বেসরকারি শিক্ষকদের অবসরকালীন সুযোগ-সুবিধা দিতে বিবাদের নিষ্ক্রিয়তা ও ব্যর্থতাকে কেন বেআইনি ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে রুল জারি করেছেন হাইকোর্ট।
আগামী চার সপ্তাহের মধ্যে মন্ত্রী পরিষদ সচিব, অর্থসচিব, শিক্ষা সচিবসহ সংশ্লিষ্ট ১৫ জনকে রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।
এক রিট আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে হাইকোর্টের বিচারপতি ওবায়দুল হাসান ও বিচারপতি কৃষ্ণা দেবনাথের হাইকোর্ট বেঞ্চ এই আদেশ দেন।
একইসঙ্গে অবসরে যাওয়ার ৬ মাস পরও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের যেসকল শিক্ষক সুযোগ-সুবিধা পাননি (ভাতাদি) তাদের সংখ্যা এবং বেসরকারি শিক্ষক অবসরকালীন সুযোগ সুবিধা সংক্রান্ত বোর্ডের (বেনবেইজ) ফান্ডে কত টাকা রয়েছে তার পরিমাণও জানতে চেয়েছেন আদালত।
বেনবেইজের সদস্য সচিব, এ সংক্রান্ত ট্রাস্টি বোর্ডের সদস্যকে আগামী তিন মাসের মধ্যে আদালতে প্রতিবেদন আকারে তা দাখিল করতে বলা হয়েছে।
আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন অ্যাডভোকেট মনজিল মোরসেদ। অপরদিকে রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন সহকারি অ্যাটর্নি জেনারেল সমরেন্দ্র নাথ বিশ্বাস।
আদেশের বিষয়ে আইনজীবী মনজিল মোরসেদ জানান, এর আগে সংবাদপত্রে ‘জীবন সায়াহ্নে ৭৬ হাজার শিক্ষকের আহাজারি’ শিরোনামে সংবাদ প্রকাশ পায়। এর পরিপ্রেক্ষিতে গত ১৭ অক্টোবর সংশ্লিষ্টদের প্রতি লিগ্যাল নোটিশ পাঠানো হয়।
ওই নোটিশের জবাব না পেয়ে জনস্বার্থে একটি রিট আবেদন করে হিউম্যান রাইটস এ্যান্ড পিস ফর বাংলাদেশ। রিটে পত্রিকায় প্রকাশিত প্রতিবেদন সংযুক্ত করে দেওয়া হয়। আজ ওই রিটের শুনানি করে আদালত এই নির্দেশ দেন।
পত্রিকায় প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়,সারাজীবন শিক্ষকতা করে অবসর গ্রহণের পর জীবন সায়াহ্নে এসে প্রায় ৭৬ হাজার শিক্ষক কল্যাণ ট্রাস্ট ও অবসর সুবিধার অর্থ না পেয়ে আহাজারি করছেন।
শিক্ষকদের এমপিওর (মান্থলি পে অর্ডার) ২ শতাংশ অর্থ কেটে রাখা হয় বেসরকারি শিক্ষক-কর্মচারী কল্যাণ ট্রাস্ট তহবিলে। আর ৪ শতাংশ কেটে রাখা হয় অবসর সুবিধা বোর্ড তহবিলে। মাসিক বেতনের অংশ থেকে কেটে রাখা অর্থ এই খাতে জমা রাখলেও চাকরি শেষে তা পাওয়ার জন্য পোহাতে হচ্ছে অশেষ ভোগান্তি। বার্ধক্যে উপনীত শিক্ষকরা জীবনের শেষ সময়গুলোয় একটু ভালো থাকতে, সুস্থ থাকতে এই টাকার জন্য রাজধানীর নীলক্ষেতে বেনবেইস ভবনে দায়িত্বরত কর্মকর্তাদের দ্বারে দ্বারে ঘুরছেন।
শিক্ষকদের অনেকে রোগাক্রান্ত কিন্তু অর্থাভাবে চিকিৎসা করতে পারছেন না। প্রয়োজনীয় ওষুধ কিনতেও পারছেন না। শিক্ষকদের অনেকেই মারা গেছেন অবসরভাতার অর্থ হাতে না পেয়েই। এ অর্থের জন্য আবেদন করলেও তাদের অর্থ ছাড় হচ্ছে চার থেকে ছয় বছর পর।
শিক্ষকরা অবসরে যাওয়ার পর আবেদন করলে তাদের চার-পাঁচ বছর পর খোঁজ নিতে বলা হচ্ছে সংশ্লিষ্ট কার্যালয় থেকে। সরকারের অর্থপ্রাপ্তির পর হয়তো শিক্ষকদের অবসর সুবিধার অর্থ পেতে বেশি দুর্ভোগ পোহাতে হবে না্।