স্টাফ রিপোর্টার ॥ সারাদেশে নতুন নিয়মে অনুষ্ঠিত হলো বেসরকারী শিক্ষক নিবন্ধন পরীক্ষা। শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন বেসরকারী শিক্ষক নিবন্ধন ও প্রত্যয়ন কর্তৃপক্ষের (এনটিআরসিএ) অধীনে অনুষ্ঠিত এবারের পরীক্ষায় অংশ নিয়েছেন পাঁচ লাখ ৩২ হাজার প্রার্থী। শুক্রবার সকাল ১০টা থেকে ১১টা স্কুল পর্যায়ের পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। বেলা তিনটা থেকে চারটা পর্যন্ত অনুষ্ঠিত হয়েছে কলেজ পর্যায়ের পরীক্ষা। দুটি পরীক্ষাতেই এমসিকিউ পদ্ধতিতে আবশ্যিক বিষয়ের এক ঘণ্টা করে পরীক্ষায় মুখোমুখী হন প্রার্থীরা।
শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা শুক্রবার সকাল পৌনে ১০টায় ঢাকা টিচার্স ট্রেনিং ও ঢাকা কলেজ কেন্দ্র পরিদর্শন করেছেন। বেসরকারী শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শিক্ষকতা করার উপযুক্ততা যাচাইয়ের জন্য এটি হচ্ছে ১২তম শিক্ষক নিবন্ধন পরীক্ষা। এবার স্কুল পর্যায়ে পরীক্ষার্থীর সংখ্যা ছিল তিন লাখ ৫২ হাজার ১৩ এবং কলেজ পর্যায়ে এক লাখ ৮০ হাজার ৫০৯ জন। মোট পাঁচ লাখ ৩২ হাজার ৫২২ পরীক্ষার্থী অংশগ্রহণ করেছেন বলে জানান এনটিআরসি-এর ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান ফাতেমা বেগম। এর আগে স্কুল এবং কলেজ উভয় পর্যায়ে দুটি পরীক্ষা একসঙ্গে টানা চার ঘণ্টা ধরে (এমসিকিউ পদ্ধতিতে আবশ্যিক বিষয়ের পরীক্ষার এক ঘণ্টা এবং বর্ণনামূলক পদ্ধতিতে বিষয়ভিত্তিক লিখিত পরীক্ষা তিন ঘণ্টা) বিরতিহীনভাবে গ্রহণ করা হতো। এবারই প্রথম বিসিএসের আদলে প্রিলিমিনারি ও লিখিত পরীক্ষা পৃথক দিনে নেয়া হচ্ছে। ১০০ নম্বরের প্রিলিমিনারিতে এমসিকিউ পরীক্ষায় উত্তীর্ণরাই লিখিত পরীক্ষায় অংশ নিতে পারবেন। স্বল্প সময়ের মধ্যে প্রিলিমিনারি পরীক্ষার ফল ঘোষণা করা হবে বলে জানিয়েছে এনটিআরসিএ। শুক্রবার অনুষ্ঠিত প্রিলিমিনারিতে উত্তীর্ণ প্রার্থীরা দ্বিতীয় ধাপে অনলাইনে পূরণ করা আবেদনপত্রের প্রিন্ট কপির সঙ্গে শিক্ষাগত যোগ্যতার সনদপত্রসহ অন্যান্য কাগজপত্র পাঠাবেন। আবেদনগুলো যাচাই-বাছাইয়ের পর যোগ্য প্রার্থীদের তিন ঘণ্টার লিখিত পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে। লিখিত পরীক্ষায় উত্তীর্ণ প্রার্থীদের নিবন্ধন সনদ দেবে এনটিআরসিএ।
এনটিআরসিএ জানিয়েছে, নতুন নিয়মে অনুষ্ঠিত হলেও দেশের কোথাও কোন সমস্যা হয়নি প্রার্থীদের। সারাদেশেই শান্তিপূর্ণভাবে পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়েছে। তবে একই প্রার্থী স্কুল ও কলেজের পরীক্ষা দিলেও তাদের কেন্দ্র আলাদা আলাদা স্থানে নির্ধারণ করা নিয়ে অসন্তোষের খবর পাওয়া গেছে। একজন প্রার্থীকে সকালে শহরের এক কেন্দ্রে পরীক্ষা দিয়ে বিকেলে অন্যস্থানে পরীক্ষা দিতে যেতে হয়েছে। অথচ কর্তৃপক্ষ চাইলেই একই কেন্দ্রে পরীক্ষা গ্রহণ করতে পারত।
গেজেট না প্রকাশের অভিযোগ শিক্ষক সমিতির ॥ দ্বিতীয় শ্রেণীর মর্যাদা দিয়ে মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ৪০০ শিক্ষকের গেজেট প্রকাশিত না হওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন শিক্ষক নেতারা। এই শিক্ষকের গেজেট দ্রুত প্রকাশের সঙ্গে সঙ্গে ক্ষতিগ্রস্ত শিক্ষককে ক্ষতিপূরণ দেয়ার দাবি জানিয়েছেন তারা। শুক্রবার জাতীয় প্রেসক্লাবের হলরুমে বাংলাদেশ সরকারী মাধ্যমিক সহকারী শিক্ষক সমিতি আয়োজিত আলোচনা ও মতবিনিময় সভায় গেজেট প্রকাশের দাবি জানানো হয়। সমিতির সদস্য সচিব মোহাম্মদ মোখলেছুর রহমান চৌধুরী বলেন, ২০১৪ সালের ২১ আগস্ট ৮ হাজার ২৪৬ জন সহকারী শিক্ষকের নামে দ্বিতীয় শ্রেণীর গেজেট প্রকাশ থেকে। ৪০০ জন শিক্ষকের নাম বাদ পড়েছে। এতে করে তারা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন।
এ সময় তিনি গেজেট প্রকাশ থেকে বাদ পড়াদের নতুন করে গেজেটে অন্তর্ভুক্তির দাবি এবং ক্ষতিগ্রস্ত শিক্ষকদের ক্ষতিপূরণ দেয়ার আহ্বান জানান। আলোচনা সভায় বলা হয়, মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে ২০০০ সহকারী শিক্ষকের পদ খালি আছে। এগুলোও দ্রুত পূরণ করতে হবে। সংগঠনের নেতা মোফাজ্জেল হোসেনসহ গেজেট থেকে বাদ পড়া শিক্ষকদের অনেকেই উপস্থিত ছিলেন।
মতবিনিময় ও আলোচনা সভায় চারটি দাবি উত্থাপন করা হয়। দাবিগুলো হচ্ছে- সরকারী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষকদের প্রথম শ্রেণী গেজেটেড পদমর্যদা প্রদান, সহকারী প্রধান শিক্ষক/প্রধান শিক্ষিকা, সহকারী জেলা শিক্ষা অফিসার, সহকারী পরিদর্শকের ৪০০ শূন্যপদে পদোন্নতি, দ্বিতীয় শ্রেণী গেজেটের প্রজ্ঞাপনে বাদ পড়া ৪০০ শিক্ষকের নাম গেজেট অন্তর্ভুক্তি এবং বকেয়া টাইম স্কেল/সিলেকশন গ্রেড প্রদান।