নিজস্ব প্রতিবেদক : বর্তমানে বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ে ২ লাখ ৭৫ হাজার ৯৬৪টি পদ শূন্য রয়েছে। শূন্য পদ পূরণ একটি চলমান প্রক্রিয়া। জনবল নিয়োগে প্রত্যেক মন্ত্রণালয় সচেষ্ট রয়েছে বলে সংসদে জানিয়েছেন জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী বেগম ইসমাত আরা সাদেক।
রবিবার জাতীয় সংসদে প্রশ্নোত্তর এনামুল হকের এক লিখিত প্রশ্নের জবাবে প্রতিমন্ত্রী সংসদকে এ তথ্য জানান। জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্য এ কে এম মাইদুল ইসলামের অপর এক প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী জানান, বর্তমানে জনপ্রশাসনে ২ হাজার ৬০৩ জন সরকারি কর্মকর্তা রয়েছেন। এর মধ্যে ওএসডি রয়েছেন ২৬৫ জন। জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের তালিকা অনুযায়ী মোট কর্মকর্তার রয়েছেন পর্যায়ক্রমে সচিব ৬২ জন, অতিরিক্ত সচিব ৩০৪ জন, যুগ্ম সচিব ৯২৭ জন, উপসচিব ১৩১০ জন। ওএসডি কর্মকর্তাগণের মধ্যে সচিব ৩ জন, অতিরিক্ত সচিব ৪৬ জন, যুগ্ম সচিব ১৩৯ জন, উপসচিব ৭৭ জন।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘প্রশাসনের বিভিন্ন ধর্মাবলম্বীর মধ্যে সচিব পদে মুসলিম ৫৯ জন, হিন্দু ৩ জন, অতিরিক্ত সচিব মুসলিম ২৫৮ জন, হিন্দু ৪০ জন, খ্রিস্টান ২ জন ও বৌদ্ধ ৪ জন। যুগ্মসচিব পদে মুসলিম ৮০১ জন, হিন্দু ১২১ জন, খ্রিস্টান ৩ জন ও বৌদ্ধ ২ জন। উপসচিব পদে মুসলিম এক হাজার ১৭৩ জন, হিন্দু ১২৮ জন, খ্রিস্টান একজন ও বৌদ্ধ ৮ জন কর্মরত রয়েছেন।
স্বপন ভট্টাচার্য্যের এক প্রশ্নের উত্তরে ইসমাত আরা সাদেক বলেন, ‘বাংলাদেশ সরকারি কর্ম কমিশন (পিএসসি) সাংবিধানিক অনুশাসন অনুযায়ী প্রথম শ্রেণির ক্যাডার, নন-ক্যাডার ও দ্বিতীয় শ্রেণির গেজেটেড কর্মকর্তাদের নিয়োগের জন্য সুপারিশ করে থাকে।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘২০০৮-২০১৩ পর্যন্ত ২৭, ২৮, ২৯, ৩০, ৩১, ৩২ (বিশেষ) ও ৩৩তম বিসিএসের মাধ্যমে মোট ২১ হাজার ৮৫৫ জহন প্রার্থীর সুপারিশ করা হয়েছে। বিসিএসের লিখিত ও মৌখিক পরীক্ষায় উত্তীর্ণ কিন্তু পদ স্বল্পতার কারণে ক্যাডার পদে সুপারিশপ্রাপ্ত নয় এমন প্রার্থীদের মধ্য থেকে ২০০৮-১৩ সময়ে সরকারি কর্ম কমিশন কর্তৃক বিভিন্ন মন্ত্রণালয় বা বিভাগে প্রথম শ্রেণির নন-ক্যাডার পদে এক হাজার ৪০ প্রার্থীকে নিয়োগের সুপারিশ করা হয়েছে।
ইসমাত আরা বলেন, ‘বাংলাদেশ সরকারি কর্ম কমিশন কর্তৃক ২০০৯ হতে ২০১৪ (বর্তমান) পর্যন্ত নন-ক্যাডার প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণিতে সুপারিশকৃত মোট প্রার্থীর সংখ্যা চার হাজার ৪৮৫ জন। এর মধ্যে প্রথম শ্রেণির নন-ক্যাডার প্রার্থীর সংখ্যা ৯৪৪ জন।’
বিবাহ নিবন্ধন ফি সর্বনিম্ন ২০০ টাকা
স্বতন্ত্র সংসদ সদস্য হাজী মো. সেলিমের এক লিখিত প্রশ্নের উত্তরে আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বলেন, বর্তমানে বিবাহ নিবন্ধন ফি সর্বনিম্ন ২০০ টাকা। মন্ত্রী জানান, বর্তমানে একজন নিকাহ রেজিস্ট্রার ৪ লাখ টাকা পর্যন্ত দেনমোহরের ক্ষেত্রে প্রতি হাজারে সাড়ে ১২ টাকা করে নিবন্ধন ফি আদায় করতে পারবেন। দেনমোহর ৪ লাখ টাকার অধিক হলে পরবর্তী প্রতি ১ লাখ টাকায় ১০০ টাকা বিবাহ নিবন্ধন ফি দিতে হবে। তবে দেনমোহর যাই হোক না কেন বিবাহ নিবন্ধন ফি সর্বনিম্ন ২০০ টাকা। সংসদ সদস্য আ খ ম জাহাঙ্গীর হোসাইনের অপর এক প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী জানান, সারাদেশে হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের জন্য এ পর্যন্ত ৫০১ জন হিন্দু বিবাহ নিবন্ধক নিয়োগ দেয়া হয়েছে।
দেশে জেলের সংখ্যা ৬ লাখ ৯০ হাজার
জাতীয় সংসদের প্রশ্নোত্তর পর্বে মত্স্য ও প্রাণিসম্পদমন্ত্রী মোহাম্মদ সাইদুল হক সংসদকে এ তথ্য জানান। দেশে জেলের সংখ্যা ৬ লাখ ৯০ হাজার। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ব্যক্তিগত আগ্রহে দেশের প্রকৃত জেলেদের শনাক্ত করে নিবন্ধন ও পরিচয়পত্র প্রদান কর্মসূচির আওতায় দেশের ৬৪ জেলার ১৪৮ উপজেলায় জরিপের মাধ্যমে এ তালিকা চূড়ান্ত করা হয়েছে। ৩ লাখ ৭৫ হাজার জেলের ডাটা এন্ট্রি করা হয়েছে। ২ লাখ ১৫ হাজার জেলের ছবি উঠানো হয়েছে।
সরকারদলীয় এমপি এ মালেক (ঢাকা-২০)-এর প্রশ্নের উত্তরে মন্ত্রী আরও জানান, গত অর্থবছরে মাছের উত্পাদন ছিল ২৫.৬৩ লক্ষ মেট্রিক টন। ২০১১-১২ অর্থবছরে দেশের আয়ের ৪.৩৯ ও রফতানি আয়ের ২.৪৫ শতাংশ মত্স্য খাত থেকে এসেছে। সরকার আন্তর্জাতিক খ্যাতি সম্পন্ন মত্স্য মাননিয়ন্ত্রণ বিশেষজ্ঞ ড. গ্লেন কেনেডিকে নিয়োগ করে ইউরোপের বাজারে চিংড়ি রফতানিতে সৃষ্ট জটিলতা নিরসন করে। ফলে ২০১৩ সালে বাংলাদেশের কোনো পণ্য রেপিড এলাটভুক্ত হয়নি বা জটিলতার কারণে চিংড়ির কোনো চালান ফেরত আসেনি। ২০১২ সালে ফেরত আসে মাত্র একটি চালান। অথচ ২০০৯ সালে ফেরত এসেছিল ৫৪টি চালান।
মত্স্যমন্ত্রী আরও জানান, ১৯৭৫ সালের পর মত্স্য অধিদফতরের মত্স্য খামার ও হ্যাচারিসমূহ কখনোই সংস্কার করা হয়নি। নারায়ণগঞ্জ-১ আসনের এমপি গোলাম দস্তগীর গাজীর প্রশ্নের জবাবে মত্স্যমন্ত্রী জানান, সরকার মত্স্য সম্পদের উত্পাদন বৃদ্ধি ও সংশ্লিষ্ট খামারিদের আর্থিক সহায়তার জন্য সম্পূর্ণ সুদ মুক্ত ঋণ প্রদান করছে। মত্স্যখাতে ক্ষুদ্রঋণ কর্মসূচি সংক্রান্ত নির্দেশিকা ২০১১ নির্দেশিকা মতো জেলেদের কাছ থেকে শুধু ৫ শতাংশ সার্ভিস চার্জ কাটা হয়।