ডেস্ক,৪ মে:
বাংলাদেশের অল্প কয়েকটি বাদে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলো কেবল সনদ বিক্রির ভবনে পরিণত হয়েছে এবং পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে দলীয় রাজনীতি শিক্ষাগতমানের উপরে প্রভুত্ব করছে। শনিবার সকাল সাড়ে ১১টায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানানো হয়।
‘কেমন বিশ্ববিদ্যালয় চাই: উচ্চশিক্ষা, নীতিমালা, কাঠামো’ শীর্ষক কনভেনশনের সারসংক্ষেপ তুলে ধরতে এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। গত ১১-১২ এপ্রিল জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে অনুষ্ঠিত এই কনভেনশন। কনভেনশনটি আয়োজন করে ‘বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক নেটওয়াক’।
কনভেনশনে সরকারি কর্তৃত্ব, স্বায়ত্তশাসনের অপব্যবহারসহ দেশের সরকারি-বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে চিহ্নিত আটটি সঙ্কট ও ছয়টি সমাধান সংবাদ সম্মেলনে তুলে ধরা হয়। সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন- ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের অধ্যাপক ড. ফাহমিদুল হক ও সমাজ বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষক ড. সামিনা লুৎফা।
সংবাদ সম্মেলনে উল্লেখিত বাংলাদেশের উচ্চশিক্ষার সমস্যাগুলো হলো- বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে সরকারিক কর্তৃত্ব, নয়া উদারবাদী নীতি ও ইউজিসির কৌশলপত্র, স্বায়ত্তশাসনের অপব্যহার, শিক্ষা ও গবেষণায় কম বরাদ্দ, অস্বায়ত্তশাসিত বিশ্ববিদ্যালয়, দলীয় বিবেচনায় শিক্ষক নিয়োগ ও এমসিকিউনির্ভর শিক্ষার্থী ভর্তি, শিক্ষার্থীদের আবাসন ও ছাত্র রাজনীতি এবং মুনাফামুখী বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়।
এ সব সঙ্কট সমাধানে ছয়টি প্রস্তাব তুলে ধরেন অধ্যাপক ফাহমিদুল হক। সেগুলো হলো, রাষ্ট্র কর্তৃক সমাধান, ইউসিজির কৌশলপত্রে পরিবর্তন, বিশ্ববিদ্যালয় পরিচালনায় আইনের সংস্কার, বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে বৈষম্যদ‚রীকরণ, পাঠদান ও গবেষণায় জবাবদিহিতার ব্যবস্থা, ভর্তি ও নিয়োগে পরিবর্তন করা।
অধ্যাপক ফাহমিদুল হক বলেন, দলগত ও আঞ্চলিক বিবেচনায় শিক্ষক নিয়োগ সম্পূর্ণ বন্ধ করতে হবে। নিজ বিশ্ববিদ্যালয় ও বিভাগে পাস করা শিক্ষার্থীদের ওই বিভাগে চাকরি দেবার প্রবণতা বদলাতে হবে।
সামিনা লুৎফা বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর সার্বিক মানের অবনমন ঘটেছে বলে একটি ধারণা ধীরে ধীরে সমাজে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে দলীয় রাজনীতি শিক্ষাগতমানের উপরে প্রভুত্ব করছে। অল্প কয়েকটি বাদ দিয়ে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলো কেবল সনদ বিক্রির ভবনে পরিণত হয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন- জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের শিক্ষক আনু মুহাম্মদ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে উন্নয়ন অধ্যয়ন বিভাগের অধ্যাপক ড. কাজী মারুফুল ইসলাম, অর্থনীতি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ড রুশাদ ফরিদী, আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের ড. মোহাম্মদ তানজীমউদ্দিন খান প্রমুখ।