ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের শিশু ওয়ার্ডে শুয়ে আছে জয়পুরহাটের স্কুলছাত্রীটি। স্কুলপড়ুয়া মেয়েটির জ্ঞান নেই।
মাথাজুড়ে ব্যান্ডেজ, বাঁ চোখে কালো গভীর দাগ। সংজ্ঞাহীন ছাত্রীটির হাত ধরে বসে আছেন মা।
তিন দিনেও জ্ঞান ফেরেনি জয়পুরহাটের কালাইয়ের ১৫ বছরের স্কুলছাত্রীটির। গত শুক্রবার রাতে নিজ বাড়িতে ধারালো অস্ত্রের আঘাতে আহত হয় সে। পরিবারের ধারণা, তাকে ধর্ষণের চেষ্টা করা হয়েছিল। তবে কে বা কারা এই ঘটনার সঙ্গে জড়িত, তা জানে না পরিবার।
ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের শিশু ওয়ার্ডের কর্তব্যরত চিকিৎসক অসিত চন্দ্র সরকার বলেন, স্কুলছাত্রীর মাথায় শক্ত কোনো কিছু দিয়ে আঘাত করা হয়েছে। তার অবস্থা এখনও স্থিতিশীল। তার দ্রুত অস্ত্রোপচার দরকার।
এদিকে আজ সোমবার দুপুর ১২টার দিকে ওই স্কুলছাত্রীকে দেখতে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের শিশু ওয়ার্ডে যান মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান কাজী রিয়াজুল হক। তার খোঁজ-খবর নিয়ে তিনি বলেন, ‘মানবাধিকার সুরক্ষায় আমরা কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্যে পৌঁছাতে পারছি না, ব্যর্থ হচ্ছি। মেয়েটির সঙ্গে যা হয়েছে, নিঃসন্দেহে ন্যাক্কারজনক ঘটনা। এতে তার মানবাধিকার লঙ্ঘন হয়েছে। তদন্তের নামে কালক্ষেপণ করা চলবে না। অপরাধীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিতে হবে। ‘
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা কালাই থানার পরিদর্শক (তদন্ত) বিশ্বজিৎ বর্মণ বলেন, এখনো কাউকে গ্রেপ্তার করা যায়নি। তবে চেষ্টা চলছে।
পরিবারের সদস্যরা জানিয়েছেন, দুই কক্ষের বাড়ির একটিতে রাতে একাই ঘুমাত মেয়েটি। পাশের কক্ষে থাকতেন মা-বাবা ও ছোট দুই ভাই। শুক্রবার ভোরে ওই ছাত্রীর মা ঘুম থেকে উঠে মেয়ের ঘরে যান। মেয়েকে রক্তাক্ত অবস্থায় দেখে চিৎকার করতে থাকেন। দ্রুত সেখান থেকে তাকে বগুড়ার শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে আনা হয়। অবস্থার কোনো উন্নতি না হওয়ায় সেখানকার চিকিৎসকদের পরামর্শে গত শনিবার রাতে তাকে ঢাকার শেরেবাংলা নগরে ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব নিউরোসায়েন্স ও হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানেও অবস্থার উন্নতি না হলে গতকাল রবিবার রাতে তাকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। চিকিৎসকরা বলছেন, তার মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণ হচ্ছে। অবস্থা আশঙ্কাজনক।