গুচ্ছের বিষয়ে জবির চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত ২৯ মার্চ, আগের অবস্থানে অনড় ইবি

Image

ডেস্ক,২৫ মার্চ ২০২৩: চলতি ২০২২-২৩ শিক্ষাবর্ষে গুচ্ছভুক্ত ২২টি বিশ্ববিদ্যালয়ের সাথে ভর্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহণের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে আবারও সভায় বসবে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় (জবি) শিক্ষক সমিতি। শনিবার (২৫ মার্চ) এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় (জবি) শিক্ষক সমিতির সভাপতি ও অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক ড. আইনুল ইসলাম।

তবে, এখনো নিজেদের অবস্থানে অনড় থাকার কথা জানিয়েছেন ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় (ইবি) শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. তপন কুমার জোদ্দার।

আরো পড়ুন: ঢাবির ভর্তি পরীক্ষায় মোট আবেদন প্রায় তিন লাখ

ড. আইনুল ইসলাম জানিয়েছেন, আগামী ২৯ মার্চ আমরা সাধারণ সভা ডেকেছি; সেখানে শিক্ষক সমিতি যে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে-তা আমরা জনিয়ে দেব। সভায় গুচ্ছের বিষয়ে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হবে জানিয়ে তিনি বলেন, গুচ্ছের বিষয়ে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করতে না পারার কারণে অনিশ্চয়তায় রয়েছে লাখ লাখ শিক্ষার্থী। তাদের দায়ভার কে নিবে—এমন জিজ্ঞাসাও তার।

অধ্যাপক ড. তপন কুমার জোদ্দার জানান, আমরা আমাদের সিদ্ধান্ত জানিয়েছি; আপাতত তা থেকে সরে আসার কোন সুযোগ নেই। আমরা একাডেমিক কাউন্সিলে সিদ্ধান্ত নিয়েছি, সিদ্ধান্ত বদলাতে হলে একাডেমিক কাউন্সিলেই তা নিতে হবে–আপাতত কাডেমিক কাউন্সিলে বসার কোন পরিকল্পনা নেই বলেও জানিয়েছেন তিনি।

প্রসঙ্গত, গুচ্ছ থেকে বেরিয়ে যেতে বেশ কয়েক দফা দাবি জানানোর পর জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) শিক্ষক সমিতি চলতি মাসে আনুষ্ঠানিকভাবে গুচ্ছ থেকে বের হয়ে যাওয়ার কথা জানায়। একই সিদ্ধান্ত জানায় কুষ্টিয়ার ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় (ইবি) শিক্ষক সমিতি। এছাড়াও গুচ্ছ থেকে বের হয়ে যেতে আগ্রহী গোপালগঞ্জের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বশেমুরবিপ্রবি) শিক্ষক সমিতিও। তবে, একাডেমিক কাউন্সিল ও সিন্ডিকেট এবং শিক্ষক সমিতিগুলোর দাবির প্রেক্ষিতে এখনো চূড়ান্ত কোন সিদ্ধান্তে আসতে পারেনি কোন বিশ্ববিদ্যালয়ই।

দেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে উচ্চশিক্ষায় আগ্রহী শিক্ষার্থীদের জন্য সার্বিক ভর্তি প্রক্রিয়া সহজ করতে ২০২০-২০২১ সেশন থেকে শুরু হয় সমন্বিত ভর্তি পরীক্ষা। স্বায়ত্তশাসিত ও বিশেষায়িত ছাড়া প্রথমবার ২০ বিশ্ববিদ্যালয় নিয়ে শুরু হরেও পরের বছর থেকে ২২টি বিশ্ববিদ্যালয়ের সমন্বয়ে শুরু হয় এ ভর্তি প্রক্রিয়া। এ উদ্যোগের উদ্দেশ্য বিবেচনায় যতটুকু ইতিবাচক আশার সঞ্চার করার কথা ছিল দুই সেশনে ভর্তি কার্যক্রম চালিয়ে তার চেয়েও বেশি হতাশার সৃষ্টি করায় গুচ্ছ থেকে বের হয়ে যাওয়ার কথাও আসে খোদ বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর শিক্ষক সমিতি থেকে।

শিক্ষক সমিতিগুলোর সদস্যরা বলছেন, ভর্তিতে দীর্ঘ-সময়ক্ষেপণ, শিক্ষার্থীদের হয়রানি, সেশনজট, ফলাফল সংক্রান্ত জটিলতা এবং গুচ্ছ নিয়ে শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের মাঝে পর্যাপ্ত তথ্য না থাকাসহ বিবিধ নেতিবাচক বিষয়ের সমাধান হওয়া দরকার। পাশাপাশি তারা মনে করেন, গুচ্ছ ভর্তি প্রক্রিয়াটি আরও পরিকল্পিত হওয়া উচিৎ। সেজন্য চলমান কৃষি গুচ্ছের মতো করে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর জন্য আলাদা, সাধারণ বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর জন্য আলাদা ভর্তি প্রক্রিয়া বা পরীক্ষার প্রয়োজনীয়তার কথাও জানান তারা। শিক্ষার্থীদের সঠিক মূল্যায়নের মাধ্যমে বিষয় প্রদানের পাশাপাশি গুচ্ছের চলমান অব্যবস্থাপনার সমাধান চান শিক্ষকরা।

দেশে বর্তমানে ৫৩টি সরকারি এবং ১০৮টি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় রয়েছে। সবগুলো বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়, সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মধ্যে ঢাবি, রাবি, চবি ও জাবি এবং কয়েকটি বিশেষায়িত বিশ্ববিদ্যালয় বাদে অধিকাংশই গুচ্ছ ভিত্তিতে ভর্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে। যাতে গুচ্ছভুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে একজন শিক্ষার্থী একটি পরীক্ষা দিয়েই ভর্তি হতে পারেন। আর ১৯৭৩ সালের সরকারি বিশ্ববিদ্যালয় আইনে পরিচালিত বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে ভর্তির সুযোগ থাকে আলাদাভাবে ভর্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহণের মাধ্যমে।

Image Not Found

Leave a Reply

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।