নিজস্ব প্রতিবেদক, ২৩ জুলাই, ২০২২:
প্রশাসনিক কর্মকর্তা পদবি-দশম গ্রেডে বেতন দেয়ার দাবি জানিয়েছেন সব সরকারি দপ্তরের কর্মচারীরা। এ দাবিতে মানববন্ধন করেছেন তারা।শনিবার সকালে রাজধানীর জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে এ মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করা হয়। ‘বাংলাদেশ প্রশাসনিক কর্মকর্তা বাস্তবায়ন ঐক্য পরিষদের’ ব্যানারে মানববন্ধন করে প্রশাসনিক কর্মকর্তার পদবী ও দশম গ্রেডে বেতন দেয়ার দাবি জানান বিভিন্ন সরকারি অফিসের প্রধান সহকারী, উচ্চমান সহকারী, সহকারী ও সমপদের ও ওইসব পদের ফিডার পদের কর্মচারীরা।
মানবন্ধনে সংগঠনের সভাপতি কে এম বদিউজ্জামান ও মহাসচিব আবু নাসির খানসহ সরকারি বিভিন্ন দপ্তর, অধিদপ্তর, পরিদপ্তর, বিভাগ, জেলা ও উপজেলা পর্যায়ের প্রধান সহকারী, উচ্চমান সহকারী, সহকারী সমপদ ও এসব পদের ফিডার পদের কর্মচারীরা।
আরো পড়ুনঃ বুয়েট-ঢাবি-মেডিকেলে চান্স পেলেন একই কলেজের ২৪০ শিক্ষার্থী
এসময় মহাসচিব আবু নাসির খান বলেন, বাংলাদেশ সচিবালয়ের ভেতরে ও বাইরে সরকারি বিভিন্ন দপ্তরের প্রধান সহকারী, উচ্চমান সহকারী, সহকারী বিভিন্ন পদের পদবি ও বেতন স্কেল এক ও অভিন্ন হওয়া সত্ত্বেও ১৯৯৫ খ্রিষ্টাব্দে তৎকালীন সরকার প্রজ্ঞাপন জারি করে শুধুমাত্র সচিবালয়ের এসব পদগুলো আপগ্রেড করে প্রশাসনিক কর্মকর্তা পদবি পরিবর্তনসহ ১০ম গ্রেডে উন্নীত করে। ফলে সরকারি দপ্তরগুলোর মধ্যে পদবি ও বেতন বৈষম্যের সৃষ্টি হয়। এরই ধারাবাহিকতায় পাবলিক সার্ভিস কমিশন, বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশন, বাংলাদেশ সুপ্রীম কোর্ট, গণভবন, বঙ্গভবনে এসব পদগুলোও আপগ্রেড করা হয়েছে, কিন্তু অন্যান্য দপ্তরের বর্ণিত পদগুলো অদ্যাবধি আগের মত রয়ে গেছে। অনতিবিলম্বে তারা এই পদবি বৈষম্যের অবসান চান।
তিনি আরও বলেন, ইতোমধ্যে সরকার উচ্চমান সহকারী, প্রধান সহকারীর সমস্কেল ও নিম্ন স্কেলের কর্মচারীদের মধ্যে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক, ব্লক সুপারভাইজার, ডিপ্লোমা প্রকৌশলী, পুলিশের এসআই, নার্স, অডিটর ও খাদ্য পরিদর্শক পদগুলো দ্বিতীয় শ্রেণির পদমর্যাদায় উন্নীত করা হলেও অন্যান্য দপ্তর, অধিদপ্তর, পরিদপ্তর, স্বায়ত্তশাসিত সংস্থা ও কর্পোরেশনের সমপদগুলো উন্নীত না করায় দীর্ঘ ২৭ বছর যাবত তারা বঞ্চিত রয়েছে। অপেক্ষাকৃত কম শিক্ষাগত যোগ্যতাসম্পন্ন ব্যক্তিদের উচ্চপদে আসীন হওয়ায় পরবর্তী প্রজন্ম উচ্চশিক্ষা গ্রহণে আগ্রহ হারিয়ে ফেলছে।
তিনি অভিযোগ করে বলেন, প্রধানমন্ত্রীর দপ্তরের নির্দেশনা, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় সংক্রান্ত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির ৩২ ও ৩৩তম বৈঠকের সিদ্ধান্ত, ৮ম জাতীয় পে-কমিশনের সুপারিশ এবং ১০ম জাতীয় সংসদের মাননীয় বিরোধী দলীয় নেতারা জাতীয় সংসদে বিষয়টি বাস্তবায়নের জন্য অনুরোধ জানালেও কেন বৈষম্য দূর হচ্ছে না তা আমাদের বোধগম্য নয়।
তিনি দপ্তর ও অধিদপ্তরের পদবি ও বেতনবৈষম্য নিরসনের জন্য দ্রুত প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করেন।
সরকারি কর্মচারীদের বিভিন্ন সংগঠনের নেতরা বাংলাদেশ প্রশাসনিক কর্মকর্তা বাস্তবায়ন ঐক্য পরিষদের দাবির সাথে একাত্মতা ও সংহতি প্রকাশ করে বক্তব্য রাখেন এবং অনতিবিলম্বে তাদের ন্যায্য দাবি বাস্তবায়নের জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে অনুরোধ করেন।
মানববন্ধনে আরও বক্তব্য রাখেন আবদুল হালিম, মো. বেল্লাল হোসেন, লুৎফর রহমান, ফারুক মালুম, রেশমা পারভীন, জাকির হোসেন, বাশারুল হক, নোমান আল আজাদ, শাহাদত হোসেন, ইসলাম খান, জাহিদুল ইসলাম, আশিকুল ইসলাম, মহসিন মিয়া, মুকলেছুর রহমান, হুমায়ুন কবীর, মামুন, কাবুল হোসেন মোল্লা, মাহতাব উদ্দিন, আনোয়ার জিলানী প্রমুখ ছাড়াও ডাক অধিদপ্তর, মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তর, প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর, খাদ্য অধিদপ্তর, যুব উন্নয়ন অধিদপ্তর, ক্রীড়া পরিদপ্তর, শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তর, কারিগরি শিক্ষা অধিদপ্তর, বাংলাদেশ রোড ট্রান্সপোর্ট অথরিটি, রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ, গণপূর্ত অধিদপ্তর, বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ, এলজিইডি, জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর, আয়কর বিভাগ, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর, বন অধিদপ্তর, মুদ্রণ ও প্রকাশনা অধিদপ্তর, কৃষি গবেষণা ইন্সটিটিউট, ভূমি সংস্কার বোর্ড, টেলিযোগাযোগ অধিদপ্তর, জরিপ অধিদপ্তর, নার্সিং ও মিডওয়াফারি অধিদপ্তর, পাট গবেষণা ইন্সটিটিউট, পানি উন্নয়ন বোর্ড নেতারা।