জবি প্রতিনিধি,২৫ মার্চ ২০২৩: জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিব হলের প্রভোস্ট হলের ক্যান্টিনে গরুর মাংস নিষিদ্ধ করেছেন বলে একটি খবর শুক্রবার (২২ মার্চ) সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে৷ তবে এ খবর সঠিক নয় বলে দাবি জানিয়েছেন হল প্রভোস্ট অধ্যাপক ড. দীপিকা রানী সরকার। একটি মহল ইচ্ছাকৃতভাবে তার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করছেন বলেও অভিযোগ তার।
অধ্যাপক দীপিকা রানী বলেন, ‘গরুর মাংস নিষিদ্ধ’—এ ধরনের কোনো কথা আমি বলিনি। ক্যান্টিনের দায়িত্বরত কারো সাথে আমার এমন কোনো কথা হয়নি।
‘‘আমি দায়িত্ব পাওয়ার পর হলের দায়িত্ব কয়েকটি বিভাগে ভাগ করে দিয়েছিলাম। এর মধ্যে ক্যান্টিন কমিটির দায়িত্ব দেয়া হয়েছে নিগার সুলতানাকে। আমি তাকেই বলেছিলাম, যেহেতু রমজান শুরু হচ্ছে, সাহরি এবং ইফতারে মেয়েদের যেন কোনো অসুবিধা না হয়। যেহেতু তুমি মুসলিম এ বিষয়ে ভালো বুঝবে, ক্যান্টিনের লোকদের সাথে সমন্বয় করে, বিষয়টা দেখভাল করো।’’
যে বা যারা তার বিরুদ্ধে এ ধরনের খবর ছড়িয়ে তাদের চিহ্নিত করার দাবি জানিয়েছেন অধ্যাপক দীপিকা রানী। তিনি বলেন, আমার সম্পর্কে এ ধরনের কথা কে, কেন ছড়িয়েছে এটা খুঁজে বের করা হবে৷ আমি সোমবার বিষয়টি নিয়ে শিক্ষকদের সাথে বসবো।
আরও পড়ুন: গুচ্ছের বিষয়ে জবির চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত ২৯ মার্চ, আগের অবস্থানে অনড় ইবি
এই বিতর্কের মাঝেই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে হল ক্যান্টিনের ম্যানেজার মো. জাহাঙ্গীরের একটি অডিও রেকর্ড ফাঁস হয়েছে। যেখানে তাকে বলতে শোনা যায়, ‘‘হলের প্রভোস্ট গরুস মাংসের অনুমতি দেয়নি। কেন দেয়নি উত্তরে তিনি বলেন, এখানে হিন্দু মেয়েরা আছে অনেক, এইজন্য।’’
এদিকে, আজ শনিবার জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় পদার্থবিজ্ঞান অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশন সভাপতি ড. আব্দুল্লা আল-মমিন এবং সাধারণ সম্পাদক ড. শোভন কুমার কুন্ডু স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এ ঘটনার নিন্দা জানানো হয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞান অনুষদের সাবেক ডীন, পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের সাবেক চেয়ারম্যান ও বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিব হলের প্রভোস্ট অধ্যাপক ড. দীপিকা রানী সরকারের বিরুদ্ধে একটি মহল ষড়যন্ত্র করে গুজব ছড়িয়েছে। এই ঘটনার সাথে জড়িতদের বিরুদ্ধে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা করতে হবে।
অধ্যাপক ড. দীপিকা রানী সরকার বলেন, ‘ছাত্রী হলে গরুর মাংস নিষিদ্ধ’—এটা মিথ্যা কথা। এখানে বেশিরভাগ ছাত্রীই মুসলিম। তারা যেন ঠিকমতো ইফতার ও সেহেরি করতে পারে সে নির্দেশনা দেয়া আছে। গরুর মাংস নিষিদ্ধের প্রশ্নই উঠে না। গরুর মাংস থাকলেও সাথে মাছ থাকবে, যেন অন্য ধর্মাবলাম্বীদের অসুবিধা না হয়। আমি নিজে হিন্দু, তাই আমার বিপক্ষে ষড়যন্ত্র হচ্ছে।