নবম শ্রেণির ভর্তির তালিকা বাতিলের জন্য দায়ী টেলিটক

ডেস্ক : পদ্ধতিগত ভুলের কারণে সরকারি স্কুলে নবম শ্রেণির ভর্তি তালিকা বাতিল করা হয়েছে। ভর্তির তালিকা বাতিলের জন্য দায়ী করা হচ্ছে টেলিটককে ।

নিয়ম অনুযায়ী আসনের তুলনায় আবেদনকারী বেশি হলে জেএসসি বা ডিসি’র ফলাফলে মেধার ভিত্তিতে তালিকা চূড়ান্ত করার কথা। কিন্তু যে তালিকা প্রকাশ হয়েছে তাতে স্বয়ংক্রিয় পদ্ধতিতে আগে জমা দেওয়া শিক্ষার্থীরাই স্থান পেয়েছে।

চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসক শামসুল আরেফিন তালিকা বাতিলের বিষয়টি স্বীকার করে বলেন শিগগিরই সংশোধিত তালিকা প্রকাশ করা হবে। ভুল পদ্ধতিতে ফল প্রকাশের জন্য টেলিটক কতৃপক্ষকে দায়ি করেছেন সরকারি স্কুলগুলোর ভর্তি পরীক্ষা ও ভর্তি কার্যক্রম তদারককারী কর্মকর্তা চট্টগ্রামের অতিরিক্ত জেলাপ্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি) মো. হাবিবুর রহমান।

তিনি বলেন, টেলিটক কতৃপক্ষই স্বয়িংক্রিয় পদ্ধতিতে ভুল তালিকা দিয়েছে। জেলা প্রশাসনপ্রকাশ করেছে মাত্র। নগরীর সরকারি স্কুলগুলোর নবম শ্রেণিতে ভর্তির জন্য মনোনীতদের তালিকা প্রস্তুত হওয়ার পর বুধবার চট্টগ্রাম জেলাপ্রশাসন তা পত্রিকায় প্রকাশ করে। মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদফতর (মাউশি)নবম শ্রেণিতে ভর্তি তালিকার ক্ষেত্রে দুটি পদ্ধতি নির্ধারণ করে বিজ্ঞপ্তি জারি করে। বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, আসনের একই জিপিএ প্রাপ্ত শিক্ষার্থীর সংখ্যা সমান অথবা কম হলে সয়ংক্রিয় পদ্ধতিতে ফলাফল প্রস্তুতের কথা বলা হয়। এক্ষেত্রে জেএসসি বা জেডিসির ফলাফলের ভিত্তিতে টেলিটক কর্তৃক প্রস্তুতকৃত তালিকাই প্রকাশযোগ্য বলে
উল্লেখ করা হয় বিজ্ঞপ্তিতে।

অন্যদিকে, শূন্য আসনের তুলনায় আবেদনকারীদের মধ্যে একই জিপিএ প্রাপ্ত শিক্ষার্থীর সংখ্যা বেশি হলে শিক্ষাবোর্ডের মাধ্যমে ম্যানুয়াল পদ্ধতি অনুসরণ করে ফলাফল প্রস্তুতের কথা বলা হয়। এই পদ্ধতির ক্ষেত্রে টেলিটক কতৃক প্রস্তুতকৃত ফাইল বা তালিকাটি সংশ্লিষ্ট শিক্ষাবোর্ডে সরবরাহ করার কথা বলা হয়।

শিক্ষাবোর্ড সমান জিপিএ প্রাপ্তদের ক্ষেত্রে জেএসসি/জেডিসিতে প্রাপ্ত নম্বরের ভিত্তিতে শিক্ষার্থীদের একটি মেধাক্রম তৈরি করবে। আর শিক্ষাবোর্ডের এই মেধাক্রম ব্যবহার করেই ভর্তি কমিটিকে ফল প্রকাশের কথা বলা হয় বিজ্ঞপ্তিতে।

মেধাক্রমের পরিবর্তে আগে জমা দেওয়া অনুযায়ী তালিকা তৈরির কারণে সমান জিপিএ পেয়েও শেষের দিকে আবেদন করা কোন শিক্ষার্থী এ তালিকায় ঠাঁই পায়নি। সবকয়টিস্কুলের ক্ষেত্রেই ঘটেছে এ ঘটনা।

সূত্র জানায়, এবার কলেজিয়েট স্কুলের নবম শ্রেণির ১৪০টি শূন্য আসনের বিপরীতে আবেদন করে ১ হাজার ৫৬৮ জন ভর্তিচ্ছু। আর ৯০০০০০১ থেকে শুরু হয়ে এদের রোল নম্বর সিরিয়াল দেয়া হয় ৯০০১৫৬৮ পর্যন্ত।

জেলাপ্রশাসন কতৃক বুধবার প্রকাশিত তালিকায় দেখা যায়- এই সিরিয়ালের প্রথম ৩৩২ জনের মধ্য থেকেই মেধা তালিকায় ঠাঁই পেয়েছে শিক্ষার্থীরা। ৩৩২ পরবর্তী
রোল নম্বরধারী একজন শিক্ষার্থীও (কোটা বাদ দিয়ে) এ তালিকায় ঠাঁই পায়নি।

একই ঘটনা সরকারি মুসলিম হাই স্কুলের ক্ষেত্রেও। স্কুলটির নবম শ্রেণির ১৪০টি শূন্য আসনের বিপরীতে আবেদন পড়ে ১ হাজার ২৬০টি। কিন্তু আবেদনকারীদের
শুরুর দিককার ৬২৬ সিরিয়াল থেকেই তালিকায় ঠাঁই পেয়েছে শিক্ষার্থীরা। ৬২৬ সিরিয়াল। পরবর্তী রোল নম্বরধারী কোন শিক্ষার্থীর (কোটা বাদ দিয়ে) তালিকায় জায়গা হয়নি। মাউশি’র পরিচালক (মাধ্যমিক) প্রফেসর মো.এলিয়াছ হোসেন বলেন, ‘যেহেতু আসনের তুলনায় সমান জিপিএ প্রাপ্ত শিক্ষার্থীর সংখ্যা বেশি- সেহেতু অবশ্যই শিক্ষাবোর্ডের মাধ্যমে ম্যানুয়াল পদ্ধতি অনুসরণ করতে হবে। যদি সেটি না হয়ে থাকে তবে ফলাফল গ্রহণযোগ্যতা পাবে না।

Facebooktwitterredditpinterestlinkedinby feather
Image Not Found

Leave a Reply

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।