প্রাথমিকে আগের নিয়মে প্রধান শিক্ষক নিয়োগের নির্দেশ

ঢাকা: সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের শূন্য পদ পুরণ আগের নিয়মে করার নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আগে নিয়ম ছিল সহকারী শিক্ষকরা প্রধান শিক্ষক হিসেবে পদোন্নতি পাবেন। কিন্তু নতুন নিয়ম করা হয়েছিল- পিএসসির মাধ্যমে প্রধান শিক্ষক নিয়োগ দেয়া হবে। তবে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশের ফলে আগের নিয়ম কার্যকর হল।
প্রধানমন্ত্রী ও ট্রাস্কফোর্সের উপদেষ্টা শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে সভায় উপস্থিত ছিলেন তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু, শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ, প্রাথমিক ও গণশিক্ষামন্ত্রী মোস্তাফিজুর রহমান ফিজার, বিজ্ঞানবিষয়ক প্রতিমন্ত্রী ইয়াফেস ওসমান, পার্বত্য চট্টগ্রামবিষয়ক প্রতিমন্ত্রী বীর বাহদুর উ শৈ সিংস, প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব আবুল কালাম আজাদসহ সংশ্লিষ্ট ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।
প্রাথমিক ও গনশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের যুগ্মসচিব গিয়াস উদ্দিন বলেন, আজকের সভায় প্রধানমন্ত্রী ভাল ভাল দিকনির্দেশনা আমাদের দিয়েছেন। তিনি বলেন, থমকে থাকা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষকের শূন্যপদ পুরণে দ্রুত নির্দেশ দিয়েছেন। সেটি আগের নিয়মে দিতে বলা হযেছে।
তিনি বলেন, এ নির্দেশনার মাধ্যমে প্রধানশিক্ষক নিয়োগের কার্যক্রমের দ্বার খুলে যাচ্ছে। এতে সহকারী শিক্ষকরা প্রধান শিক্ষক পদে আসতে আর বাধা থাকছে না। তবে এটি এ বছর পর্যন্ত বাস্তবায়ন হবে। আগামী বছর থেকে পিএসসির মাধ্যমে প্রধান শিক্ষক পদে নিয়োগ দেয়া হবে।
মন্ত্রণালয়ের যুগ্মসচিব গিয়াস উদ্দিন জানান, বর্তমানে প্রধান শিক্ষক ছাড়াই সারাদেশে যেসব স্কুল পরিচালিত হচ্ছে, তার সঠিক সংখ্যা কত, তা জানা না থাকলেও এই সংখ্যা ১০ হাজার ছাড়িয়ে যেতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
তিনি আরো বলেন, গত বছর প্রধান শিক্ষক পদটি দ্বিতীয় শ্রেণির কর্মকর্তা পদে উন্নত করা হয়েছে। এ কারণে কিছু দিন প্রধান শিক্ষক নিয়োগ বন্ধ ছিল। আগামীতে পিএসসির মাধ্যমে নিযোগ ৬৪ হাজার শিক্ষক নিয়োগ করা হবে।
জানা গেছে, শুধু ঢাকা বিভাগেই মোট ৯ হাজার ৯৭৬টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মধ্যে বর্তমানে প্রায় ১ হাজার ১৬৯টি স্কুল প্রধান শিক্ষক ছাড়াই পরিচালিত হচ্ছে।
সারাদেশে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের পদ শূন্য থাকার সংখ্যা বেড়ে যাওয়ার কারণ সম্পর্কে জানতে চাইলে যুগ্মসচিব গিয়াস উদ্দিন বলেন, প্রতি বছর পর্যাপ্ত সংখ্যক প্রধান শিক্ষক অবসর নেন। সেক্ষেত্রে পদোন্নতির মাধ্যমে সহকারী শিক্ষকদের মধ্য থেকে নতুন প্রধান শিক্ষক নিয়োগ দেয়ার কথা থাকলেও তাতে ব্যর্থ হচ্ছে ডিপিই। আর পদোন্নতির নীতির সঙ্গে দ্বিমত পোষণ করে বেশ কিছু শিক্ষক এ সংক্রান্ত মামলা দায়ের করায় ইতোমধ্যে কর্মরত সহকারী শিক্ষকদের পদোন্নতির মাধ্যমে অবসর নেয়া প্রধান শিক্ষকদের শূন্য পদগুলোতে নিয়োগ দিতে পারছে না ডিপিই।
নিয়োগ নীতি অনুযায়ী, প্রধান শিক্ষকের শূন্য পদের ৩৫ শতাংশ পদে সরাসরি নতুন প্রধান শিক্ষক নিয়োগ করা হবে এবং সহকারী শিক্ষকদের পদোন্নতি দেয়ার মাধ্যমে শূন্য থাকা বাকি পদগুলো পূরণ করা হবে। নীতি অনুযায়ী, ইতোমধ্যে অনেকগুলো শূন্য পদে সরাসরি নতুন প্রধান শিক্ষক নিয়োগ করেছে ডিপিই। কিন্তু সহকারী শিক্ষকদের পদোন্নতি দেয়ার মাধ্যমে যে শূন্য পদগুলোতে প্রধান শিক্ষক নিয়োগ করার কথা রয়েছে, মামলার কারণে সেই পদগুলোর সব ক’টিই বর্তমানে খালি। ফলে বিপুল সংখ্যক সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের কার্যক্রম বর্তমানে প্রধান শিক্ষক ছাড়াই পরিচালিত হচ্ছে।
Facebooktwitterredditpinterestlinkedinby feather
Image Not Found

Leave a Reply

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।