রাকিব খান ঃ সাম্প্রতিক সময়ে দফায় দফায় ভূমিকম্পে চরম আতঙ্কে দিন কাটছে ফেনীর ঝুঁকিপূর্ণ অর্ধ শতাধিক প্রাথমিক বিদ্যালয়ের হাজার হাজার শিক্ষার্থী, অভিভাবক এবং শিক্ষকের। এতে কমছে এসব বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীর সংখ্যাও।
এদিকে সঙ্কিত স্থানীয় প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা বলছেন, ঝুঁকিপূর্ণ বিদ্যালয় সংস্কারে তারা তাকিয়ে আছেন মন্ত্রণালয়ের দিকে।
১৯৪৯ সালে প্রতিষ্ঠিত ফেনীর সদর উপজেলার ধর্মপুর ইউনিয়নের উত্তর ধর্মপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মূল ভবনটি পরিত্যক্ত হয় আশির দশকে। ’৯৪ সাল থেকে স্কুলের ক্লাস চলছে পাশের একটি নতুন ঘূর্ণিঝড় আশ্রয় কেন্দ্রে। সেটির অবস্থাও এখন বেহাল। বিদ্যালয়টি সাড়ে তিনশ’ শিক্ষার্থীর সংখ্যা কমে এসেছে এখন আড়াইশ’তে।
এ জেলার প্রাথমিক শিক্ষা বিভাগের হিসাব মতে, এর চেয়ে কমবেশি ঝুঁকিপূর্ণ ৫৫টি বিদ্যালয়ের এমন বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীর সংখ্যা ১০ হাজারেরও বেশি। আর উপজেলা- ভিত্তিক এমন ঝুঁকির তালিকায় বিদ্যালয়ের সংখ্যা ফেনীতে ১৫টি, দাগন ভুইয়া এগারো, সোনাগাজী ৭, ছাগল নাইয়া ৭, পশুরাম ৬ এবং ফুলগাজীতে ৮টি। সম্প্রতি ভূমিকম্পের প্রবণতা বাড়ায় এসব বিদ্যালয়ের শিক্ষক শিক্ষার্থীসহ ধসে পড়ার আতঙ্কে দিন কাটছে সবার।
শিক্ষার্থীরা বলে, যখন ভূমিকম্প হয় তখন আমরা দৌড়ে মাঠে চলে যাই এবং আমাদের শিক্ষকরাও মাঠে চলে যান। ভূমিকম্পের ভয়ে আমরা আর বিদ্যালয়ের ভিতরে আসতে চাই না। আমরা যখন ক্লাস করি তখন আমাদের অনেক ভয় লাগে Ñকখন বিদ্যালয়টা ভেঙে পড়ে। স্কুলে না আসলে আমাদের পড়া-লেখার ক্ষতি হবে। তাই আমরা বিদ্যালয়ে আসি।
শিক্ষকরা বলেন, অভিভাবকরা বলেন তাদের ছেলেমেয়েরা ভূমিকম্পের কারণে বিদ্যালয়ে আসতে ভয় পায় তাই তারা বিদ্যালয়ে আসে না।
অভিভাবকরা বলেন, এ স্কুলের একটি পিলারও ভাল নেই। এটি যেকোন সময়ে ভেঙে পড়তে পারে। তাই আমার বচ্চাকে বিদ্যালয়ে পাঠাই না।
ফেনী সহকারী জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মোহাম্মদ সফিউল আলম বলেন, জরাজীর্ণ বিদ্যালয়গুলো নিয়ে আমরা একাধিক বার আমাদের মন্ত্রণালয়কে অবহিত করেছি। আমরা এখন মন্ত্রণালয়ের দিকে তাকিয়ে আছি। মন্ত্রণালয় নিশ্চয়ই এর দ্রুত ব্যবস্থা নেবে।
ফেনী জেলা প্রাথমিক শিক্ষা বিভাগের হিসেবমেতে সরকারি বিদ্যালয়ের প্রায় সোয়া লাখ শিক্ষার্থীর মধ্যে ১৩ শতাংশেরও বেশি শিক্ষার্থী রয়েছে চরম ঝুঁকির মধ্যে।
#