আন্তর্জাতিক ডেস্ক |১১ ফেব্রুয়ারি ২০২৩:
তুরস্ক-সিরিয়া ভূমিকম্পের ধ্বংসস্তূপ থেকে উদ্ধারকারীরা শনিবার আরো শিশুদের উদ্ধার করেছে। ভূমিকম্পে মৃতের সংখ্যা বেড়ে ২৪ হাজার ছাড়িয়েছে এবং বরফ শীতল তাপমাত্রা লাখ লাখ মানুষের দুর্ভোগ আরও বাড়িয়ে দিয়েছে, অনেকের চরমভাবে সাহায্যের প্রয়োজনীয়তা দেখা দিয়েছে।
জাতিসংঘ সতর্ক করে দিয়ে বলেছে, ভূমিকম্পের পর দুই দেশে অন্তত ৮লাখ ৭০হাজার মানুষের জরুরিভাবে খাদ্যের প্রয়োজন, শুধুমাত্র সিরিয়াতেই ৫.৩ মিলিয়ন লোক গৃহহীন হয়ে পড়েছে।
গত সোমবারের ৭.৮-মাত্রার কম্পনের পরে আফটারশকগুলো মৃতের সংখ্যা বাড়িয়েছে এবং বেঁচে থাকা ব্যক্তিদের জীবনের ঝুঁকি আরও বাড়িয়ে দিয়েছে।
তুরস্কের দক্ষিণাঞ্চলীয় শহর আন্তাকায়ার বাসিন্দা পেনশনভোগী ফিদান তুরান অশ্রু ভরা চোখে বলেন, ‘যখন আমি ধ্বংস হওয়া ভবন, মৃতদেহ দেখি, তখন এমন নয় যে আমি দুই বা তিন বছরে কোথায় থাকব তা দেখতে পাচ্ছি না, কার্যত আমি ভাবতে পারি না যে আমি আগামীকাল কোথায় থাকব। আমরা আমাদের বর্ধিত পরিবারের ৬০ জন সদস্যকে হারিয়েছি’।
জাতিসংঘের বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচি তুরস্কের অন্তত ৫ লাখ ৯০হাজার এবং সিরিয়ায় ২ লাখ ৮৪হাজার জন সদ্য বাস্তুচ্যুত মানুষকে খাদ্য রেশন প্রদানের জন্য ৭৭ মিলিয়ন ডলার অর্থ সরবরাহের আবেদন করেছে।
এতে বলা হয়েছে, তুরস্কে বাস্তুচ্যুতদের মধ্যে, ৫লাখ ৪৫ হাজার অভ্যন্তরীণভাবে বাস্তুচ্যুত এবং ৪৫ হাজার শরণার্থী রয়েছে।
তুরস্কের কর্মকর্তারা বলছেন, ভূমিকম্পে ১২ হাজার ১৪১টি ভবন ধ্বংস হয়েছে বা গুরুতরভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
ইস্তাম্বুল-ভিত্তিক বোগাজিসি ইউনিভার্সিটির অধ্যাপক মুস্তাফা এরদিক বলেন, ‘মেঝেগুলো একে অপরের ওপরে স্তুপ হয়ে আছে, যার মানে জীবিত কাউকে পাওয়ার সম্ভাবনা খুবই কম।’
প্রলয়ঙ্করী ভূমিকম্পে ভবন ধসে পড়ার পর দেশ ছেড়ে পালানোর চেষ্টা করা এক ঠিকাদারকে শুক্রবার আটক করেছে পুলিশ।
১৯৩৯ সালে ৭.৮-মাত্রার কম্পনে ৩৩ হাজার লোক মারা যাওয়ার পর এই কম্পনটি ছিল সবচেয়ে শক্তিশালী এবং মারাত্মক।
কর্মকর্তা ও চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, তুরস্কে ২০ হাজার ৬৬৫ জন এবং সিরিয়ায় ৩ হাজার ৫৫৩ জন মারা গেছেন। নিশ্চিত মোট মৃত্যুর সংখ্যা এখন দাঁড়িয়েছে ২৪ হাজার ২১৮ জন।