ডেস্ক: বাংলাদেশ দলে একজন লেগস্পিনার থিতু করার জন্য কম চেষ্টা করেননি চন্ডিকা হাথুরুসিংহে। নেট বোলার থেকে টেস্ট দলে জায়গা করে দিয়েছিলেন যোবায়ের হোসেন লিখনকে। ঝুঁকি নিয়েছিলেন তানভীর হায়দারকে নিয়েও। এ দু’জনের কেউই প্রত্যাশা পূরণ করতে পারেননি কোচের।
একজন ভালো মানের লেগস্পিনার না পাওয়ার অপূর্ণতা নিয়ে বিসিবির চাকরি ছেড়ে একদিন চলেও গিয়েছিলেন। ছয় বছর পর আবার যখন জাতীয় দলের কোচ হয়ে ফিরছেন, তখনও লেগস্পিনারের ভাবনায় হাথুরুসিংহে। জাতীয় দল নির্বাচকদের কাছে একজন লেগস্পিনার চেয়েছেন। সিডনি থেকে নির্বাচকদের সঙ্গে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে হোম সিরিজের দল নিয়ে টুকটাক কথাবার্তাও বলছেন দ্বিতীয় মেয়াদে নিয়োগ পাওয়া প্রধান কোচ।
১ ফেব্রুয়ারি থেকে জাতীয় দলের প্রধান কোচ হিসেবে নিয়োগ পাওয়ার পরই হাথুরুসিংহে হয়তো হোমওয়ার্ক শুরু করে দিয়েছিলেন। ক্রিকেটারদের সঙ্গে যোগাযোগের শুরুও সেই থেকে। প্রধান নির্বাচক মিনহাজুল আবেদীন নান্নু, হাবিবুল বাশার, আব্দুর রাজ্জাকের সঙ্গে পালা করে কথা বলেছেন। নান্নু জানান, হোম সিরিজ নিয়ে বিস্তারিত জানাতে কোচের সঙ্গে দেড় ঘণ্টা কথা হয়েছে তাঁর।
বিসিবি পরিচালক খালেদ মাহমুদ সুজনের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ ছিল হাথুরুসিংহের। জাতীয় দলের সঙ্গে দেশি কোচদের সম্পৃক্ত করার বিষয়ে কোচের সঙ্গে কথা বলেছেন সুজন। ক্রিকেটারদের সঙ্গে পালা করে কথা বলছেন কোচ। ওয়ানডে অধিনায়ক তামিম ইকবাল, টি২০ ও টেস্ট অধিনায়ক সাকিব আল হাসানকে নিজেই ফোন করেছিলেন তিনি। সৌজন্য বিনিময়ের পাশাপাশি ওয়ানডে এবং টি২০ সিরিজ নিয়েও টুকটাক কথা হয়েছে দুই অধিনায়কের সঙ্গে।
তাসকিন আহমেদ, লিটন কুমার দাস, মুস্তাফিজুর রহমান, মোসাদ্দেক হোসেন সৈকতরা ফোন পাচ্ছেন কোচের কাছ থেকে। ছয় বছর আগে বাংলাদেশের চাকরি ছেড়ে গেলেও জাতীয় দলের বেশিরভাগ ক্রিকেটারই হাথুরুসিংহের পরিচিত। যে কারণে ক্রিকেটারদের জানা-শোনার বিষয় নেই। আগেরবারের মতো পরীক্ষা-নিরীক্ষাও করতে হচ্ছে না তাঁকে। ইংলিশদের বিপক্ষে হোম সিরিজে পুরোদস্তুর পরিকল্পনা করতে পারবেন তিনি।
সাকিব-তামিমদের কোচের ঢাকায় পৌঁছানোর কথা ২০ ফেব্রুয়ারি। ইংলিশদের বিপক্ষে সিরিজ শুরু হবে ১ মার্চ থেকে। তাই আগে থেকেই হোমওয়ার্ক করে নিচ্ছেন হাথুরুসিংহে। সে হোমওয়ার্কেরই অংশ স্কোয়াডে লেগস্পিনার যোগ করা।
একজন নির্বাচক বলেন, ‘কোচ লেগস্পিনার চাচ্ছিলেন। আমাদের হাতে যে লেগস্পিনার রয়েছে তাদের নাম দেওয়া হয়েছে। যেটুকু তথ্য দেওয়ার সেটাও করা হয়েছে।’ জাতীয় পুলে লেগস্পিনার রয়েছেন দু’জন- আমিনুল ইসলাম বিপ্লব আর রিশাদ হোসেন। বিপ্লব আন্তর্জাতিক টি২০তে ভালো খেললেও অনিয়মিত হয়ে পড়েছেন অনেক দিন হলো। ঘরোয়া ক্রিকেটেও এখন আর নিয়মিত নন তিনি। এইচপিতে রেখে নির্বাচকরা প্রশিক্ষণের ভেতরে রেখেছেন তাঁকে।
বিপ্লবের চেয়ে রিশাদের সম্ভাবনা ভালো। প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে অলরাউন্ড পারফরম্যান্স করেছেন। টি২০ বিশ্বকাপের আগে জাতীয় দলের সঙ্গী করে নিউজিল্যান্ড পর্যন্ত ছিলেন ২০ বছর বয়সী এ লেগি। এইচপির স্কোয়াডেও রাখা হয়েছে তাঁকে। নেটে ভালো লেগে গেলে রিশাদকেও জাতীয় দলে অভিষেক করিয়ে দিতে পারেন হাথুরুসিংহে। যেমন বাজি খেলেছিলেন, আনকোড়া যোবায়ের হোসেন লিখনকে নিয়ে। ২০১৪ সালের অক্টোবরে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে টেস্ট অভিষেক করিয়েছিলন তাঁকে। অভিষেক ইনিংসে দুটি উইকেটও শিকার করেন যোবায়ের। জিম্বাবুরের বিপক্ষে ইনিংসে পাঁচ উইকেটও আছে তাঁর। বছর ঘোরার আগেই লিখনে মোহ ভাঙে কোচের। এবার হয়তো সে ভুল করবেন না হাথুরুসিংহে।