সংখ্যালঘুদের সুরক্ষায় বাংলাদেশ সরকারের আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী মোতায়েনসহ বাড়তি পদক্ষেপ নেওয়ার পরও ২০২১ সালে বাংলাদেশে বেশ কিছু হামলা, সংঘাতের ঘটনা ঘটেছে।
হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিষ্টান এবং বিভিন্ন জাতিগোষ্ঠীসহ ধর্মীয় সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের লোকেরা বারবার দাবি করছেন, ভূমি-বিরোধের জেরে তাদের বলপূর্বক পূর্বপুরুষের ভিটেমাটি থেকে উচ্ছেদ ও জমি কেড়ে নেওয়া প্রতিরোধে সরকারের ভূমিকা কার্যকর ছিল না।
বৃহস্পতিবার মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তর থেকে প্রকাশিত ২০২১ সালের আন্তর্জাতিক ধর্মীয় স্বাধীনতা প্রতিবেদনে বাংলাদেশ পরিস্থিতি নিয়ে ১৬ পৃষ্ঠার একটি পর্যালোচনায় এসব বিষয় উঠে এসেছে। প্রতিবেদনটি দুই হাজারেরও বেশি পৃষ্ঠার।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সংবিধানে ইসলাম রাষ্ট্রধর্ম হলেও বাংলাদেশ ধর্মনিরপেক্ষতার নীতি সমুন্নত রেখেছে। গত বছরের ১৩ থেকে ২৪ অক্টোবর সহিংসতায় মুসলমান, হিন্দুসহ বেশ কয়েকজন প্রাণ হারান। ওই হামলায় নিন্দা জানানোর পাশাপাশি হিন্দু সম্প্রদায়ের প্রতি সহায়তা সহযোগিতা, অতিরিক্ত নিরাপত্তার ব্যবস্থা এবং ২০ হাজারের বেশি লোকের বিরুদ্ধে ফৌজদারি মামলা করে সরকার।
এতে উল্লেখ করা হয়, গত বছর ধর্মীয় ইস্যুতে তিনটি ‘হাইপ্রোফাইল’ মামলার রায় হয়। এর একটি একজন প্রকাশককে হত্যার দায়ে ৮ জঙ্গির ফাঁসির আদেশ। বাকি দুটিতে ৫ ও ১৪ জঙ্গির ফাঁসির আদেশের হয়।
তা ছাড়াও প্রতিবেদনে বছরজুড়ে সংখ্যালঘুদের অধিকার ক্ষুণ্ন হওয়া, গুজব ছড়িয়ে হামলা, ধর্মীয় কারণে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে অপপ্রচারের তথ্যও তুলে ধরেছে যুক্তরাষ্ট্র। বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিষ্টান ঐক্য পরিষদকে উদ্ধৃত করে প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বছরজুড়ে সংখ্যালঘুদের বিরুদ্ধে সাম্প্রদায়িক সহিংসতা অব্যাহত ছিল।
প্রতিবেদন প্রকাশকালে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন বলেন, কোনো সরকার তার নাগরিকদের অধিকার ও সুরক্ষা না দিলে সেখানে অস্থিরতা, অস্থিতিশীলতা দেখা দেয়। বিশ্বের অনেক দেশের সরকার তাদের নাগরিকদের ধর্মীয় স্বাধীনতা রক্ষা করতে পারছে না।
তিনি রোহিঙ্গাদের ওপর মিয়ানমার বাহিনীর ও জিনজিয়াংয়ে উইঘুরদের ওপর চীন কর্তৃপক্ষের গণহত্যার প্রসঙ্গ টানেন। এবারের প্রতিবেদনে বেশ কিছু দেশের পরিস্থিতির উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি হয়েছে। এ জন্য সেসব দেশের সরকার, নাগরিক সমাজ এবং দেশের জনগণকে ধন্যবাদ জানান মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী। তিনি বলেন, অনেক ক্ষেত্রে যে আমাদের অনেক কাজ করার বাকি, সেটিও প্রতিবেদনে দুর্ভাগ্যজনকভাবে উঠে এসেছে।