অভিযোগের সত্যতা প্রমান
নেত্রকনা প্রতিনিধি: নেত্রকোনার পূর্বধলার রাজিবপুর রেজি. প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারি শিক্ষক হাবিবুর রহমান ভূয়া কাগজপত্র দাখিল করে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক পদে পদোন্নতি পাওয়ার জালিয়াতি অভিযোগ পাওয়া গেছে।
মহাপরিচালকের পক্ষে উপ-পরিচালক রহমত আলী খানের নির্দেশে পূর্বধলা উপজেলা শিক্ষা অফিসার ও নেত্রকোনা জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসারের তদন্তে জালিয়াতির ঘটনাটি বেড়িয়ে এসেছে। অভিযুক্ত শিক্ষক হাবিবুর রহমান বর্তমানে উপজেলার ইচুলিয়া মডলে সরকারি প্রাথমকি বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষক হিসবে কর্মরত আছেন।
তদন্ত রির্পোটে জানাযায়, হাবিবুর রহমানের পূর্বের র্কমস্থল রাজিবপুর রেজি. প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক হাফিজুল হককে গত ২৪ জুলাই ২০০৭ খ্রি: তারিখে বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটি নানা অনিয়মের অভিযোগ এনে বরখাস্ত করেন। পরে তিনি (হাফিজুল হক) বরখাস্তের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা করেন। মামলা চলাকালীন উক্ত বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক হাবিবুর রহমান ২৫ এপ্রিল ২০০৯ খ্রি: তারিখে জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসারের কোন প্রকার অনুমোদন ছাড়াই ভূয়া কাগজপত্র তৈরি করে প্রধান শিক্ষক পদে পদোন্নতি পান।
উপজেলা শিক্ষা কমিটির ২৫ আগস্ট ২০১০ খ্রি: তারিখের সভায় উপজলোর ৪৬টি রেজি. প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের প্রধান শিক্ষক পদে পদোন্নতির সিদ্ধান্ত গৃহীত হলেও রাজিবপুর রেজি. প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক পদের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা থাকায় তার পদোন্নতি উপজেলা শিক্ষা কমিটির অনুমোদন পায়নি।
ওই সভার রেজুেলশন প্রধান শিক্ষকের পদোন্নতির ৪৬ জনের তালিকায় থাকা ২৭ নং ক্রমিকে দুগাছি রেজি. প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক হাবিবুর রহমান সরকারের স্থলে জালিয়াতির মাধ্যমে হাবিবুর রহমান এবং দুগাছির স্থলে রাজিবপুর বসিয়ে ফটোকপি করে জাতীয়করণের তালিকায় প্রধান শিক্ষক হিসেবে অর্ন্তভূক্তি ও স্কলে প্রাপ্তির জন্য উপজেলা শিক্ষা অফিসারের বরাবরে ভূয়া কাগজপত্র দাখিল করনে।
তার দাখিল করা সমুদয় কাগজ তৎকালীন শিক্ষা অফিসার তৌফিকুল ইসলাম (বর্তমানে শেরপুর জেলার নকলা উপজেলায় কর্মরত) সত্যায়িত করে বাধ্যতামূলক প্রাথমিক শিক্ষা বাস্তবায়ন, পরিবীক্ষণ ইউনিট, শিক্ষা ভবন ঢাকায় প্রেরণ করেন। এর প্রেক্ষিতে হাবিবুর রহমানকে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক পদে জাতীয়করণ ও স্কলে প্রদান করা হয়।
এদিকে বহিস্কৃত প্রধান শিক্ষক হাফিজুল হকের বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ মিথ্যা প্রমানিত হওয়ায় উচ্চ আদালত ১৭ জুলাই ২০১৪ খ্রি: তারিখে তাকে স্বপদে বহালের নির্দেশ দিলে ভূয়া পদোন্নতি পাওয়া প্রধান শিক্ষক হাবিবুর রহমানকে তড়িগড়ি করে উপজেলার গোজাখালিকান্দা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও পরে ইচুলিয়া মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষক পদে বদলী করা হয়।
এ ব্যাপারে শিক্ষক হাবিবুর রহমান বলেন, এ ব্যাপারে কোন কাগজ না পাওয়ায় বিষয়টির ব্যাপারে আমি অবগত নই।
উপজেলা শিক্ষা অফিসার ফাতেমা সুলতানা জানান, জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসারের নির্দেশে আমি বিষয়টি তদন্ত করি। অভিযুক্ত শিক্ষক হাবিবুর রহমানকে তার চাকুরী সংক্রান্ত সমুদয় কাগজ পত্রের মূল কপি প্রর্দশনের জন্য মৌখিক ও লিখিত ভাবে বারবার তাগিদ দিলেও তিনি তা দেখাতে র্ব্যথ হয়েছেন। উপজেলা শিক্ষা কমিটির রেজুলেশনের মূল কপিতে প্রধান শিক্ষক পদে পদোন্নতি পাওয়া ৪৬ জন শিক্ষকের তালিকায় কোথাও হাবিবুর রহমানের নাম নেই। তৎকালীন পূর্বধলা উপজেলা শিক্ষা অফিসার তৌফিকুল ইসলামের সাথে যোগাযোগ করলে তিনি হাবিবুর রহমানের পদোন্নতি ও সরকারি স্কলে প্রাপ্তির বিষয়ে কিছুই মনে নেই বলে জানান।
এ ব্যাপারে নেত্রকোনা জেলার প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার রিয়াজ উদ্দিন জানান, বিষয়টি উপজেলা শিক্ষা অফিসারের মাধ্যমে তদন্ত করে জালিয়াতির সত্যতা পাওয়া গেছে। শিক্ষক হাবিবুর রহমানের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য প্রতিবেদন আকারে মহাপরিচালক, বাধ্যতামূলক শিক্ষা বাস্তবায়ন, পরীবিক্ষণ ইউনিট, শিক্ষা ভবন ঢাকা মহোদয়ের বরাবরে প্রেরণ করা হয়েছে।