জাল রেজুলেশনে শিক্ষক বদলী

নাটোর প্রতিনিধি : ৮ মে : নাটোরের বড়াইগ্রামে উপজেলা শিক্ষা কমিটির জাল সভার রেজুলেশন দেখিয়ে একজন শিক্ষককে বাদলী করার অভিযোগ উঠেছে। এ বিষয়ে তদন্ত করে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নিতে গত মঙ্গলবার জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার বরাবর চিঠি পাঠিয়েছেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) ইশরাত ফারজানা।
উপজেলা শিক্ষা অফিসের নথি অনুসন্ধানে জানা যায়, বড়াইগ্রাম উপজেলা শিক্ষা কমিটির সর্বশেষ সভা চলতি বছর ১২ ফেব্রুয়ারী অনুষ্ঠিত হয় । ওই সভায় আবেদনের ভিত্তিতে বিধি মোতাবেক সকল শিক্ষকের বদলীর বিষয়ে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়। এরপর শিক্ষা কমিটির আর কোন সভা হয় নাই। কিন্তু শিক্ষা অফিসের কতিপয় দূর্নীতিগ্রস্থ ব্যক্তি শিক্ষা কমিটির একটি জাল সভার নেজুলেশন দেখিয়ে ফজিলাতুন নাহার নামে একজন সহকারী শিক্ষককে ভবানিপুর থেকে বনপাড়া মডেল সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে বদলী করেছেন। অথচ সর্বশেষ সভায় সিদ্ধান্ত ছিল মডেল স্কুলে একজন পুরুষ শিক্ষককে বদলী করে আনা হবে। সেই সভার রেজুলেশনও পরিবর্তন করা হয়েছে। সভার উপস্থিতি স্বাক্ষর ১২ ফেব্রুয়ারী থাকলেও রেজুলেশনে দেখানো হয়েছে ১৩ তারিখ।
৩০ মার্চ দেখানো জাল সভা অনুষ্ঠানের সময় দেখানো হয়েছে বিকেল ৩টা, ওই তারিখেই উপজেলা শিক্ষা অফিস থেকে জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসে আবেদন এবং বদলী অনুমোদনের আদেশ দেখানো হয়েছে। অথচ ওই তারিখের শিক্ষা কমিটির সভা সম্পর্কে কমিটির সভাপতিসহ অন্যকোন সদস্য কিছুই জানেন না প্রকৃতপক্ষে কোন সভা হয় নাই। আবার মাত্র ২ কর্মঘন্টার মধ্যে সভা, আবেদন ও অনুমোদন এবং যোগাযোগ কিভাবে সম্ভব ? এসকল কিছু নিয়েই সর্বত্র চলছে গুঞ্জন আর চাপা ক্ষোভ।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে অফিসের একনজ জানান, একজন সহকারী শিক্ষা কর্মকর্তা ও অফিস সহকারী যৌথ ভাবে ওই কাজটি করেছেন। যদিও অফিস প্রধান হিসাবে বিষয়টি শিক্ষা কর্মকর্তার উপর বর্তাচ্ছে। তদন্তে এলেই প্রকৃত সত্য বের হয়ে যাবে।
উপজেলা শিক্ষা অফিসার আকলিমা খানম বলেন, আমি নতুন এসেছি,আবার শারীরিক ভাবে সুস্থ্য নয় তাই সহকারী শিক্ষা অফিসার ও অফিস সহকারীদের উপর একটু বেশী নির্ভরশীল হতে হচ্ছে। আর এই সুযোগ কাজে লাগিয়ে যাদি কেউ এহেন অপরাধ করে থাকে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে আমি কোন প্রকার অবহেলা করবো না।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও উপজেলা শিক্ষা কমিটির নির্বাহী ভাইসচেয়ারম্যান ইশরাত ফারজানা বলেন, পুরো একটি সভাকে জাল করার সাহস কিভাবে পেলো এটা ভেবে আমি বিস্মিত। আমি জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনানুগ শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য জেলা শিক্ষা অফিসারের নিকট চিঠি পাঠিয়েছি। তিনি বলেন, ওই শিক্ষকের বদলীর বিষয়ে এমনিতে বললেই করে দেওয়া যেত, এর জন্য জালিয়াতির প্রয়োজন পরে না। তিনি আরও বলেন জাল করা একটি কঠিন শাস্তিযোগ্য অপরাধ, অবশ্যই জড়িতদের শাস্তি হওয়া প্রয়োজন।
উপজেলা চেয়ারম্যান (ভারপ্রাপ্ত) ও উপজেলা শিক্ষা কমিটির সভাপতি (তৎকালীন সভাপতি) আব্দুল হাকিম বলেন, ২৮ মার্চ উপ-নির্বাচনে নির্বাচিত উপজেলা চেয়ারম্যান শপথ গ্রহণ করেছেন। তাই ৩০ মার্চ আমার সভাপতিত্বে সভা করার কোন সুযোগ নেই। আসলে জাল করলে ভুল ধরার পথ থেকে যায়। এটাই তার প্রমান। বিষয়টি ইউএনও মহোদয়কে অবহিত করে আইনানুগ ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে।
জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার নফীসা বেগমের সাথে কথা বলতে চাইলে তার ব্যক্তিগত মোবাইল ফোন বন্ধ পাওয়ায় তা সম্ভব হয় নাই ।
Facebooktwitterredditpinterestlinkedinby feather
Image Not Found

Leave a Reply

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।