রাজশাহী মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় (রামেবি) অধিভুক্ত নার্সিং কলেজগুলোর বিভিন্ন বিষয়ের পরীক্ষা স্থগিত হয়েছে। প্রশ্ন ফাঁসের অভিযোগ ওঠায় শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের নির্দেশে পরীক্ষাগুলো স্থগিত করা হয়। কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, প্রশ্ন তৈরির সঙ্গে জড়িতদের তাৎক্ষণিক বহিষ্কারা করা হয়েছে। একইসঙ্গে ঘটনা তদন্তে একটি কমিটিও গঠন করা হয়েছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, কলেজগুলোর বিএসসি কোর্সের (পোস্ট বেসিক) প্রথম ও দ্বিতীয় বর্ষের ফাইনাল পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁস হয়ে গেছে। এ জন্য পরীক্ষা স্থগিত করে দেয়া হয়েছে।
রাজশাহী, রংপুর ও খুলনা বিভাগের ২১টি কলেজের পরীক্ষার্থীরা গতকাল রোববার (৪ ফেব্রুয়ারি) থেকে ১৮টি কেন্দ্রে এই পরীক্ষা দিতে বসতেন। তাদের সব বিষয়ের পরীক্ষা স্থগিত করা হয়েছে। গত বৃহস্পতিবার (১ ফেব্রুয়ারি) পরীক্ষা স্থগিত করা হয়।
রামেবিতে প্রশ্নপত্র তৈরির সঙ্গে যুক্ত বগুড়া সরকারি নার্সিং কলেজের শিক্ষক আবদুল বারী সরকার, মোস্তানুর সুলতানা ও গুলনাহার খাতুন প্রশ্নপত্র ফাঁস করেছেন বলে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে অভিযোগ পড়েছে। প্রাথমিক সত্যতা পাওয়ায় বৃহস্পতিবার তাদের সাময়িক বরখাস্ত করেছে মন্ত্রণালয়। একইসঙ্গে ঘটনা তদন্তে একটি কমিটি গঠন করেছে।
এর আগে, গত ১৭ জানুয়ারি প্রশ্নপত্র তৈরি হয়। এরপর ৩০ ও ৩১ জানুয়ারি রামেবির নিজস্ব পরিবহনে এই অঞ্চলের সরকারি মেডিকেল কলেজগুলোতে প্রশ্নপত্র পাঠানো হয়।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, প্রশ্নপত্রের সার্বিক দায়দায়িত্ব রামেবির পরীক্ষা নিয়ন্ত্রকের দপ্তরের। কিন্তু ওই দপ্তর থেকেই প্রশ্নপত্র ফাঁস হয়ে যায়। এর আগেও কয়েকবার একই ধরনের ঘটনা ঘটেছে। কিন্তু কখনো কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। তবে এবার প্রশ্ন ফাঁস হওয়ায় শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে অভিযোগ জমা পড়ে। এরপর মন্ত্রণালয় একটি তদন্ত কমিটি করে। পাশাপাশি পরীক্ষা স্থগিতের নির্দেশ দেয় রামেবি কর্তৃপক্ষকে।
বগুড়া সরকারি নার্সিং কলেজের অধ্যক্ষ আরশে আরা বেগম বলেন, আমাদের আরও কয়েকজন শিক্ষক এই প্রশ্নপত্র করার সময় ছিলেন। তাদের মধ্যে তিন জনের ব্যাপারে মন্ত্রণালয় অভিযোগ পেয়েছে যে তারা প্রশ্ন ফাঁস করেছেন। সেই জন্য গত বৃহস্পতিবার তাদের সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। এ ঘটনায় গঠন করা তদন্ত কমিটির চিঠিতে বিষয়টি আমি জানতে পেরেছি।
রামেবির উপাচার্য অধ্যাপক এ. জেড. এম মোস্তাক হোসেন বলেন, প্রশ্ন কীভাবে ফাঁস হয়েছে তা জানতে মন্ত্রণালয় থেকে তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটিতে রামেবির প্রতিনিধিও রাখা হয়েছে। বিস্তারিত পরে বলা যাবে। আপাতত প্রশ্নপত্র তৈরির সঙ্গে সম্পৃক্ত তিন শিক্ষককে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। তাদের ব্যাপারে তদন্ত ইতোমধ্যে শুরু হয়েছে।