নেত্রকোনা জেলার কেন্দুয়া উপজেলায় ১৮২টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মধ্যে ৯০টি বিদ্যালয়ে পূর্ণ মর্যাদার প্রধান শিক্ষক নেই। উপজেলা শিক্ষা অফিসে ১৩ টি পদের মধ্যে ৮ টি পদেই খালি। শুধু মাত্র ৩ জন সহকারী প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার ও দুই জন অফিস সহায়ক জোরাতালি দিয়ে কোনভাবে চালাচ্ছেন। অফিস এতে করে ব্যাহত হচ্ছে পাঠদানসহ অন্যান্য কার্যক্রম।
আরো পড়ুন: দামুড়হুদার শ্রেষ্ঠ প্রধান শিক্ষক হলেন স্বরুপ দাস
এই বিদ্যালয়গুলোতে প্রধান শিক্ষক না থাকায় সহকারী শিক্ষক ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক ও চলতি দায়িত্বে থেকে একই সঙ্গে দুই দায়িত্ব পালন করছেন। এতে হিমশিম খেতে হচ্ছে তাদেরও।অন্যদিকে প্রাথমিক স্তরের শিক্ষার্থীদের শিক্ষা ব্যবস্থা পিছিয়ে পড়ছে। শিক্ষার গুণগতমান নিশ্চিত করতে হলে শিগগিরই এসব বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষকের পদ পূরণ করা দরকার বলে মনে করছেন শিক্ষক ও অভিভাবকরা।
উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিস জানিয়েছে, কেন্দুয়া উপজেলায় তেরোটি ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভায় মোট ১৮২ টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় রয়েছে। যার মধ্যে ৯০টি বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষক পদ শূন্য। ৪৭ টি বিদ্যালয়ে সহকারী শিক্ষককে চলতি দায়িত্ব দিয়ে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের কাজ চালানো হচ্ছে।৪৩ টি বিদ্যালয়ে সহকারী শিক্ষককে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। তাছাড়া বিভিন্ন বিদ্যালয়ে সহকারী শিক্ষকের পদ খালি রয়েছে।সহকারী শিক্ষা অফিসারের সংকট থাকায় ৭ টি ক্লাষ্টারের কার্যক্রম ও ব্যহত হচ্ছে। আর ৯২ টি বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সরাসরি / পদোন্নতি পেয়ে প্রধান শিক্ষক হয়েছেন।
পোড়াবাড়ি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক (চলতি দায়িত্ব) আব্দুস সাকি জানান, তাঁদের বিদ্যালয়ে দীর্ঘদিন ধরে প্রধান শিক্ষকের পদটি শূন্য রয়েছে। বর্তমানে প্রধান শিক্ষক (চলতি দায়িত্ব) হিসাবে পালন করে আসছেন তিনি। বিদ্যালয় এবং অফিসের কাজ দুটোই করতে হচ্ছে ফলে বেশি চাপে থাকতে হচ্ছে। তাই দ্রুত একজন স্থায়ী প্রধান শিক্ষকের দাবী জানান তিনি।
কেন্দুয়া প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক ও জহুরপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক মো: জামিরুল হক জানান উপজেলার ৯০ টি প্রধান শিক্ষকের পদ শূন্য সহ শিক্ষা অফিসের উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার সহ ৮ টি পদ শূন্য থাকায় বিদ্যালয়ে পাঠদান সহ অফিসের কার্যক্রম চরম ভাবে ব্যহত হচ্ছে।শীঘ্রই এসব পদ পুরনের জন্য যথাযথ কর্তৃপক্ষের কাছে জোর দাবি জানান তিনি।
উপজেলা শিক্ষা কমিটির সভাপতি ও উপজেলা চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা নুরুল ইসলাম বলেন,প্রায় বিদ্যালয়গুলোতে প্রধান শিক্ষকের সংকট রয়েছে। তাছাড়া অফিসেও ৮টি পদ খালি আছে। এভাবে চললে শিক্ষার গুণগত মান ক্ষুণ্ণ হবে। দ্রুত এ শূন্য স্থানে শিক্ষক নিয়োগ করলে এই সমস্যা থেকে মুক্তি মিলবে।তিনি আরো বলেন আমি এ ব্যাপারে উর্ধতন কর্তৃপক্ষের সাথে কথা বলেছি।
কেন্দুয়া উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার (অতিরিক্ত দায়িত্ব) আবুল হুসেন জানান, উপজেলার ১৮২ টি বিদ্যালয়ের মধ্যে ৯০টিতে স্থায়ী প্রধান শিক্ষক নেই। অফিসে ১৩ টি পদের মধ্যে প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার ও সহকারী প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার সহ ৮ টি পদই শূন্য। যার ফলে শিক্ষা কার্যক্রম ব্যহত হচ্ছে।
তিনি আরো বলেন, শূন্য পদগুলো পদোন্নতির মাধ্যমে পূরণ করা হবে। এটির একটি প্রক্রিয়া চলছে। নিদিষ্ট করে বলা যাচ্ছে না, তবে শূন্য পদগুলো তাড়াতাড়ি পূরণ হবে বলে আশা করছি। তাছাড়া অফিসিয়াল পদগুলো শীঘ্রই পুরণের জন্য যথাযথ কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন করা হয়েছে বলেও জানান তিনি।