নিজস্ব প্রতিবেদক | ২১ সেপ্টেম্বর, ২০২১
ডিগ্রি স্তরে কর্মরত দেশের ৮৪১ জন তৃতীয় শিক্ষকের এমপিওভুক্তির আদেশ দিয়ে গতকাল সোমবার প্রজ্ঞাপন জারি করেছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। তবে, এনটিআরসিএ কর্তৃক নিয়োগের সুপারিশকৃতরা এই তালিকায় নেই বলে জানা গেছে।
আরো খবরঃ শিক্ষার্থীরা মানলেও অভিভাবকরা স্বাস্থ্যবিধি মানছেন না : শিক্ষামন্ত্রী
শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের উপসচিব কামরুল হাসান স্বাক্ষরিত প্রজ্ঞাপনে তিন শর্তে এসব শিক্ষকের এমপিওভুক্তির আদেশ জারি করা হয়। এগুলো হলো- সংশ্নিষ্ট শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ডিগ্রি স্তরটি এমপিওভুক্ত হতে হবে; এমপিও নীতিমালা অনুযায়ী নিয়োগকালে যোগ্যতা ও অভিজ্ঞতা থাকতে হবে এবং বিধি মোতাবেক নিয়োগপ্রাপ্ত হতে হবে।
২০১৬ খ্রিষ্টাব্দের ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে নিয়োগপ্রাপ্তদের এমপিওভুক্ত করা হবে এবং তৃতীয় শিক্ষক নিয়োগ করা হয়নি এমন কোনো প্রতিষ্ঠানে নতুন করে নিয়োগ করা যাবে না।
জানা গেছে, এই ৮৪১ শিক্ষককে এমপিওভুক্ত করা হলে বছরে ২৫ কোটির বেশি টাকা খরচ হবে। তবে এক দশকের বেশি সময় কার্যত বিনা বেতনে চাকরি করা এসব শিক্ষকের মানবেতর জীবনের অবসান হবে।
শিক্ষা মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, গত ২ আগস্ট অর্থ মন্ত্রণালয়ের কাছে এ সংক্রান্ত একটি প্রস্তাব পাঠানো হয়। তাতে বলা হয়, বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের (স্কুল-কলেজ) জনবল কাঠামো ও এমপিও নীতিমালা অনুযায়ী এমপিওভুক্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ডিগ্রি স্তরের প্রতিটি ঐচ্ছিক বিষয়ে দু’জন শিক্ষকের নিয়োগসহ এমপিওভুক্তির বিধান রয়েছে। অপরদিকে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান অধিভুক্তি সংক্রান্ত রেগুলেশন অনুযায়ী ডিগ্রি স্তরে প্রতি ঐচ্ছিক বিষয়ে তিনজন শিক্ষক নিয়োগের বিধান আছে। এ বিধান থাকলেও শুধু প্রথম নিয়োগপ্রাপ্ত দু’জন শিক্ষককে এমপিওভুক্ত করা হয়; তৃতীয় শিক্ষককে এমপিওভুক্ত করা হয় না।
সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের আদেশ অনুযায়ী, ২০১৮ খ্রিষ্টাব্দের জানুয়ারিতে ডিগ্রি স্তরের ১৫৩ তৃতীয় শিক্ষককে এমপিওভুক্ত করা হয়। একই বছর আগস্টে ২০১০ খ্রিষ্টাব্দ পর্যন্ত বিধি মোতাবেক নিয়োগপ্রাপ্ত তৃতীয় শিক্ষকদের এমপিওভুক্তির আদেশ জারি করে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। এর পরিপ্রেক্ষিতে অধিকাংশ তৃতীয় শিক্ষক এমপিওভুক্ত হয়েছেন। অপরদিকে ২০১০ খ্রিষ্টাব্দের পর বিভিন্ন ডিগ্রি কলেজে নিয়োগপ্রাপ্ত ৮৪১ তৃতীয় শিক্ষক রয়েছেন। তারা এখন পর্যন্ত এমপিওভুক্ত হতে পারেননি। এ শিক্ষকরা অর্থ বিভাগের জনবল কাঠামোভুক্ত নন। এ কারণে তৃতীয় শিক্ষকদের যোগ্যতা ও বিধি মোতাবেক নিয়োগপ্রাপ্ত ও কর্মরত থাকা সাপেক্ষে এমপিওভুক্তিকরণে সম্মতির অনুরোধ জানিয়েছিল শিক্ষা মন্ত্রণালয়।
জানতে চাইলে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের একজন অতিরিক্ত সচিব বলেন, তৃতীয় শিক্ষকদের এমপিওভুক্ত করতে অর্থ মন্ত্রণালয়ের সম্মতির জন্য আগে চিঠি দেওয়া হয়েছিল। অর্থ মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন পাওয়ায় এমপিওভুক্ত করা হলো। গুণগত শিক্ষা নিশ্চিত করতে তৃতীয় শিক্ষকদের এমপিওভুক্তির সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
তৃতীয় শিক্ষকরা নিয়মিত পাঠদান করেও সরকারি সুবিধা পান না। অনেক কলেজে নামমাত্র বেতন দেয়। ফলে তারা মানবেতর জীবন যাপন করছিলেন। দীর্ঘদিন ধরেই এ শিক্ষকরা আন্দোলন করছেন।
সংশ্নিষ্ট সূত্র জানায়, ১৯৯৮ খ্রিষ্টাব্দ থেকে ডিগ্রি পর্যায়ের তৃতীয় শিক্ষক নিয়োগ দেওয়া শুরু হয়। ২০১১ খ্রিষ্টাব্দ পর্যন্ত এ শিক্ষকদের নিয়মিত এমপিওভুক্তি দেওয়া হতো। এর পর থেকে তাদের এমপিওভুক্তি বন্ধ হয়ে যায়।