বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি ডেস্ক : গত বছরের সেপ্টেম্বরে একীভূত হতে বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনের (বিটিআরসি) আনুষ্ঠানিকভাবে আবেদন করে রবি-এয়ারটেল।
এই প্রক্রিয়ার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, একীভূত হওয়ার ঘোষণার ১০ মাস পেরিয়ে গেলেও এ বিষয়ে সরকার কোনো সিদ্ধান্ত দিতে না পারায় দুটি প্রতিষ্ঠানেরই আর্থিক ক্ষতির পরিমাণ বাড়ছে।
একীভূতকরণের ঘোষণা দেওয়ার পর গত টানা দুই প্রান্তিকে রবির মুনাফা কমে গেছে। গত বছরের তৃতীয় (জুলাই-সেপ্টেম্বর) প্রান্তিকে রবির মুনাফা ছিল ১১৩ কোটি ৭০ লাখ টাকা, সেটি চলতি বছরের প্রথম (জানুয়ারি-মার্চ) প্রান্তিকে কমে ৯২ কোটি টাকা হয়েছে। ২০১৪ সালে রবির মোট মুনাফা ছিল ৪৪০ কোটি টাকা, সেটি ২০১৫ সালে কমে হয়েছে ৪০০ কোটি টাকা।
এদিকে রবির চেয়ে এয়ারটেলের বেশি ক্ষতি হচ্ছে বলে মনে করছেন প্রতিষ্ঠানটির কর্মীরা। এয়ারটেলের বিভিন্ন পর্যায়ের একাধিক কর্মকর্তার সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ভবিষ্যৎ নিয়ে অনিশ্চয়তা থাকায় গত ১০ মাসে শতাধিক কর্মী চাকরি ছেড়ে দিয়েছেন। একীভূত হওয়ার আগে গত বছরের আগস্টে এয়ারটেলের স্থায়ী কর্মীর সংখ্যা ছিল ৫২৮, যা এখন কমে ৪০০ হয়েছে।
প্রতি মাসে এয়ারটেলের ক্ষতির পরিমাণ ৭০ থেকে ৮০ কোটি টাকা। এই অর্থ ছাড়া ভারতী এয়ারটেল থেকে এখন নেটওয়ার্ক সম্প্রসারণে নতুন কোনো বিনিয়োগ আসছে না। অন্তর্বর্তীকালীন এ সময়ে বাংলাদেশের কোনো ব্যাংক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠান থেকেও ঋণ নিতে পারছে না প্রতিষ্ঠানটি।
বাংলাদেশ সরকারের ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগ ও বিটিআরসি সূত্রে জানা গেছে, রবি-এয়ারটেলের তরঙ্গ কোন প্রক্রিয়ায় একীভূত হবে ও এর জন্য বাড়তি কত অর্থ নেওয়া হবে, মূলত এই বিষয়ের ওপর আটকে আছে পুরো একীভূতকরণ প্রক্রিয়া। এর সঙ্গে নতুন শেয়ার ইস্যু ও একীভূতকরণের ফি হিসেবে আরও ২০০ কোটি টাকার বেশি যোগ করে মোট ৭০০ কোটি টাকা নেওয়ার প্রস্তাব করা হয়েছে। তবে ৭০০ কোটি টাকার বেশি অর্থ দিয়ে একীভূত হওয়া সম্ভব নয় বলে রবির পক্ষ থেকে সরকারকে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে।
বিটিআরসি চেয়ারম্যান শাহজাহান মাহমুদ বলেন, বিটিআরসি সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিয়ে এই বিষয়ে কাজ করেছে। বিশেষ সভা ডেকে আদালতের নির্ধারিত সময়েই এ-সংক্রান্ত মূল্যায়ন প্রতিবেদন জমা দেওয়া হয়েছে। আশা করছি, খুব শিগগির এ বিষয়ে সরকার সিদ্ধান্ত নেবে।