মোঃ রাসেল হোসেন, ময়মনসিংহ জেলা প্রতিনিধি : শিক্ষার্থীদের বসার জন্য কোন বেঞ্চ নেই। আসবাবপত্র বলতে আছে চারজন শিক্ষকের জন্য মাত্র দুইটি চেয়ার ও একটি টেবিল। দরজা-জানালার নেই কোন কপাট। ময়মনসিংহের ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলার এ স্কুলটির নাম মগটুলা তরপ পাছাইল সিরাক সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়।
সামান্য বৃষ্টিতেই যে বিদ্যালয়ের মাঠে জমে হাঁটু পানি। দেখা যায়, বিদ্যালয়ের মাঠে হাটু পানিতেই খেলাধুলা করছে বেশ ক’জন শিক্ষার্থী। ক্লাসরুমে গিয়ে দেখা যায়, দুইজন শিক্ষক ক্লাস নিচ্ছেন। শিক্ষার্থীরা বেঞ্চের অভাবে মেঝেতে বসেই পাঠ নিচ্ছে। অন্য শ্রেণির শিক্ষার্থীরা মাঠে জলকেলি করছে।
প্রধান শিক্ষক আবু বকর সিদ্দিক জানান, বিদ্যালয়টি ১৯৯৯ সালে প্রতিষ্ঠিত। ২০১৩ সালে বিদ্যালয়টি দেশের বেসরকারী বিদ্যালয়ের সাথে জাতীয়করণ করা হয়। বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীর সংখ্যা ২৪৮জন। কিন্তু শিক্ষা উপকরণ না থাকায় দিনদিনই কমছে শিক্ষার্থীদের উপস্থিতির সংখ্যা।
স্কুল ফিডিং কর্মসূচীর আওতায় বিদ্যালয়টিতে বিস্কুট প্রদান করা হয়। কিন্তু বিদ্যালয়ের দরজা-জানালা না থাকায় বিস্কুটের কার্টুন প্রধান শিক্ষকের বাড়িতে রাখা হয়। প্রতিদিন সেখান থেকে এনে শিক্ষার্থীদের মাঝে বিতরণ করা হয়।
দ্বিতীয় শ্রেণির আরিফুল, আকিবুল, ফারজানা ও পঞ্চম শ্রেণির তারিন, রাসেল সহ কয়েকজন শিক্ষার্থী জানায়, মেঝেতে বসে ক্লাস করতে তাদের ভাল লাগে না। উপুড় হয়ে লিখতে কষ্ট হয়।
চারজন শিক্ষককের পদ থাকলেও দু’জনকে বিদ্যালয়ে পাওয়া যায়। বাকি দুইজনের মধ্যে একজন ছুটিতে, অন্যজন প্রশিক্ষণে আছেন। স্থানীয় অভিভাবক আবুল কাশেম জানান, দুইজন শিক্ষক দিয়ে কিভাবে এই স্কুলের পাঠদান চলে ?
হায়দার আলী (৫৫) নামে একজন অভিভাবক বলেন, ‘বেঞ্চ না থাকায় ও মাঠে জলাবদ্ধতার কারণে ছেলে-মেয়েরা স্কুলে আসতে চায় না। অনেকই এই পানি দিয়ে চলাচল করতে গিয়ে অসুস্থ হয়ে পড়ছে।’
জানতে চাইলে উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মোহাম্মদ আলী সিদ্দিক বলেন, ‘এনজিও পরিচালিত এই স্কুলটি জাতীয়করণ করা হয়েছে। আপাতত স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের মাধ্যমে কিছু বেঞ্চের ব্যবস্থা করা হবে। সেই সাথে বিদ্যালয়টির সমস্যাগুলো সমাধানের জন্য সরকারী অনুদানের চেষ্টা করা হচ্ছে।’