ডেস্ক,২৭ আগষ্ট:
করোনাভাইরাসের কারণে কেনিয়ায় আগামী বছরের জানুয়ারি পর্যন্ত স্কুল বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এর ফলে বেসরকারি অনেক স্কুল টিকে থাকতে হিমশিম খাচ্ছে। পরিবর্তিত বাস্তবতায় স্কুলকে মুরগির খামার বানানোর ঘটনাও ঘটেছে। তেমনই এক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান মুয়ে ব্রেথেন স্কুল। সেখানকার ক্লাসরুমগুলো একসময় শিক্ষার্থীদের পড়ার শব্দে গমগম করলেও এখন সেখানে শুধু মুরগির ডাক ছাড়া আর কিছু শোনা যায় না। ব্ল্যাকবোর্ডে অঙ্ক করার পরিবর্তে লিখে রাখা হয়েছে টিকা দেওয়ার সময়সূচি।
মধ্য কেনিয়ায় অবস্থিত স্কুলটির মালিক জোসেফ মাইনা জানিয়েছেন, তাঁর স্কুলের আয় বন্ধ হয়ে যাওয়ার কারণে এটিকে মুরগির খামারে পরিণত করতে বাধ্য হয়েছেন তিনি। মার্চে যখন সব স্কুল বন্ধ করে দেওয়ার নির্দেশ আসে, ঠিক তখন থেকে তাঁকে কঠিন সময়ের মুখে পড়তে হয়েছে। তিনি তখন একটি ঋণ শোধ করছিলেন এবং এর কারণে ব্যাংকের সঙ্গে তাঁকে আবার সমঝোতা করতে হয়।
মাইনা বলেন, ‘প্রথমে মনে হয়েছিল যে সব কিছু হারিয়ে গেছে, কিন্তু পরে আমরা সিদ্ধান্ত নিলাম যে টিকে থাকার জন্য আমাদের কিছু করতে হবে।’
কেনিয়ার প্রায় এক-পঞ্চমাংশ শিশুকে শিক্ষা দিয়ে থাকে বেসরকারি স্কুল। এসব প্রতিষ্ঠানের আয়ের মূল উৎস শিক্ষার্থীদের বেতন। এসব স্কুল বন্ধ হয়ে যাওয়ার মানে হচ্ছে তারা কর্মকর্তাদের বেতন দিতে পারবে না এবং মারাত্মক ধরনের অর্থনৈতিক সংকটে পড়বে।
কেনিয়ার প্রাইভেট স্কুল অ্যাসোসিয়েশন জানিয়েছে, অনলাইন শিক্ষণের মাধ্যমে হাতে গোনা কয়েকটি স্কুল তাদের কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে। কিন্তু এতে তারা যে আয় করছে তা শিক্ষকদের মৌলিক চাহিদা পূরণে পর্যাপ্ত নয়। তিন লাখের মতো স্কুলের মধ্যে প্রায় ৯৫ শতাংশ স্কুলের শিক্ষকদের বিনা বেতনে ছুটিতে পাঠানো হয়েছে। এর সঙ্গে ১৩৩টি স্কুল স্থায়ীভাবে বন্ধ হয়ে গেছে।
খারাপ অবস্থা থেকে বাঁচতে রোকা প্রিপারেটরি নামে মধ্য কেনিয়ার একটি বেসরকারি স্কুল নিজেদের খেলার মাঠকে খামারে পরিণত করেছে। স্কুলের প্রতিষ্ঠাতা জেমস কুংগু বলেন, এর আগে কখনো এত খারাপ অবস্থা তৈরি হয়নি। আগে যেখানে খেলার মাঠ ছিল, সেখানে এখন সবজি বড় হচ্ছে।
কুংগু আরো বলেন, ‘আমার অবস্থা অন্য স্কুলগুলোর মতোই। আমার গাড়িতে জ্বালানি ভরার মতো সামর্থ্য নেই। এখানে এখন শিক্ষক বা শিক্ষার্থী কেউ-ই নেই। মানসিকভাবে আমরা অনেক ভেঙে পড়েছি।’ সূত্র : বিবিসি।