নিজস্ব প্রতিবেদক,৮ নভেম্বর:
গ্রেড পরিবর্তনের দাবিতে দীর্ঘদিন ধরে আন্দোলন করছেন প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা। দাবি না মানলে আসন্ন প্রাথমিক সমাপনী পরীক্ষা বর্জনেরও ঘোষণা দিয়েছেন তারা।
তবে ইতোমধ্যে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষকদের ১১তম সহকারী শিক্ষকদের ১৩তম গ্রেডে বেতনের অনুমোদন দিয়েছে অর্থ মন্ত্রণালয়। আর সহকারী প্রধান শিক্ষকদের পদ সৃজন করা হলে ১৩ তম গ্রেডে বেতন দেয়া হবে। বৃহস্পতিবার (৭ নভেম্বর) প্রাথমিকের শিক্ষক নেতাদেরকে এ তথ্য জানিয়েছেন গণশিক্ষা সচিব মো. আকরাম আল হোসেন। বৈঠক শেষেএমনটাই জানিয়েছেন শিক্ষক নেতারা।
বৃহস্পতিবার বিকেল ৪টায় সচিবের কার্যালয়ে এ বৈঠক শুরু হয়। বৈঠকে প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনী পরীক্ষা ও শিক্ষকদের দাবির বিষয়ে কথা হয়।
সভাশেষে শিক্ষক নেতারা জানান, প্রধান শিক্ষকদের ১১তম গ্রেড, সহকারী প্রধান শিক্ষকদের ১২তম ও সহকারী শিক্ষকদের ১৩তম গ্রেডে বেতন দেয়ার কথা গণশিক্ষা সচিব বলেছেন। সচিব জানিয়েছেন অর্থ মন্ত্রণালয় প্রধান শিক্ষকদের ১১তম গ্রেড ও সহকারী শিক্ষকদের ১৩তম গ্রেডে বেতনের প্রস্তাব ইতোমধ্যে অনুমোদন দিয়েছে। তবে, সহকারী প্রধান শিক্ষকদের পদসৃজন হলে তাদের ১২ তম গ্রেডে বেতন দেয়া হবে। পদ সৃজনের কাজ প্রক্রিয়াধীন।
তবে, প্রধান শিক্ষক ও সহকারী প্রধান শিক্ষক পদে সহকারী শিক্ষকদের শতভাগ পদোন্নতি নিশ্চিত করা হয়েছে বলেও সচিব শিক্ষক নেতাদের জানিয়েছেন। প্রধান শিক্ষক পদে আর সরাসরি নিয়োগ দেয়া হবে না।
প্রাথমিক শিক্ষক ঐক্য পরিষদের প্রধান উপদেষ্টা আনোয়ারুল ইসলাম তোতা জানান, আমরা পূর্ব ঘোষিত কর্মসূচি অর্থাৎ পরীক্ষা বর্জনের সিদ্ধান্তে অটল আছি। তবে, আগামীকাল জেলা ও উপজেলা পর্যায়ের নেতাদের সাথে বসবো। বৈঠক শেষে পরবর্তী সিদ্ধান্ত জানানো হবে। ১৭ নভেম্বর থেকে প্রাথমিক সমাপনী পরীক্ষা শুরু হবে। ১৩ নভেম্বরের মধ্যে দাবি না মানলে পরীক্ষা বর্জন করবেন তারা।
বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ প্রাথমিক শিক্ষক ঐক্য পরিষদের আহ্বায়ক মোহাম্মদ শামছুদ্দীন মাসুদ, শিক্ষক নেতা আনিসুর রহমান, মো. বদরুল আলম, আনোয়ারুল ইসলাম তোতা, আবদুল্লাহ সরকার, আবুল কাশেম প্রমুখ।
জানা গেছে, গণশিক্ষা সচিব শিক্ষকদের প্রতি অনুরোধ করেছেন সমাপনী পরীক্ষা বর্জনের কর্মসূচি থেকে সরে আসতে। এ সময় প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে প্রাথমিক শিক্ষক নেতাদের সাক্ষাৎ করিয়ে দিতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন গণশিক্ষা সচিব।
প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাৎ না পাওয়া পর্যন্ত শিক্ষকদের আন্দোলন অব্যাহত থাকবে বলে সচিবকে জানান শিক্ষক প্রতিনিধিরা। এছাড়া প্রাথমিকের সমাপনী পরীক্ষা বর্জনের ঘোষণায়ও অটল বলে জানিয়েছেন তারা।
শিক্ষক ঐক্য পরিষদের প্রধান আহ্বায়ক শামসুদ্দিন মাসুদ বলেন, আমরা সচিবের কথায় সন্তুষ্ট। তবে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাতের বিষয়ে সুনির্দিষ্ট দিন সময় না পেলে আন্দোলন থেকে সরবো না। শুক্রবার (৮ নভেম্বর) সাধারণ সভা ডাকা হয়েছে। বৈঠকে পরবর্তী করণীয় ঠিক করা হবে।
তারা বলেন, প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করে সব সমস্যা ও বৈষম্য তুলে ধরা হবে। তিনি আমাদের যে প্রস্তাব দেবেন সেটাই মেনে নেয়া হবে।
তিনি আরও বলেন, সমাপনী পরীক্ষার আগে যদি প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাতের সময় জানানো হয় তবে পরীক্ষা বর্জনের আন্দোলন স্থগিত করা হবে। তা না হলে পরীক্ষা বর্জন কর্মসূচি অব্যাহত থাকবে।