বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ব্যয় নির্ধারণ করবে সরকার

শিক্ষক বাতায়ন

ডেস্ক,১৮ ডিসেম্বর:
সব বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শিক্ষা ব্যয় নির্ধারণ করবে সরকার। সেজন্য ‘এমপিওভুক্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের আয় ও ব্যয় সংক্রান্ত নীতিমালা ২০২০’ প্রণয়ন করা হয়েছে। আগামী বছর থেকে ওই নীতিমালা বাস্তবায়ন করা হবে।

মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা যায়, যেসব খাতে শিক্ষা ব্যয় যা নির্ধারণ করে দেয়া হবে সেগুলো হলো স্কুলে মাসিক বেতন ও ভর্তি ফি, ষান্মাসিক ও বার্ষিক পরীক্ষাসহ অন্যান্য ফি, রেজিস্ট্রেশন ফি, একাদশ ও দ্বাদশ শ্রেণির ব্যয় এবং কলেজের আনুষঙ্গিক ব্যয়।

সংশ্লিষ্ট সূত্র মতে, নীতিমালা অনুযায়ী ঢাকা মহানগর ও তার আশেপাশের এলাকার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে প্রথম থেকে নবম শ্রেণির মাসিক বেতন ২৫-৪৫ টাকা, জেলা সদর ও পৌর এলাকায় ২০-৪০ টাকা, উপজেলায় ১৫-৩৫ টাকা এবং সুবিধাবঞ্চিত এলাকায় ১২-৩০ টাকা নির্ধারিত থাকবে। আর ভর্তি আবেদন ফি পর্যায়ক্রমে ৭৫-২০০ টাকা নির্ধারণ করা হবে। তাছাড়া ভর্তি ও পূর্ণ ভর্তি ফি ৩০০ থেকে এক হাজার টাকা ধার্য থাকবে।

আর প্রাথমিক স্তরে ষাণ্মাসিক ও বার্ষিক পরীক্ষার ফি নেয়া যাবে ৩০০- ৫০০ টাকা এবং মাধ্যমিক স্তরের জন্য ৬০০-৮০০ টাকা। তাছাড়া ধর্মীয় অনুষ্ঠান ফি ৫০ টাকা, ম্যাগাজিন ফি ১০০, মুদ্রণ বাবদ ১৫০, সাংস্কৃতি অনুষ্ঠান, বিতর্ক ও বিভিন্ন দিবস উদযাপনে ৫০ থেকে ৭৫ টাকা, কম্পিউটার চার্জ ২৫ থেকে ৫০ টাকা, কৃষি ও বাগান ফি (যদি থাকে) ৩০ টাকা, কমন রুম ফি ২০ থেকে ৩৫ টাকা, জাতীয় শিক্ষা সপ্তাহ ফি ৫ টাকা, বিএনসিসি ফি ৫ টাকা, রেডক্রিসেন্ট ফি ২০ টাকা, মসজিদ ও উপাসনালয়ের জন্য ২৫ থেকে ৫০ টাকা ধার্য করা থাকবে।

সূত্র জানায়, অষ্টম ও নবম শ্রেণির রেজিস্ট্রেশন ফি, পরীক্ষার ফি, ব্যবহারিক পত্রের ফি, একাডেমিক ট্রান্সক্রিপ্ট ফি, মূল সনদ ফি শিক্ষা বোর্ড থেকে নির্ধারণ করে দেয়া হবে। তাছাড়া স্কাউট ফি, ক্রীড়া, কল্যাণ, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি ফিও নির্ধারণ করে দেবে বোর্ড। উন্নয়ন ফি ভর্তি নীতিমালা অনুযায়ী আদায় করা যাবে।

আর কলেজ পর্যায়ে একাদশ ও দ্বাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থীদের মাসিক বেতন নির্ধারণ করা হবে ৮০-১৫০ টাকা, অনলাইন আবেদন, রেজিস্ট্রেশন ফি, উন্নয়ন ফি ভর্তি নীতিমালা অনুযায়ী নির্ধারণ করা হবে। প্রতি বিষয়ে অভ্যন্তরীণ ফি ৫০ থেকে ৪০ টাকা আদায় করা হবে। তবে প্রতি বিষয়ে, ব্যবহারিক পরীক্ষার ফি, একাডেমিক ট্রান্সক্রিপ্ট, সনদ, পরীক্ষা কেন্দ্র, রোভার স্কাউট, ক্রীড়া, রেডক্রিসেন্ট, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি ফি, বিএনসিসি ফি ভর্তি নীতিমালা অনুযায়ী পরিশোধ করতে হবে।

শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, একাদশ ও দ্বাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থীদের সেশন চার্জসহ ভর্তি ফি নির্ধারণ করা হবে এক হাজার থেকে ৫ হাজার টাকা। তার বাইরে কল্যাণ ফি বাবদ ২০ টাকা, পরিচয়পত্র ফি ৩০ টাকা, লাইব্রেরি ফি ২৫ টাকা, ল্যাবরেটরি/বিজ্ঞানাগার ফি ১০০ টাকা, আইসিটি ফি ২০ টাকা, ম্যাগাজিন খাতে ৩০ টাকা, ধর্মীয় অনুষ্ঠানে ব্যয় ৩০ টাকা, সাংস্কৃতিক, বির্তক ও বিভিন্ন দিবস উপলক্ষে ৫০ থেকে ১০০ টাকা নির্ধারণ করা হবে।

মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদফতরের (মাউশি) মহাপরিচালক অধ্যাপক ড. সৈয়দ মো. গোলাম ফারুক বলেন, বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে অতিরিক্ত ফি আদায় এবং আদায়কৃত অর্থ নানানভাবে লুটপাটের অভিযোগ আসছিল। তাছাড়া বেশিরভাগ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানেই অর্থ ব্যয়ে স্বচ্ছতা নেই। ফলে নীতিমালা প্রণয়নের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। খসড়া নীতিমালাটি এখন চূড়ান্ত পর্যায়ে। আগামী বছর থেকে ওই নীতিমালা কার্যকর হতে পারে।

Image Not Found

Leave a Reply

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।