গত আট বছর ধরে তার একমাত্র ঠিকানা ছিল বেডরুমের চার দেওয়ালের মধ্যে। বাইরের দুনিয়ার কথা প্রায় ভুলেই গিয়েছিলেন তিনি। কিন্তু একটা সময় ছিল যখন রোজ ট্রেনে করে মুম্বইয়ের ভাসাই স্টেশন থেকে যাতায়াত করতেন ক্রফোর্ড মার্কেটে। সফট টয়েজের নির্মাতা ও বিক্রেতা ছিলেন অমিতা রাজানি। কিন্তু ক্রমাগত ওজন বৃদ্ধি কেড়ে নেয় তার সব ধরণের সুখ এবং মুখের হাঁসি। পা থাকতেও পঙ্গু হয়ে পড়েন তিনি। তবে সম্প্রতি ওজন বৃদ্ধির কারণে মারা যান অমিতার বাবা ও এক খালাতো বোন। আর তারপরই নিজের পরিণতি নিয়ে চিন্তিত অমিতা অস্ত্রোপচারের সিদ্ধান্ত নেন। ‘বেরিয়াট্রিক সার্জারি’ করে ঝরিয়ে ফেলেন ১১৭ কেজি মেদ। ৩০০ কেজি থেকে এখন অমিতা ১৮৩।
না এটা কোন অসুখ নয়। অমিতার মায়ের কথায় মেয়ের ওজন বৃদ্ধি পুরোটাই জিনগত। তবে জন্মানোর সময় আর পাঁচটা সাধারণ বাচ্চার মতো অমিতার ওজন ছিল মাত্র ৩ কেজি। কিন্তু বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বাড়তে থাকে তার ওজন। মাত্র দশ বছর বয়সে তাঁর ওজন হয় ১২৫ কেজি। ২০০৭ সালে তা ২০০ কেজি পেরিয়ে যায়। আর তার পর থেকেই শুরু হয় শারীরিক সমস্যা। অমিতার কথায়, ‘হাত পা ফুলতে শুরু করে, শ্বাস-প্রশ্বাসের সমস্যা শুরু হয় পাশাপাশি কিডনিও বিকল হয়ে পড়ে। এমন কি বিছানা থেকে নড়াচড়া করাও দুষ্কর হয়ে পড়ে আমার’।
তবে অস্ত্রোপচারের পর ভালো আছেন অমিতা। আগে নিজের পা দেখতে পারতেন না তিনি তাই হাঁটতে ভয় পেতেন। এখন সেই সমস্যা নেই নিজের পায়ে ভর দিয়ে হেঁটে চলে বেড়াচ্ছেন অমিতা। তবে অমিতার অস্ত্রোপচারের জন্য বিশেষ ব্যবস্থা নিয়েছিলেন চিকিৎসকরা। বড় করে তৈরি করা হয়েছিল অপারেশন টেবিল। বাড়ি থেকে অমিতাকে হাসপাতাল নিয়ে যাওয়ার জন্য পুনে থেকে আনা হয়েছিল বিশেষ এক অ্যাম্বুলেন্স। ১২ জনের সাহায্যে বাড়ি থেকে নিয়ে আসা হয় অমিতাকে। মাত্র ৩৫ মিনিটের চিকিৎসায় ডাক্তারা যেন অমিতার আবার নতুন জীবন ফিরিয়ে দিলো।