প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (ডুয়েট) আর্কিটেকচার বিভাগে সম্প্রতি প্রভাষক হিসেবে নিয়োগপ্রাপ্ত নিশাদ জাহান ইতু মিয়াজির টিকটকে বিভিন্ন আপত্তিকর ভিডিয়ো নিয়ে বিক্ষোভে নেমেছে শিক্ষার্থীরা।
গতকাল বৃহস্পতিবার শিক্ষার্থীরা ওই শিক্ষিকার নিয়োগ বাতিলের দাবি তুলে ক্যাম্পাসে মানববন্ধন ও বিভিন্ন শ্লোগান দিয়ে আন্দোলন করেছেন। এ ধরনের ভিডিয়ো বানানোর জন্য ইতু মিয়াজি বেশ আগে থেকেই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আলোচিত-সমালোচিত বলে জানা যায়।
শিক্ষার্থীরা বলছেন, টিকটকে ভিডিয়ো নিয়ে তাদের কোনো আপত্তি নেই। আমরা এমন শিক্ষক চাই না, যার রুচিবোধ, আচার-আচরণ সমাজের প্রচলিত শিক্ষক, শিক্ষাব্যবস্থা কিংবা সামাজিক মূল্যবোধের সঙ্গে সাংঘর্ষিক।
আরো পড়ুন: লাইব্রেরি শুধু সরকারি চাকরির প্রস্তুতির জায়গা নয়: শিক্ষামন্ত্রী
একজন শিক্ষক শুধু একাডেমিক্যালি কিছু শেখাবেন বিষয়টা এমন নয়। তার সামগ্রিক সবকিছু শিক্ষার্থীরা ফলো করে, তার কাছে থেকে পড়াশোনার বাইরেও নানান কিছু শিখে। ইতু মিয়াজী কুরুচীকর ভিডিয়ো করেন বলেই তারা তাকে শিক্ষিকা হিসেবে মেনে নিতে পারছেন না।
আন্দোলনের সময় এক শিক্ষার্থী বলেন, শিক্ষকের কাছ থেকে আমরা সবকিছু শিখি। তারা যদি এ ধরনের কনটেন্ট আমাদের দেখায় তাহলে আমরা কি শিখবো।
ইতু মিয়াজি বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় (বুয়েট) থেকে আর্কিটেকচার বিভাগ থেকে পাস করেছেন। চলতি মাসের ১৯ তারিখে ইতু মিয়াজিকে শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ দেয় ডুয়েট কর্তৃপক্ষ। এর কিছুদিন পর ইতু মিয়াজির আপত্তিকর ভিডিয়োগুলো নিয়ে ক্যাম্পাসে এবং ফেসবুকে তুমুল আলোচনা-সমালোচনার ঝড় ওঠে।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তার একাধিক ভিডিয়ো পাওয়া গেছে। যার মধ্যে একটি ভিডিয়োতে ইতু মিয়াজিকে বলতে শোনা যায়, ‘জন্ম থেকে যখন আমি প্রথম চোখ খুলি তখন আমার স্বপ্ন ছিলো বড় হয়ে আমি টিকটকার হবো। আরেকটি ভিডিয়োতে তিনি বলেন, যারা ছাগল, গরু চোর, ওরা টিকটক করে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের একাধিক শিক্ষক জানান, টিকটিক ভিডিয়ো তৈরি করা নিয়ে আমাদেরও কোনো আপত্তি নেই। আপত্তি করছি তার কুরুচীপূর্ণ কনটেন্ট নিয়ে। কিন্তু যেহেতু শিক্ষকতা একটা মহান পেশা, তিনি শিক্ষার্থীদের নীতি নৈতিকতার শিক্ষা দেবেন, সেখানে এ ধরনের একজন ব্যক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক হওয়া আসলেই বেমানান।
এ বিষয়ে আর্কিটেকচার বিভাগের প্রধান অধ্যাপক ড. বায়েজিদ ইসমাইল চৌধুরী গণমাধ্যমকে বলেন, ইতোমধ্যে ওই শিক্ষিকাকে পরীক্ষার দায়িত্ব পালন থেকে বিরত রাখার পাশাপাশি বুধবার থেকে তাকে এক সপ্তাহের বাধ্যতামূলক ছুটিতে পাঠানো হয়েছে সকল প্রক্রিয়া মেনেই স্বচ্ছতার ভিত্তিতে তাকে (ইতু মিয়াজী) নিয়োগ দেয়া হয়েছে। এখন শিক্ষার্থীরা তাকে শিক্ষক হিসেবে মেনে নিতে আপত্তি জানিয়েছেন। বিষয়টি তদন্ত করতে শিগগির একটি কমিটি গঠন করা হবে।