চারদিন ধরে আধুনিক সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ওই শিক্ষকের শারীরিক অবস্থার উন্নতি হলেও মানসিক অস্থিরতায় ভেঙ্গে পড়েছেন তিনি। তবে দলের ভাবমুর্তি ক্ষুন্ন করার প্রচেষ্টাকারীদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপের কথা জানিয়েছেন জেলা আওয়ামী লীগ।
নীলফামারী আধুনিক সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন নীলফামারী সদরের পঞ্চপুকুর বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের ধর্মীয় শিক্ষক সুমন্ত চন্দ্র রায় (৪৬) জানান, ২১মে রাত ১১টার দিকে পঞ্চপুকুর বাজার থেকে উত্তরাশশীস্থ নিজ বাড়িতে মোটরসাইকেল যোগে ফেরার পথে মিলবাজার নামক স্থানে ইউনিয়ন আ’লীগ সহ-সভাপতি ও আব্দুল হক প্রধান ও সাধারণ সম্পাদক আলী হোসেনের নেতৃত্বে অতর্কিত হামলা চালানো হয়। তারা লাঠিসোটা আর ছোড়া দিয়ে আঘাত করায় শরীরের বিভিন্ন স্থানে জখম হয়। স্থানীয়রা উদ্ধার করে রাতেই আমাকে হাসপাতালে ভর্তি করান।
প্রত্যক্ষদর্শী প্রতিবেশী মধু সুধন রায় জানান, মারধরের শিকার শিক্ষক সুমন্তের শরীরের বিভিন্ন স্থানে জখম হওয়ার পাশাপাশি অচেতন অবস্থায় আমরা তাকে রাতেই হাসপাতালে ভর্তি করি। আজও হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন তিনি।
তিনি অভিযোগ করেন, আমাদের নানা ভাবে হুমকি দিচ্ছেন আ’লীগ নেতারা। বাজারে গেলে নাকি শেষ করে দেয়া হবে এমন হুমকিও দেয়া হচ্ছে।
পঞ্চপুকুর ইউনিয়নের সদ্য নির্বাচিত চেয়ারম্যান হাবিবুর রহমান বলেন, শিক্ষক সুমন্ত আমার পক্ষে নৌকা প্রতীকের হয়ে কাজ করেছিলো। আর ইউনিয়ন আ’লীগের সহ-সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক বিপক্ষে কাজ করেছিলো। আমার পক্ষে কাজ করায় হয়তো তারা তাকে আক্রমণ করে থাকতে পারে।
ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানিয়ে পঞ্চপুকুর বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক বাবুল হোসেন সাংবাদিকদের জানান, শিক্ষকরা যেভাবে নির্যাতনের শিকার হতে শুরু করেছে, এভাবে চলতে থাকলে সমাজে আমরা মুখ দেখাতে পারবো না। আমরা কোথায় যাবো? যদি জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা না হয় তাহলে সংগঠিত হয়ে আমরা আন্দোলনে নামতে বাধ্য হবো।
নীলফামারী আধুনিক সদর হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসক হাসানুর রহমান জানান, ভর্তি হওয়ার সময় শিক্ষক সুমন্তের শরীরের বিভিন্ন স্থানে জখম ছিলো। আমরা চিকিৎসা দিয়েছি। অবস্থার উন্নতি হয়েছে তবে মানসিক ভাবে অস্থিরতা তৈরী হওয়ায় ভেঙ্গে পড়েছেন তিনি। রিলিজ দেয়ার সময় প্রয়োজনীয় ঔষধ দেয়া হবে তাকে।
এদিকে দলের ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন করার অপচেষ্টায় লিপ্তদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের আশ্বাস দিয়ে জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও জেলা পরিষদ প্রশাসক এ্যাড. মমতাজুল হক জানান, ঘটনার সত্যতা যাচাই করে জড়িতদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেয়া হবে। তবে অভিযুক্ত দুই আ’লীগ নেতাদের সঙ্গে কয়েক দফায় যোগাযোগ করেও তাদের পাওয়া না যাওয়ায় কোন মন্তব্য জানা যায়নি তাদের।