লালমনিরহাটপ্রতিনিধি :লালমনিরহাটের হাতীবান্ধা আমঝোল নিন্ম মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষকের পদ নিয়ে ওই বিদ্যালয়ের দুই শিক্ষকের মধ্যে দ্বন্দ চলে আসছে।
মঙ্গলবার (১০ মে) দুপুরে প্রধান শিক্ষকের চেয়ার দখল নিয়ে দুই শিক্ষকের মধ্যে পাল্টা-পাল্টি সংর্ঘষে ছাত্র-শিক্ষকসহ উভয় পক্ষে অন্তত ১৫ জন আহত হয়েছে।
পুলিশ ও স্থানীয়রা জানান, ১৯৯৯ সালে আমঝোল এলাকার আহম্মেদ হোসেনের পুত্র আবুল হোসেনসহ কয়েকজন মিলে আমঝোল নিম্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করেন। ওই সময় আবুল হোসেন প্রধান শিক্ষক ও আজিজুল ইসলাম অফিস সহকারী হিসাবে নিয়োগ পেয়ে দায়িত্ব পালন করতে থাকে।
২০০৩ সালে অফিস সহকারী আজিজুল ইসলামের পিতা হাজী মোখলেছার রহমান বিদ্যালয়ের ব্যবস্থাপনা কমিটি’র সভাপতি নির্বাচিত হন। হাজী মোখলেছার রহমান সভাপতি নির্বাচিত হওয়ার পর পরেই সুকৌশলে তার ছেলে অফিস সহকারী আজিজুল ইসলামকে প্রধান শিক্ষক হিসাবে নিয়োগ দেয়। পুরো বিষয়টি নিয়ে শেষ পযর্ন্ত আদালতে মামলা হয়। উভয় পক্ষ ওই মামলায় পাল্টা-পাল্টি রায়ও পায়। কিন্তু কয়েক বার চেষ্টা করে প্রধান শিক্ষকের চেয়ারে বসতে ব্যর্থ হয় আজিজুল ইসলাম।
মঙ্গলবার দুপুরে অফিস সহকারী আজিজুল ইসলাম নিজেকে প্রধান শিক্ষক দাবী করে বিদ্যালয় গিয়ে প্রতিষ্ঠাতা প্রধান শিক্ষক আবুল হোসেনের উপর হামলা চালায়। এ সময় প্রতিষ্ঠাতা প্রধান শিক্ষক আবুল হোসেনকে রক্ষা করতে এগিয়ে আসে উপস্থিত শিক্ষার্থীসহ স্থানীয়রা।
এ নিয়ে উভয় গ্রুপের মধ্যে পাল্টা-পাল্টি সংর্ঘষ হয়েছে। ওই সংর্ঘষে প্রতিষ্ঠাতা প্রধান শিক্ষক আবুল হোসেন, সহকারী শিক্ষক আবুল কালাম আজাদ, অফিস সহকারী আজিজুল ইসলাম ও তার স্ত্রী নাছিমা বেগম, সহকারী শিক্ষক আইনুল হক, শিক্ষার্থী লাভলু, আতিকুর, মমিনুরসহ উভয় পক্ষে অন্তত ১৫ জন আহত হয়েছে। খবর পেয়ে হাতীবান্ধা থানা পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন। স্থানীয়রা আহতদের উদ্ধার করে হাতীবান্ধা হাসপাতালে ভর্তি করান।
প্রতিষ্ঠাতা প্রধান শিক্ষক আবুল হোসেন জানান, তিনি ওই বিদ্যালয়ের বৈধ প্রধান শিক্ষক। তাকে পরিকল্পিত ভাবে হত্যার উদ্দেশ্যে বিদ্যালয়ে হামলা চালানো হয়েছে।
প্রধান শিক্ষকের দাবীদার অফিস সহকারী আজিজুল ইসলাম জানান, তিনি ওই বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক বলে আদালত তার পক্ষে রায় দিয়েছে। কিন্তু আবুল হোসেন অবৈধ ভাবে চেয়ার দখল করে আছেন।
হাতীবান্ধা উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা জুলফিকার হায়দার জানান, প্রতিষ্ঠাতা প্রধান শিক্ষক আবুল হোসেনেই ওই বিদ্যালয়ের বৈধ প্রধান শিক্ষক।
হাতীবান্ধা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ওমর ফারুক জানান, খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন। অভিযোগ পেলে তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।