শিক্ষাবার্তা ডেস্কঃ শিক্ষার্থীরা বাকি খেয়ে দীর্ঘদিন ধরে পরিশোধ না করায় বিপাকে পড়েছেন ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় (ইবি) ক্যাম্পাসে অবস্থিত দোকান ব্যবসায়ীরা। শিক্ষার্থীদের কাছে ব্যবসায়ীদের প্রায় কয়েক লাখ টাকা বাকি রয়েছে বলে জানা গেছে।
এদিকে পাওনা টাকা পরিশোধ করতে বললে শিক্ষার্থীদের কাছে উল্টো হুমকির শিকার হন বলে অভিযোগ করেছেন তারা। অনেক সময় মারধরেরও শিকার হচ্ছেন তারা। নিরুপায় হয়ে অনেকে ব্যবসা ছাড়তে বাধ্য হয়েছেন।
আরো পড়ুন: বেরোবির আসন ফাঁকা ২৯২ , ডাকা হয়েছে ভর্তিচ্ছুদের
বাকি খাওয়া অধিকাংশ শিক্ষার্থী ক্ষমতাসীন ছাত্রলীগের নেতা-কর্মী পরিচয় দেয় বলে অভিযোগ ভুক্তভোগীদের। এসব বিষয়ে একাধিক ব্যবসায়ী অভিযোগ করে বলেছেন, বছর পার হলেও আমরা বাকি টাকা আদায়ে ব্যর্থ হয়েছি। টাকা চাইলে উল্টো দেখে নেওয়ার হুমকি দেওয়া হয়। এজন্য আমরা নিরুপায়। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কাছে এর প্রতিকার চাই।
জানা যায়, ক্যাম্পাসের ছাত্র ও ছাত্রী হল সংলগ্ন এলাকায় প্রায় ১৫টার মতো মুদি দোকান ও ৪টি খাবার হোটেল, আমবাগান এলাকায় ২টি মুদি দোকান ও ৪টা খাবার হোটেল রয়েছে। এসব দোকানে শিক্ষার্থীদের প্রায় দুই লাখ টাকা বাকি পড়ে আছে। এছাড়া ছাত্রদের আবাসিক হল রয়েছে ৫টি। এসব হলের ডাইনিংগুলোতেও বাকি খাওয়ার হিড়িক রয়েছে। সম্প্রতি বাকি খাওয়া টাকা চাইতে গেলে ছাত্রনেতাদের চাপের মুখে সাদ্দাম হোসেন হলের ডাইনিং ছেড়েছেন সাবেক ম্যানেজার আবেদ হোসেন। তিনি প্রায় ২৬ বছর এই হলে ডাইনিং পরিচালনা করেছেন।
এদিকে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ভুক্তভোগী এক চা বিক্রেতা বলেন, প্রায় লাখ টাকার বাকি রয়েছে আমার দোকানে। এসব টাকা চাইলে দিচ্ছি-দিবো বলে বছর পার হয়ে যায়, টাকা দেওয়ার কোনো খোঁজ থাকে না। আবার অনেকে ইচ্ছেমতো এটা-ওটা নিয়ে যায়, টাকা দেয় না, খাতায় লিখতে দেয় না। কিন্তু পরে তার আর কোনো খোঁজ থাকে না। আমি গরীব মানুষ। এত টাকার বাকি নিয়ে এই ছোট দোকান চালানো আমার পক্ষে দুঃসাধ্য হয়ে পড়েছে। এভাবে চললে হয়তো দোকান ছেড়ে দিয়ে পথে বসতে হবে। আমি এর প্রতিকার চাই।
জিয়া মোড়ের এক মুদি ব্যবসায়ী বলেন, ছাত্রলীগের কিছু নেতার মোটা অঙ্কের অনেক পুরাতন বাকি রয়েছে। বারবার এসব টাকা চাইলেও আশ্বাস দিয়ে বছর পার করে দিয়েছে, এখনো সেই টাকা পাওয়া যায়নি। করোনার সময় দোকান বন্ধ থাকায় আর্থিকভাবে খুবই খারাপ অবস্থায় পড়েছিলাম। তখনও টাকা চেয়ে টাকা পাইনি। পরে টাকা পাওয়ার আশা ছেড়েই দিয়েছি।
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. শেলীনা নাসরীন বলেন, ব্যবসায়ীদের পক্ষ থেকে আমরা এরকম কোনো অভিযোগ পাইনি। তারা যদি মৌখিক বা লিখিতভাবে আমাদেরকে বিষয়গুলো অবহিত করে তাহলে আমরা এ নিয়ে বসে শান্তিপূর্ণ সমাধান বের করতে পারবো। তারা ছোট ব্যবসায়ী, অল্প টাকায় কাজ করে, তাদের সাথে এরকম করাটা ঠিক না।