জেএসসি পরীক্ষা : শিক্ষকরাই নকল তুলে দিচ্ছেন শিক্ষার্থীদের হাতে

টাঙ্গাইলের ভূঞাপুরে জুনিয়র স্কুল সার্টিফিকেট (জেএসসি) পরীক্ষায় শিক্ষার্থীরা প্রকাশ্যে নকল করলেও দায়িত্বপ্রাপ্ত শিক্ষকরা থাকছেন দর্শকের ভূমিকায়। অনেক ক্ষেত্রে শিক্ষকরায় পরীক্ষার্থীদের হাতে নকল তুলে দিচ্ছেন বলেও অভিযোগও উঠেছে।

পাসের হার বাড়াতে হবে। তাই ওপর থেকে নির্দেশনা আছে পরীক্ষার্থীদের কিছু বলা যাবে না বলেও নাম প্রকাশ না করার শর্তে অনেকে জানিয়েছেন।
কয়েকদিনের সরেজমিন পর্যবেক্ষণেও নিকরাইলের তিনটি কেন্দ্রের এমন চিত্রই উঠে এসেছে। বিশেষ করে শমসের ফকির ডিগ্রি কলেজ কেন্দ্রে নকলের প্রবণতা ভয়াবহ।

জানা যায়, উপজেলায় জুনিয়র স্কুল সার্টিফিকেট (জেএসসি) পরীক্ষা নিকরাইলের তিনটি কেন্দ্রে অনুষ্ঠিত হচ্ছে। এ তিনটি কেন্দ্রে পরীক্ষার প্রথম দিন থেকেই শিক্ষার্থীরা প্রকাশ্যে নকল করলেও দায়িত্বপ্রাপ্ত শিক্ষকরা নকল বন্ধে কোনো পদক্ষেপ নিচ্ছেন না। উপরন্তু হলে দায়িত্বপ্রাপ্ত শিক্ষকরা পরীক্ষার্থীদের হাতে নকল তুলে দিচ্ছেন। এরফলে উপজেলাজুড়ে নকলের মহোৎসব চলছে।

সরেজমিনে দেখা গেছে, বাইরে থেকে পরীক্ষার্থীদের স্বজনরা শিক্ষকদের ম্যানেজ করে প্রশ্ন বাইরে নিয়ে আসে। এরপর তারা প্রশ্নের উত্তর কাগজে লিখে জানালা দিয়ে শিক্ষার্থীদের কাছে পৌঁছে দেয়। শিক্ষকরাও সেটি দেখে এড়িয়ে যান। এরপর শিক্ষকদের সামনেই চলে নকল। পরীক্ষা চলাকালীন সময়ে কোনো কর্মকর্তা হলে ঢুকতেই পরীক্ষার্থীদেরকে সর্তক করে দেন শিক্ষকরা। আর এভাবেই চলছে জেএসসির প্রত্যেকটি পরীক্ষা।

পরীক্ষা শেষে একাধিক শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বললে তারা জানায়, নকল করার সময় স্যাররা আরো সাহায্যে করে। নকল ছাড়াও অনেকাংশে শিক্ষকরা আমাদের প্রশ্নের উত্তর বলে দেয়।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুুক দায়িত্বপ্রাপ্ত কয়েকজন শিক্ষক জানান, ওপর থেকে নির্দেশনা আছে শিক্ষার্থীদের কিছু বলা যাবে না। পাসের হার বাড়াতে হবে। পরিস্থিতি এমন হয়েছে ছাত্ররাই পরীক্ষা শেষে শিক্ষকদের পরের দিনের পরীক্ষার প্রস্তুতি নিতে বলছেন। প্রশাসনের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তারাও নকলের বিষয়টি এড়িয়ে যান।

নিকরাইল কেন্দ্রের তিনটির ভেন্যুর দায়িত্বে রয়েছেন উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. শাহীনুর ইসলাম।

অভিযোগ সম্পর্কে মো. শাহীনুর ইসলাম বলেন, জেএসসি পরীক্ষায় কোনো ধরনের নকল হয়নি। তবে পরীক্ষার সময় বহিরাগতরা ঘুরাঘুরি করলেও তাদের পরীক্ষা কেন্দ্রের আশপাশে বিচরণ থেকে বিরত রাখা হয়েছে। এরপরও যদি নকল হয়ে তাহলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ আবদুল আওয়াল বলেন, পরীক্ষা কেন্দ্রে নকল হওয়ার কোনো সুযোগ নেই। এছাড়া নিকরাইল কেন্দ্রে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা নিজে পর্যবেক্ষণ করছেন। এ ধরনের কোনো অভিযোগ পাওয়া যায়নি। অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
jagonews

Facebooktwitterredditpinterestlinkedinby feather
Image Not Found

Leave a Reply

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।