ইন্টারনেটে ধর্মীয় বিদ্বেষ ছড়ানোর বিরুদ্ধে লড়ছে বাংলাদেশ

ডেস্ক: ইন্টারনেটে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোতে ভুয়া সংবাদ, ছবি ও ভিডিও প্রচারের মাধ্যমে ধর্মীয় বিদ্বেষ ও জঙ্গিবাদ ছড়ানোর বিরুদ্ধে লড়াই করছে বাংলাদেশ। টোকিওভিত্তিক আন্তর্জাতিক অনলাইন সাময়িকী ‘দ্য ডিপ্লোম্যাট’-এ লেখা এক নিবন্ধে একথা বলেছেন প্রধানমন্ত্রীর তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি বিষয়ক উপদেষ্টা ও তার ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয়।

১২ ডিসেম্বর সাময়িকীটিতে ‘বাংলাদেশ ফাইটস ম্যালিসাস ফেসবুক পোস্টিংস, অনলাইন হেট’ শিরোনামে এ নিবন্ধটি প্রকাশিত হয়েছে।

সজীব ওয়াজেদ জয় তার নিবন্ধে লিখেছেন-

সম্প্রতি সত্য খবরের ভীড়ে ভুয়া খবরের বিষয়টি আলোচিত হচ্ছে। ইন্টারনেটে ক্লিক ও বিজ্ঞাপনের মাধ্যমে অর্থ আয়ের জন্য কাল্পনিক খবর তৈরির বিষয়টি যুক্তরাষ্ট্র ও অন্যান্য দেশের জন্য এখন সমস্যা। এ তালিকায় বাংলাদেশও রয়েছে।

সাংবিধানিকভাবে গণতান্ত্রিক দেশ বাংলাদেশ তার নাগরিকের অধিকার সুরক্ষায় প্রতিজ্ঞাবদ্ধ। যুক্তরাষ্ট্রের মতোই বাংলাদেশেও ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের হয়রানির মুখে পড়তে হয়। বাংলাদেশের জঙ্গিরা ফেসবুকের মাধ্যমে ভুয়া খবর পোস্ট করে বিদ্বেষ ছড়ায়।

সম্প্রতি ফেসবুকে এ ধরনের একটি ভুয়া ছবি ছড়ানো হয়। এতে মুসলমানদের পবিত্র স্থান মক্কায় কাবা ঘরে হিন্দু দেবতার ছবি বসিয়ে তা ছড়িয়ে দেওয়া হয়। এর জের ধরে ইসলামি উগ্রবাদীরা ঢাকার উত্তর-পূর্বে নাসিরনগরে ১৫টি মন্দির ও হিন্দু সম্প্রদায়ের ১০০ ঘরবাড়ি ভাঙচুর করে। ছবিটি দেখলে পরিষ্কারভাবে বোঝা যায় তা দুর্বলভাবে ফটোশপে করা। কিন্তু বিষয়টি উগ্রবাদীরা বিবেচনায় নেয়নি। ছবিটি উগ্রবাদ ছড়ানোর উপাদান হিসেবে ব্যবহার করে বাংলাদেশের সংখ্যালঘু হিন্দুদের বিরুদ্ধে বিদ্বেষ তৈরি করা হয়েছে। এ ঘটনায় সরকার দ্রুত তার নাগরিকদের সুরক্ষায় ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে।

ঘটনাস্থল থেকে সংগ্রহ করা ভিডিওর ভিত্তিতে এই অপরাধের জন্য প্রায় ৮০ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়। অনেকের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তিরা যাতে দ্রুত বিচার পান, সে জন্য সরকার এই মামলাগুলো দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে পাঠানোর ঘোষণা দিয়েছে।

একই সঙ্গে ভবিষ্যতে এ ধরনের ঘটনা যাতে না ঘটে, সেজন্য কাজ করছে সরকার। হামলা ঠেকাতে ব্যর্থ দুই পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। ওই এলাকার হিন্দুদের নিরাপত্তার জন্য সরকার অতিরিক্ত পুলিশ, র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‌্যাব) ও আধা সামরিক সীমান্তরক্ষী বাহিনী বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের সদস্যদের মোতায়েন করেছে। হামলাকারীদের বিচারের মুখোমুখি করা হবে এবং নাগরিকদের সুরক্ষা দেওয়া হবে- ভুক্তভোগীদের সেই সান্ত্বনা ও ভরসা দিতে সরকারের উচ্চপর্যায়ের কর্মকর্তারা ঘটনাস্থলে গিয়েছেন। এ ছাড়া বিদ্বেষ ও সহিংসতাকে উসকে দেওয়ার অভিযোগে সরকার ৩৫টি ওয়েবসাইট বন্ধ করে দিয়েছে।

Facebooktwitterredditpinterestlinkedinby feather
Image Not Found

Leave a Reply

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।