেরিফিকেশন শুরু হোক এরপর শিক্ষা মন্ত্রণালয়কে এ বিষয়ে জানিয়ে অনুমতি চাওয়া হবে বলেও ইঙ্গিত দেন এ কর্মকর্তা।