ডেস্ক,২৩ মার্চ ২০২৩: বগুড়ায় অভিভাবককে পা ধরতে বাধ্য করা জেলা ও দায়রা জজ আদালত-৩ এর বিচারক বেগম রুবাইয়া ইয়াসমিনের বিচারিক ক্ষমতা কেড়ে নেওয়া হয়েছে। বৃহস্পতিবার (২৩ মার্চ) সুপ্রিম কোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেল মো. গোলাম রব্বানী বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
গোলাম রব্বানী বলেন, প্রধান বিচারপতির নির্দেশক্রমে বেগম রুবাইয়া ইয়াসমিনকে প্রত্যাহার করে আইন মন্ত্রণালয়ে সংযুক্ত করা হয়েছে।
এ বিষয়ে সুপ্রিম কোর্টের ডেপুটি রেজিস্ট্রার (প্রশাসন ও বিচার) মো. মিজানুর রহমানের স্বাক্ষরে একটি সার্কুলার জারি করা হয়েছে।
সোস্যাল মিডিয়াসহ কয়েকটি গণমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, বগুড়া সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থীর মাকে বিচারক বেগম রুবাইয়া ইয়াসমিন তার পায়ে ধরে ক্ষমা চাইতে বাধ্য করার অভিযোগে স্কুলের সামনের রাস্তায় জড়ো হয়ে বিক্ষোভ শুরু করেন শিক্ষার্থীরা।
শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা জানান, বিদ্যালয়ের নিয়ম অনুযায়ী প্রত্যেক শিক্ষার্থী পর্যায়ক্রমে শ্রেণিকক্ষ পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন করে থাকেন। গত সোমবার এক শিক্ষার্থীর শ্রেণিকক্ষ ঝাড়ু দেয়ার কথা থাকলেও নিজেকে বিচারকের মেয়ে পরিচয় দিয়ে সে ঝাড়ু দিতে অস্বীকৃতি জানায়। এ নিয়ে অপর সহপাঠীদের সঙ্গে তার বাগবিতণ্ডা হয়।
আরও পড়ুন:বগুড়া সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে সাধারণ ছুটি
শিক্ষার্থীরা বলে, ঘটনার পর ওই মেয়ে আমাদের নিয়ে ফেসবুকে কটূক্তি করে পোস্ট দেয়। নিজে বিচারকের মেয়ে বলে সে ঝাড়ু দিতে পারবে না, আর আমরা নাকি বস্তির মেয়ে। এই ধরনের কথা সহপাঠীদের কী করে বলা যায়? ওই পোস্টের বিপরীতে পাল্টা উত্তর দেয় তার চার সহপাঠী। পরে বিচারক রুবাইয়া ইয়াসমিন বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক রাবেয়া খাতুনের মাধ্যমে ওই চার শিক্ষার্থীর অভিভাবককে বিদ্যালয়ে ডেকে পাঠান।
অভিভাবকরা জানান, মঙ্গলবার বেলা ১১টার দিকে প্রধান শিক্ষক অভিভাবকদের ডেকে বিদ্যালয়ে আনেন। পরে প্রধান শিক্ষকের উপস্থিতিতে চার শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা করে জেলে পাঠানোর হুমকি দিয়েছিলেন বিচারক। এ সময় বিচারক অভিভাবকদের পা ধরে ক্ষমা চাইতেও বাধ্য করেন বলে অভিযোগ করেন তারা।
তবে এবিষয়ে প্রধান শিক্ষক রাবেয়া খাতুনের জানান, দুই অভিভাবক নিজে থেকে পা ধরে ক্ষমা চান। তাদের কেউ বাধ্য করেননি।
পরে প্রধান শিক্ষকের উপস্থিতিতে অভিভাবকদের ডেকে পা ধরানোর ঘটনায় ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠে শিক্ষার্থীরা। তারা ক্লাস-পরীক্ষা বাদ দিয়ে সড়ক অবরোধ, মানববন্ধনসহ নানা প্রতিবাদ কর্মসূচি পালন করে। পরে জেলা প্রশাসকের অনুরোধে ও বিচারকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের আশ্বাসে কর্মসূচি প্রত্যাহার করে নেয় শিক্ষার্থীরা।