নিজস্ব প্রতিবেদক,৩০ এপ্রিল ২০২৩:
৩৪ মাস ধরে বেতন বন্ধ থাকায় লাগাতার অবস্থান কর্মসূচি শুরু করেছেন পলিটেকনিক শিক্ষকরা। রোববার (৩০ এপ্রিল) সকাল ১০.০০টা থেকে আগারগাঁও কারিগরি শিক্ষা অধিদপ্তরের সামনে লাগাতার অবস্থান কর্মসূচি শুরু করেন তারা।
আরো পড়ুন: ষষ্ঠ ও সপ্তম শ্রেণির বইয়ে ৪২১ সংশোধনী দিলো এনসিটিবি
শিক্ষকদের সূত্রে জানা যায়, সরকারি ৪৯টি পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটে শিক্ষক-সংকট নিরসনে স্কিলস অ্যান্ড ট্রেনিং এনহ্যান্সমেন্ট প্রজেক্টের (স্টেপ) অধীনে নিয়োগ পেয়েছিলেন ৭৭৭ জন শিক্ষক। কিন্তু বেশ কিছু জটিলতার কারণে ৩৪ মাস ধরে বেতন বন্ধ রয়েছে। ফলে বর্তমানে তারা মানবেতর জীবনযাপন করছেন ।
আরো পড়ুন:
অবস্থান কর্মসূচির বিষয়টি নিশ্চিত করে আন্দোলনরত শিক্ষক মারিয়া বলেন, আমাদের সকল নিয়ম মেনে পরীক্ষার মাধ্যমে নিয়োগ দেয়া হয়েছিলো এবং আমরা আমাদের দায়িত্বও সঠিকভাবে পালন করেছি। কিন্তু রাজস্ব খাতের প্রক্রিয়া, প্রধানমন্ত্রীর অনুমতির অপেক্ষাসহ বিভিন্ন বিষয়ের কথা বলে গত ৩৪ মাস পর্যন্ত আমাদের বেতন বন্ধ রাখা হয়েছে। সর্বশেষ জেনেছি আমাদের ফাইলটি জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে রয়েছে।
এসময় তিনি আরো বলেন, আমাদের মধ্যে এমন অনেকে রয়েছেন যারা পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তি। তাদের অনেকে বেতন না হওয়ায় বাবা-মায়ের চিকিৎসা করাতে পারছেনা, সন্তানকে স্কুলে পাঠাতে পারছেনা।
অবস্থান কর্মসূচির বিষয়ে তিনি বলেন, দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আমাদের অবস্থান কর্মসূচি টানা ২৪ ঘণ্টাই চলবে।
উল্লেখ্য, এর আগে বেতনভাতার দাবিতে বৃহস্পতিবার (২৭ এপ্রিল) জাতীয় প্রেস ক্লাবে বাংলাদেশ পলিটেকনিক টিচার্স ফেডারেশন এবং আমরা মুক্তিযোদ্ধার সন্তান (কারিগরি শাখা বাংলাদেশ) সংগঠনেরে আয়োজনে সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন মুক্তিযোদ্ধার সন্তান, কারিগরি শাখার সভাপতি মো. সুমন হায়দার।
লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, ২০২০ সালের জুলাই থেকে ২০২১ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত বেতন-ভাতা না পেয়ে পরিবার নিয়ে অর্থকষ্টে মানবেতর জীবনযাপন করছি। ৩৪ মাস ধরে বেতন বন্ধ থাকায় এর মধ্যে কয়েকজন শিক্ষক চিকিৎসার অভাবে মারা গেছেন। অনেকে মানসিক ও শারীরিক অসুস্থতা নিয়ে জীবন অতিবাহিত করছেন। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা থাকা সত্ত্বেও রাজস্ব খাতে স্থানান্তর প্রক্রিয়া ধীরগতির কারণে শিক্ষকরা এখন চরম হতাশ।
শিক্ষকদের পরিবারের কথা বিবেচনায় নিয়ে দীর্ঘদিনের অবর্ণনীয় দুর্ভোগের অবসানের জন্য বকেয়া বেতন-ভাতা প্রদান ও চাকরি দ্রুত রাজস্ব খাতে আত্তীকরণের দাবি করা হয়। এ সময় দাবি পূরণ না হলে ৩০ এপ্রিল থেকে কারিগরি শিক্ষা অধিদপ্তরের সামনে অবস্থান কর্মসূচির ঘোষণা দেন তারা।