কেজি স্কুল নিয়ে যা ভাবছে মন্ত্রণালয়

Image

নিজস্ব প্রতিবেদক।।

দেশে নিয়ম-নীতির তোয়াক্কা না করে যত্রতত্র গড়ে তোলা প্রাক-প্রাথমিক ও কিন্ডার গার্টেন (কেজি) স্কুলগুলোর লাগাম টানবে মন্ত্রণালয়। সব স্কুলকে এক ছাতার নিচে আনতে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা অধিদপ্তর (ডিপিই) ইতোমধ্যে কাজ শুরু করেছে বলে জানা গেছে। এছাড়া এসব স্কুলের প্রাথমিক অনুমোদন প্রক্রিয়া সহজ করতে পূর্বের নীতিমালা কিছুটা সংশোধন আনতে একটি সাব-কমিটি করা হয়েছে বলেও সংশ্লিষ্ট অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে।

আরো পড়ুন: প্রাথমিক শিক্ষক সমিতি ও সাধারণ শিক্ষক মুখোমুখি

এ বিষয়ে সংশোধিত নীতিমালার খসড়া চলতি মাসের মধ্যে সম্পন্ন করার কথা রয়েছে। পরে এটি পর্যালোচনা করে চূড়ান্ত করা হবে বলেও জানিয়েছে সূত্র। এদিকে কেজি স্কুলের বর্তমান অনুমোদন নীতিমালার মধ্যে রয়েছে, সংশ্লিষ্ট বিভাগীয় উপ-পরিচালক বরাবর আবেদন করা হলে তিনি প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন করে একটি প্রতিবেদন ডিপিইতে পাঠাবেন। পরে প্রতিবেদন ইতিবাচক হলে ২২টি শর্ত জুড়ে এক বছরের জন্য প্রাথমিক অনুমোদন দেয় অধিদপ্তর। এক বছর পর আবারও সমান শর্তে তিন বছরের জন্য অস্থায়ী নিবন্ধন দেওয়া হয়। এসময় শেষে স্থায়ী ক্যাম্পাসসহ আগের একই শর্তে পাঁচ বছরের জন্য স্থায়ী নিবন্ধন দেওয়া হয়। এরপর থেকে শুধুমাত্র নিবন্ধন নবায়ন করতে হয়।

২২ শর্তে রয়েছে:

অনুমোদন নীতিমালাগুলোর শর্তের মধ্যে অন্যতম হলো-

১. বিদ্যালয়ে পানির ব্যবস্থা।

২. সরকারের কাছে আর্থিক সুবিধা দাবি না করা।

৩. নিয়মিত অ্যাসেম্বলি ও জাতীয় সংগীত পরিবেশন।

৪. কমিটি গঠন।

৫. এনসিটিবির বই পড়ানো।

৬. জাতীয় দিবস পালন।

৭. ভর্তি-বেতনে সরকারি নির্দেশনা অনুসরণ।

৮. শিক্ষক-কর্মচারী নিয়োগের ক্ষেত্রে ন্যূনতম যোগ্যতা ও পত্রিকায় বিজ্ঞাপন প্রকাশ।

৯. ল্যাব-লাইব্রেরি প্রতিষ্ঠা।

১০. তহবিল গঠন।

১১. শিক্ষার্থী-শিক্ষকদের তথ্য থানায় সরবরাহ।

১২. নিজস্ব বা তিন হাজার স্কয়ার ফুটের ভাড়া বাসা।

১৩. ঢাকা মহানগরের ক্ষেত্রে ৫০ হাজার টাকা জামানত। মহানগরের জামানত কম হলেও ক্যাম্পাসের জমি বেশি হতে হয়।

বর্তমানে প্রাথমিক অনুমোদন প্রক্রিয়ায় জটিলতার কথা জানিয়ে বাংলাদেশ কিন্ডারগার্টেন অ্যাসোসিয়েশনের মহাসচিব মিজানুর রহমান জানান, ২০১৩ সালের পর থেকে এখন পর্যন্ত তিন শতাধিক কেজি স্কুল নিবন্ধনের আওতায় এসেছে।

তিনি বলেন, বর্তমানে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরে আবেদন গেলে নানা ত্রুটি দেখিয়ে ফাইল ফেরত পাঠানো হয়। এর ফলে সম্প্রতি এ কার্যক্রম স্থবির হয়ে পড়েছে। বর্তমানে এ প্রক্রিয়াটি জটিল হওয়ায় কেউ এর আওতায় আসতে চাচ্ছে না। এছাড়া আবেদনকারীরা নিরুৎসাহী হয়ে পিছিয়ে যাচ্ছেন।

এদিকে ডিপিই সূত্রে জানা গেছে, চলতি বছরের শুরুতে অধিদপ্তরের ১২তম সভায় প্রাথমিক অনুমোদনের জন্য ৫৯৮টি আবেদন তোলা হয়। সেখান থেকে ২৬৩টি আবেদনে সম্মতি দেওয়া হয়। এছাড়া ৩৩৫টি আবেদন বাতিল করা হয়। ফেরত দেওয়া আবেদনগুলো পুনরায় সংশোধন করে পাঠাতে নির্দেশ দেয় অনুমোদন কমিটি।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সচিব ফরিদ আহাম্মদ বলেন, অনুমোদন না নিয়েই অনেক কেজি স্কুল চলছে। এসব স্কুল শিশুদের ইচ্ছামতো বইয়ের বোঝা তুলে দিচ্ছে। শিশুদের শিক্ষার মান ও পরিবেশ নিশ্চিত করতে স্কুলগুলোকে অনুমোদনের আওতায় আনতে নীতিমালা করা হয়।

তিনি বলেন, এ নীতিমালার শর্ত আরও সহজ করতে কিছুটা সংশোধন করে সেটি পর্যালোচনা করে চূড়ান্ত করা হবে। ইতোমধেই নীতিমালা সংশোধনে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা অধিদপ্তরের সমন্বয়ে একটি কমিটি করা হয়েছে। আশা কর যাচ্ছে, এ মাসেই একটি সংশোধনী পাওয়া যাবে।

Image Not Found

Leave a Reply

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।