১৬২ দেশে চাকরিতে আবেদনের বয়স ৩৫, সবচেয়ে কম বাংলাদেশে-পাকিস্তানে

Image

চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা বাড়িয়ে ৩৫ বছর করার পক্ষে নিজেদের মত দিয়েছে প্রশাসন (অ্যাডমিন) ক্যাডার কর্মকর্তাদের সংগঠন বাংলাদেশ অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশন। অবসরের বয়সসীমাও বাড়িয়ে ৬৫ বছর করার আবেদন জানিয়েছে সংগঠনটি। এরপর থেকেই দীর্ঘদিন ধরে ঝুলে থাকা বিষয়টি ফের আলোচনায়। আন্দোলনরত চাকরিপ্রার্থীরা নতুন করে আশাবাদী হয়ে উঠেছেন। তবে এর বিরোধীতাও করছেন অনেকে।

অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশনের আবেদনের বিষয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়কে জানিয়েছে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ। বুধবার (১৮ সেপ্টেম্বর) এ ধরনের একটি চিঠি ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ছে বিষয়টি আলোচনায় আসে। চাকরিতে প্রবেশে বয়স ক্ষেত্রে বিশ্বের অধিকাংশ দেশের চেয়েই বেশ পিছিয়ে বাংলাদেশ। দেশে বিসিএসসহ সরকারি বিভিন্ন চাকরিতে আবেদনের বয়সসীমা ৩০ বছর হলেও নার্সিংয়ে চাকরির ক্ষেত্রে তা ৩৫ বছর। বিভাগীয় প্রার্থীর কোটায়ও ৩৫ বছর।

এছাড়াও বেসরকারি স্কুল-কলেজেও ৩৫ বছর বয়স পর্যন্ত আবেদন করা যায়। তবে বিশ্বের ১৬২টি দেশে সরকারি চাকরিতে আবেদনের বয়সসীমা ৩৫ বছর। অনেক দেশে এটি উন্মুক্ত। সম্প্রতি বিবিসি বাংলার এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়। ভারতে রাজ্যভেদে ও চাকরির ধরন অনুযায়ী আবেদনের বয়সসীমা ৩২ থেকে ৪২ বছর। তবে নারী ও প্রতিবন্ধীরা ৪০ বছর পর্যন্ত আবেদন করতে পারবেন।

শ্রীলঙ্কার সরকারি ওয়েবসাইটে সরকারি চাকরিতে আবেদনের বয়সসীমা উল্লেখ করা আছে। ২০২০ সালে দেশটি সরকারি চাকরিতে আবেদনের বয়সসীমা বৃদ্ধি করেছে। স্নাতক পাস করা ব্যক্তিরা ৪৫ বছর পর্যন্ত আবেদন করতে পারবেন। আগে বয়সসীমা ছিল ৩৫ বছর। সরকারি চাকরির সব ক্যাটাগরির জন্য এ বয়সসীমা প্রযোজ্য নয়।

দক্ষিণ এশিয়ায় শুধু বাংলাদেশ ও পাকিস্তানে সরকারি চাকরিতে আবেদনের সর্বোচ্চ বয়স ৩০ বছর। পাকিস্তানে সরকারি চাকরিতে সর্বনিম্ন ২১ বছর ও সর্বোচ্চ ৩০ বছর পর্যন্ত আবেদন করা যায়। বিশেষ বিশেষ কোটায় ৩২ বছর পর্যন্ত আবেদন করতে পারবেন চাকরিপ্রত্যাশীরা। তবে সম্প্রতি বেলুচিস্তান রাজ্য সরকার বয়সসীমা ৪৩ বছর পর্যন্ত বৃদ্ধি করেছে।

জানা গেছে, বাংলাদেশে বয়সসীমা সংক্রান্ত চিঠিটি বুধবার (১৮ সেপ্টেম্বর) মন্ত্রিপরিষদ থেকে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিবের কাছে পাঠানো হয়েছে। মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের কর্মকর্তারা বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। গত ৫ সেপ্টেম্বর অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশনের মহাসচিব মুহাম্মদ মাহবুবুর রহমান সরকারি চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা ৩৫ বছর ও অবসরের বয়সসীমা ৬৫ বছর পর্যন্ত বাড়ানোর আবেদন জানিয়ে চিঠি দিয়েছেন মন্ত্রিপরিষদ বিভাগে।

সরকারি চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা আন্তর্জাতিক মানদণ্ড অনুযায়ী ৩৫ বছর করার দাবি জানিয়েছেন চাকরিপ্রার্থীরা। শর্তসাপেক্ষে বয়সসীমা উন্মুক্ত করারও দাবি তাদের। এর আগে সাতদিনের আল্টিমেটাম দিয়ে ২৪ আগস্ট মহাসমাবেশ করার ঘোষণা দিয়েছিলেন তারা। তবে বন্যাসহ অন্যান্য পরিস্থিতি বিবেচনায় তা স্থগিত করা জয়।

চাকরিপ্রার্থীরা বলছেন, তাদের দাবি যৌক্তিক হলেও বিগত আওয়ামী লীগ সরকার মানেনি। তারা বয়স না বাড়ানোর সিদ্ধান্তে বরাবরই অনড় ছিলেন। ফলে দীর্ঘদিন আন্দোলন করলেও চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা বাড়েনি। তবে এবার ছাত্র-জনতার আন্দোলনের পর অন্তবর্তী সরকার ক্ষমতায় আসায় তাদের দাবি মানা হবে বলে আশা তাদের।

Image Not Found

Leave a Reply

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।