নতুন শিক্ষাক্রম অনুযায়ী এসএসসি পরীক্ষার মূল্যায়নে হাতে–কলমে কাজের পাশাপাশি লিখিত পরীক্ষাও থাকছে। তবে লিখিত পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ও উত্তর দেওয়ার ধরন মুখস্থনির্ভর হবে না। শিক্ষার্থীরা শিক্ষাক্রম অনুযায়ী যেসব অভিজ্ঞতা অর্জন করবে, সেগুলো মূলত সৃজনশীল উপায়ে লিখতে হবে।
পাবলিক পরীক্ষার সঙ্গে মিল রেখে বিদ্যালয়ে বিভিন্ন শ্রেণির মূল্যায়ন করা হবে। বিভিন্ন শ্রেণিতে বছরজুড়ে শিখনকালীন মূল্যায়ন থাকবে। এর পাশাপাশি বছরে দুটি সামগ্রিক মূল্যায়ন হবে।
মূল্যায়নের এমন নতুন পদ্ধতির বিষয় উল্লেখ করে জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড (এনসিটিবি) নতুন শিক্ষাক্রম অনুযায়ী মূল্যায়ন কাঠামোর খসড়া তৈরি করেছে।
এনসিটিবি সূত্রে জানা গেছে, এই খসড়ার ভিত্তিতে মূল্যায়ন কাঠামো চূড়ান্ত করার কাজ চলছে। এখন যারা নবম শ্রেণিতে পড়ছে, তারা নতুন শিক্ষাক্রম অনুযায়ী প্রথমবারের মতো পাবলিক পরীক্ষা দেবে বছর দুয়েক পরে। এর আগে চলতি বছরের শেষে পরীক্ষামূলকভাবে পাবলিক পরীক্ষার আদলে নবম শ্রেণির বার্ষিক মূল্যায়ন করা হবে।
বর্তমানে দশম শ্রেণি শেষে এসএসসি নামে পাবলিক পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। এনসিটিবির সূত্রমতে, এখনকার মতো এসএসসি নামে পরীক্ষাও থাকতে পারে, আবার ভিন্ন নামও হতে পারে। নতুন শিক্ষাক্রমে শুধু দশম শ্রেণির পাঠ্যসূচির ভিত্তিতে ১০টি বিষয়ের ওপর হবে এই মূল্যায়ন। এর মধ্যে একটি অংশের মূল্যায়ন হবে বিদ্যালয়ে শিখনকালীন। বাকি অংশের মূল্যায়ন হবে কেন্দ্রীয়ভাবে শিক্ষা বোর্ডগুলোর অধীন।
মূল্যায়নপদ্ধতির খসড়া অনুযায়ী, শিক্ষা বোর্ডের অধীন অনুষ্ঠিত প্রতিটি বিষয়ের মূল্যায়ন হবে এক কর্মদিবসের সর্বোচ্চ পাঁচ ঘণ্টায়। বিরতি দিয়ে হবে এই মূল্যায়ন। এর মধ্যে একটি অংশের মূল্যায়নে অনুসন্ধান, প্রদর্শন, মডেল তৈরি, উপস্থাপন, পরীক্ষণ, পরিকল্পনা প্রণয়ন ইত্যাদি বিষয় থাকবে।
আরো পড়ুন: নতুন শিক্ষাক্রম: যেভাবে তৈরি হবে প্রশ্নপত্র
নতুন শিক্ষাক্রম ও মূল্যায়নপদ্ধতি তৈরির সঙ্গে যুক্ত আছেন জাতীয় শিক্ষাক্রম উন্নয়ন ও পরিমার্জন কোর কমিটির সদস্য এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের (আইইআর) অধ্যাপক এম তারিক আহসান।
তিনি বলেন, নতুন পদ্ধতির মূল্যায়নে একটি অংশে লিখিত পরীক্ষা থাকলেও এখনকার মতো মুখস্থনির্ভর প্রশ্নের উত্তর দেওয়ার সুযোগ থাকবে না। একজন শিক্ষার্থী বিভিন্ন বিষয়ে কতটা পারদর্শিতা অর্জন করতে পারছে, সেটি মূলত সৃজনশীল উপায়ে লিখতে হবে।
শিক্ষা বোর্ডগুলোর সমন্বয় কমিটির প্রধান ও ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান তপন কুমার সরকার বলেন, মূল্যায়নপদ্ধতি চূড়ান্ত করতে আলাপ–আলোচনা চলছে।
জানতে চাইলে এনসিটিবির সদস্য অধ্যাপক মো. মশিউজ্জামান জানান, তাঁরা মূল্যায়ন কাঠামোর খসড়াটি সংশ্লিষ্ট কমিটির সামনে ইতিমধ্যে উপস্থাপন করেছেন। আশা করছেন, শিগগিরই সংশ্লিষ্ট পর্যায়ে এটি চূড়ান্ত হবে।
গত বছর প্রথমবারের মতো নতুন শিক্ষাক্রম শুরু হয়। বর্তমানে প্রথম থেকে তৃতীয় এবং ষষ্ঠ থেকে নবম শ্রেণিতে শিক্ষার্থীরা নতুন শিক্ষাক্রমে অধ্যয়ন করছে।