ডেস্ক,২৫ জানুয়ারী ২০২৩: পরপর তিন মেয়াদে প্রক্টর। সেই সঙ্গে একটি বিভাগের প্রধান এবং একটি অনুষদের ডিনও তিনি। গুরুত্বপূর্ণ তিনটি পদ একই ব্যক্তিকে দেয়ার নজিরবিহীন এমন ঘটনা ঘটেছে জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ে (জাককানইবি)। আর সেই ভাগ্যবান ব্যক্তিটি হলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের অধ্যাপক ড. উজ্জ্বল কুমার প্রধান।
নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করে এক ব্যক্তিকে এতগুলো পদে আসীন করা নিয়ে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের মধ্যে। তাঁরা বলছেন, বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) নির্দেশনাকে উপেক্ষা করেই পরপর তিনবার উজ্জ্বল কুমার প্রধানকে প্রক্টর হিসেবে দায়িত্বে রেখেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।
আরো পড়ুন:ববিতে প্রথম বর্ষের ক্লাস শুরু ১ ফেব্রুয়ারি
বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, ২০১৮ সালের সেপ্টেম্বরে অনুষ্ঠিত বিশ্ববিদ্যালয়ের ৬১তম সিন্ডিকেট সভার সিদ্ধান্তক্রমে সে বছরের ১৮ জুলাই থেকে উজ্জ্বল কুমার প্রধানকে দুই বছরের জন্য প্রক্টরের দায়িত্ব দেওয়া হয়। নির্ধারিত দুই বছর মেয়াদ শেষে ২০২০ সালের ১৮ জুলাই থেকে তাঁকে দ্বিতীয় মেয়াদে প্রক্টরের দায়িত্ব দেওয়া হলে সেই দায়িত্বের মেয়াদ শেষ হয় ২০২২ সালের ১৭ জুলাই।
দ্বিতীয় মেয়াদে দায়িত্ব পালন শেষে গত বছরের ১৮ জুলাই থেকে পুনরায় তাঁকে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত দায়িত্ব পালন করতে বলেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। মেয়াদ শেষ হওয়ার পরও ইউজিসির নির্দেশনা অমান্য করে তাঁকে দায়িত্বে রাখায় শিক্ষকদের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। একজনকে বারবার দায়িত্বে না রেখে নতুন কাউকে সুযোগ দেওয়ার পক্ষে মত দেন বিশ্ববিদ্যালয়ের একাধিক জ্যেষ্ঠ শিক্ষক।
উজ্জ্বল কুমার প্রধানকে ডিন হিসেবে নিয়োগেও রয়েছে জ্যেষ্ঠতার ক্রম না মানার অভিযোগ। গত ১৩ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত বিশ্ববিদ্যালয়ের ৭৯তম সিন্ডিকেট সভার অনুমোদনক্রমে বিজ্ঞান ও প্রকৌশল অনুষদের ডিন হিসেবে নিয়োগ পান অধ্যাপক উজ্জ্বল কুমার প্রধান। বিশ্ববিদ্যালয় আইন ২০০৬-এর ২২ (৫) ধারায় বলা হয়েছে, ‘ভাইস চ্যান্সেলর সিন্ডিকেটের অনুমোদনক্রমে প্রত্যেক অনুষদের জন্য বিভিন্ন বিভাগের অধ্যাপকদের মধ্য থেকে জ্যেষ্ঠতার ভিত্তিতে পালাক্রমে দুই বছর মেয়াদের জন্য ডিন নিয়োগ করবেন।’ কিন্তু এই অনুষদে জ্যেষ্ঠতার ক্রমানুসারে সপ্তম অবস্থানে ছিলেন অধ্যাপক উজ্জ্বল কুমার প্রধান।
এ বিষয়ে শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড. শেখ সুজন আলী বলেন, ‘একজন ব্যক্তিকে একই সঙ্গে একাধিক দায়িত্ব না দিয়ে দায়িত্বগুলো যথাযথভাবে বণ্টন করা হলে তাতে বিশ্ববিদ্যালয়ে কাজের গতি বাড়বে বলে আমি মনে করি।’
এ বিষয়ে অধ্যাপক ড. উজ্জ্বল কুমার প্রধান বলেন, ‘উপাচার্য স্যার বিধির মধ্যে থেকেই আমাকে দায়িত্ব দিয়েছেন। এখানে কোনো বিধির লঙ্ঘন হয়েছে বলে আমি মনে করি না।’
উপাচার্য অধ্যাপক ড. সৌমিত্র শেখর বলেন, ‘এখানে সিন্ডিকেট যা ভালো মনে করে তাই করা হয়। ভিসি এককভাবে কিছু করেন না। ভিসি সিন্ডিকেটে বিষয়গুলো উপস্থাপন করেন, সিন্ডিকেট চাইলে অনেক কিছু বাতিল করতে পারে।’