শিক্ষা, প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ে ইসির চিঠি
দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচন উপলক্ষে আগামী সাত ডিসেম্বরের মধ্যে সকল পাবলিক ও টেস্ট পরীক্ষা শেষ করার তাগিদ দিয়েছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। পরীক্ষা শেষ করার সময়সীমা বেঁধে দিয়ে এ সংক্রান্ত চিঠি শিক্ষা, প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে। কমিশন সচিবালয়ের সিনিয়র সহকারী সচিব ফরহাদ হোসেন স্বাক্ষরিত চিঠিতে নির্ধারিত সময়ের মধ্যে সব পরীক্ষা শেষ করার অনুরোধ জানানো হয়েছে। এছাড়াও নির্বাচন কমিশনের সব অফিসের (আঞ্চলিক, জেলা ও উপজেলা অফিস) নিরাপত্তা জোরদার করার জন্য স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে আরেকটি চিঠি দেয়া হয়েছে।
জানতে চাইলে ইসি সচিবালয়ের সচিব ড. মোহাম্মদ সাদিক শিক্ষাবার্তাকে বলেন, সময়মতো পরীক্ষা শেষ করার জন্য মন্ত্রণালয়ে চিঠি পাঠানো হয়েছে। আশা করছি জাতীয় নির্বাচনের স্বার্থে কমিশনের ধার্যকৃত সময়ের মধ্যে সকল পরীক্ষা সম্পন্ন হবে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, আগামী ১৯ জানুয়ারির মধ্যে জাতীয় নির্বাচন সম্পন্ন করতে যাবতীয় প্রস্তুতি প্রায় শেষ করেছে কমিশন। এর আগে নভেম্বরের শেষভাগে অথবা ডিসেম্বরের প্রথমভাগে নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করতে যাচ্ছে কমিশন। নির্বাচনী কাজে যাতে ব্যাঘাত না ঘটে এ জন্য আগামী ডিসেম্বরের প্রথম সপ্তাহের মধ্যে সব পাবলিক পরীক্ষা এবং টেস্ট পরীক্ষা শেষ করার জন্য শিক্ষা, প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়কে বলা হয়েছে। ইতিমধ্যে সংশ্লিষ্ট দুই মন্ত্রণালয় থেকে দেশের সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ইসির পরীক্ষা শেষ করার আহবান সংক্রান্ত বিজ্ঞপ্তি পাঠানো হচ্ছে।
ইসির একজন কর্মকর্তা ইত্তেফাককে বলেন, নির্বাচনী প্রস্তুতি প্রায় চূড়ান্ত হয়েছে। এখন বাকি রয়েছে কিছু আনুষঙ্গিক কাজ। ভোটার তালিকা মুদ্রন, সংসদীয় আসনের সীমানা পুনর্নির্ধারণ, নির্বাচনী সরঞ্জাম সংগ্রহ থেকে অন্যান্য কাজ শেষ হয়েছে। সেই সঙ্গে ভোটার স্থানান্তর সাময়িক স্থগিত হচ্ছে ৫ নভেম্বর থেকে। এরপর থেকে নির্বাচনের আগ পর্যন্ত কোন ভোটার স্থানান্তর হতে পারবেন না।
এদিকে, ইসির কর্মকর্তা ও কার্যালয়ে নিরাপত্তা জোরদারের ব্যবস্থা নিতে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জ্যেষ্ঠ সচিবের কাছে অনুরোধ জানানো হয়েছে। নির্বাচনের ক্ষণ গণনার শুরুতে বিদ্যমান সহিংস রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে নির্বাচন কমিশনের মাঠপর্যায়ের কার্যালয়গুলোর নিরাপত্তা চাওয়া হয়েছে। সম্প্রতি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জ্যেষ্ঠ সচিব বরাবর এ বিষয়ে চিঠি দিয়েছে ইসি সচিবালয়। ইসির উপ-সচিব আবুল কাশেম স্বাক্ষরিত ওই চিঠিতে বলা হয়, দশম সংসদ নির্বাচনের প্রস্তুতি শুরু হয়ে হয়েছে। এ লক্ষ্যে নির্বাচনী মালামাল সরবরাহ, সংরক্ষণ, সংগ্রহ, বিতরণ ও পরিবহন করা হচ্ছে। ২৭ অক্টোবর থেকে নির্বাচনকালীন ৯০ দিন শুরু হয়েছে। ২৪ জানুয়ারির মধ্যে দশম সংসদ নির্বাচনের বাধ্যবাধকতাও রয়েছে। এ অবস্থায় নির্বাচন কমিশন ও ইসি সচিবালয়ে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। কেন্দ্রীয় পর্যায়ে নিরাপত্তা জোরদারের তথ্য তুলে ধরে মাঠপর্যায়ের আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তার কার্যালয়, জ্যেষ্ঠ ও জেলা নির্বাচন কর্মকর্তার কার্যালয় ও থানা/ উপজেলা কর্মকর্তার কার্যালয়ে নিরাপত্তা জোরদারের অনুরোধ জানান ইসি সেবা শাখার উপ সচিব। ইসি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে বলেছে, বর্তমান প্রেক্ষাপটে ইসি সচিবালয়ের ন্যায় মাঠপর্যায়ের সব কার্যালয়ে নিরাপত্তা জোরদার করা আবশ্যক। মাঠপর্যায়ের কর্মকর্তা-কর্মচারির নিরাপত্তা, অফিসের সরঞ্জাম ও নির্বাচনী মালামাল সংরক্ষণ, ১০ আঞ্চলিক কার্যালয়, ৬৪ জেলা নির্বাচন কার্যালয় ও ৫১২টি উপজেলা/থানা নির্বাচন অফিসের নিরাপত্তা বিধানের জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে অনুরোধ করা হয়। এ বিষয়টি অবগতির জন্যে পুলিশ সদর দপ্তর, র্যাব, মহানগর পলিশসহ স্থানীয় প্রশাসনকে চিঠি পাঠানো হয়েছে।
উল্লেখ্য, সংবিধানের ১২৩ (৩) (ক) অনুযায়ী সংসদের মেয়াদ শেষ হওয়ার পূর্ববর্তী ৯০ দিনের মধ্যে অনুষ্ঠিত হবে আগামী দশম সংসদ নির্বাচন। অর্থাত্ ২৭ অক্টোবর থেকে আগামী বছরের ২৪ জানুয়ারি মধ্যে হওয়ার কথা আগামী সংসদ নির্বাচন।