ঢাকা: শিক্ষাব্যবস্থায় সৃজনশীল পদ্ধতি পুরোপুরি প্রয়োগ করতে পারেননি বলে স্বীকার করেছেন শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ।
শনিবার রাজধানীর বাংলামোটরে বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রে আয়োজিত পাঠাভ্যাস উন্নয়ন কর্মসূচির সেরা সংগঠকদের পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে শিক্ষামন্ত্রী এ কথা বলেন।
নুরুল ইসলাম নাহিদ বলেন, সৃজনশীল পদ্ধতির ওপর শিক্ষকদের বিশেষ প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে। কিন্তু সেটি নিয়ে শিক্ষকদের মধ্যে আরও কাজ করার উদ্যোগ কম। শুধু মুখস্থ করে বা নকল করে যেকোনো প্রক্রিয়ায় শুধু পাস করলে হবে না। শিক্ষার্থীদের প্রকৃত অর্থে সৃজনশীল করে তুলতে হবে, যেন শিক্ষকেরা পড়ানোর পর একজন শিক্ষার্থী আরও পাঁচটি কাজ একাই করতে পারে। তবেই সৃজনশীল পদ্ধতি কাজে দেবে।
জঙ্গিবাদ এখন দেশের জন্য একটি বড় সমস্যা হিসেবে দেখা দিয়েছে বলে মন্তব্য করেন শিক্ষামন্ত্রী।
‘শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ১০ দিন অনুপস্থিত থাকলেই কোনো শিক্ষার্থী জঙ্গি—এমন কথা আমরা বলিনি। এ নিয়ে বিভ্রান্তির সৃষ্টি হয়েছে। আমরা বলেছি, ১০ দিন অনুপস্থিত থাকলে শিক্ষকেরা এর কারণ খুঁজে দেখবেন।’ জঙ্গিবাদ প্রতিরোধে বই পড়া কর্মসূচি একটি ভালো উপায় বলে মনে করেন নুরুল ইসলাম নাহিদ।
তিনি বলেন, বর্তমানে উচ্চশিক্ষিত তরুণেরা জঙ্গি হচ্ছে। গুলশান ও শোলাকিয়ায় জঙ্গি হামলার পর এমনটাই দেখা গেছে। তাদের বিভ্রান্ত করা হচ্ছে। ভালো বই পড়ালে তাদের সঠিক পথে রাখা সম্ভব। এটি তাদের প্রকৃত মানুষ হিসেবে গড়ে তুলতে পারে।
পাঠাভ্যাস উন্নয়ন কর্মসূচির আওতায় ঢাকা বিভাগের মোট ১৫৩ জন সংগঠককে সম্মাননা দেওয়া হয়। সেকেন্ডারি এডুকেশন কোয়ালিটি অ্যান্ড অ্যাকসেস এনহান্সমেন্ট প্রজেক্টের (সেকায়েপ) এই কর্মসূচির মোট সংগঠকের মাত্র ১০ শতাংশকে সেরা সংগঠক হিসেবে বেছে নেওয়া হয়েছে বলে জানান আয়োজকেরা।
বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রের সভাপতি অধ্যাপক আবদুল্লাহ আবু সায়ীদ বলেন, ‘যখন কাজ উন্নতমানের হয়, তখনই পুরস্কার দেওয়া হয়। যোগ্যতা কখনো অপুরস্কৃত থাকে না।’ বই পড়া সম্পর্কে তিনি বলেন, কচি ছেলেমেয়েদের আগে সাহিত্য পড়তে দিতে হবে। তারা আগে মজার বই পড়বে। এরপর ধীরে ধীরে দর্শন, বিজ্ঞান ইত্যাদি পড়বে।
‘বিউটি অ্যান্ড দ্য বিস্ট’ গল্পের সূত্র টেনে অধ্যাপক আবদুল্লাহ আবু সায়ীদ বলেন, ‘আমরা যাদের জানোয়ার বলি, তাদের মধ্যেই রাজপুত্র আছে। যদি তাদের জন্য দু-ফোঁটা চোখের পানি ফেলি, তবেই তা সম্ভব হবে। তবেই আলোকিত বাংলাদেশ গড়ে তোলা যাবে।’
অনুষ্ঠানে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. সোহরাব হোসাইন, মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ড. এস এম ওয়াহিদুজ্জামান, অতিরিক্ত সচিব ও সেকায়েপের প্রকল্প পরিচালক ড. মো. মাহামুদ-উল-হক প্রমুখ বক্তব্য দেন।