ডেস্ক,৩ এপ্রিল ২০২২ঃ
মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের (মাউশি) সাবেক মহাপরিচালক মো. গোলাম ফারুক অবসরের শেষ দুই মাস মাধ্যমিকে কোনো বদলি অনুমোদন করেননি। এরপর মাউশিতে মহাপরিচালক পদে যোগ দেন প্রফেসর নেহাল আহমেদ।
গত ৮ মার্চ সিনিয়র ও সহকারী শিক্ষক সমন্বয়ের আদলে একযোগে বদলি করা হয় ৪৭৮ শিক্ষককে। কিন্তু অদৃশ্য কারণে এক সপ্তাহের ব্যবধানে সেই বদলি আদেশ বাতিল করা হয়। এরপর থেকে এখনো কোনো সিদ্ধান্ত নেয়নি শিক্ষকদের নিয়ন্ত্রণকারী এই এই সরকারি প্রতিষ্ঠান। ফলে সরকারি মাধ্যমিকে তৈরি হয়েছে অচলাবস্থা। বদলি বিড়ম্বনায় দিন পার করছেন শিক্ষকরা।
সরকারি স্কুলের শিক্ষকরা বলছেন সমন্বয়হীনতার কারণে অনেক শিক্ষকের বেতন বন্ধ। দীর্ঘ সময় আবেদন করেও বদলি হতে পারেননি নারী শিক্ষকরা। এই অচলাবস্থা নিরসনে কবে মন্ত্রণালয় বা অধিদপ্তর উদ্যোগ নেবে তা নিয়ে আমরা সন্দিহান। এর সমাধানে কার্যকর কোনো উদ্যোগ চোঁখে পড়ছে না বলেও জানান তারা।
মাউশি সূত্র জানায়, সারাদেশে সরকারি মাধ্যমিকের সংখ্যা ৩৪০টি। এছাড়াও রয়েছে আত্তিকৃত ৩০০ বিদ্যালয়। এসব বিদ্যালয়ে শিক্ষক সংখ্যা প্রায় ১২ হাজার। যার মধ্যে ৫ হাজারের বেশি সিনিয়র শিক্ষক রয়েছে। এছাড়াও নতুন যোগদান করেছেন দুই হাজার শিক্ষক। সারাদেশের স্কুলগুলোতে কোনো কোনো বিষয়ে প্রয়োজনের অধিক শিক্ষক রয়েছেন। আবার কোথাও শিক্ষকই নেই। এই সংকট সমাধান ও শিক্ষকদের সমন্বয়ের উদ্দেশ্যে শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে নির্দেশনা দেয়া হয়েছিল। কিন্তু নানা সমালোচনায় তা ভেস্তে গেছে।
রাজধানীর সরকারি মাধ্যমিকে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, মতিঝিল বয়েজ, সাইন্সল্যাবরেটরি স্কুলগুলোর মতো প্রথম সারির স্কুলগুলোতে এমনও শিক্ষক আছেন যারা ২০ বছরের বেশি সময় একই প্রতিষ্ঠানে রয়েছেন। তবে সমস্যা হয়েছে নতুনদের পোস্টিংয়ের শিক্ষকদের।
শিক্ষকরা জানান, বিসিএস চিকিৎসকদের পোস্টিং দেয়া হয়ে থাকে উপজেলার গ্রাম অঞ্চলে। অন্যদিক এবার নতুন শিক্ষকদের পোস্টিং দেয়া হয়েছে শহর অঞ্চলে। যা শুধু নজিরবিহীন নয়, চাকরি বিধিমালার সঙ্গেও সাংঘর্ষিক বটে। নাম প্রকাশ না করার শর্তে একাধিক শিক্ষক বলেন, ১৯৯৫ সালের বিধি ভঙ্গ করেই এই পোস্টিং দেয়া হয়েছে। এই গোড়ায় গলদ থাকার কারণে মাধ্যমিকে এই অচলাবস্থা সৃষ্টি হয়েছে। সামনে আরো হযবরল অবস্থা তৈরি হবে। প্রশাসন ক্যাডারের মত তিন বছর বদলি করা হলে সমস্যার সমাধান হত, কিন্তু নানা অদৃশ্য কারণে এসব বদলি হয় না। যার পেছনে মাউশি কর্মকর্তারাই জড়িত।
তবে নাম প্রকাশ না করার শর্তে কর্মকর্তারা বলছেন, বদলির বিষয়ে অনেক উঁচু মহল থেকে তদবির আসে। অনেক সময় সেটি বাস্তবায়ন করার কারণে যোগ্য ব্যক্তিরা বাদ পড়ে যায়। এ বিষয়ে নতুন করে ভাবনার সময় এসেছে। শিক্ষার্থী ভর্তির মতো যদি শিক্ষক বদলি অনলাইনে করে দেয়া যেত তবে শিক্ষকরা কাঙ্ক্ষিত সেবা পেতেন, সমস্যারও সমাধান হত।
এই মুহূর্তে এই বিষয়ে মাউশির পরিকল্পনার বিষয়ে জানতে চাইলে বিদ্যালয় শাখার পরিচালক বেলাল হোসাইনকে একাধিকবার মুঠোফোনে কল করা হলেও তিনি রিসিভ করেননি। পরে মাউশি ডিজি নেহাল আহমেদের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তা সম্ভব হয়নি।
মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষ অধিদপ্তরের একাধিক কর্মকর্তা রোববার বলেন, আগামী দুএকদিনের মধ্যে মাউশি মহাপরিচালক ভারতে চিকিৎসার জন্য যাবেন। ফিরবেন ৮ এপ্রিল। এর আগে কোনো সিদ্ধান্তের পরিবর্তন হবে না বলে তারা জানান।