সেই এশাকে নিয়ে বিয়ের পিঁড়িতে বসলেন ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি সোহাগ

Image

বিশ্বঃ প্রতিবেদক,৬ফেব্রুয়ারীঃ
ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সাবেক সভাপতি সাইফুর রহমান সোহাগ বিয়ের পিঁড়িতে বসলেন। কনে ইশরাত জাহান এশা। গত বছর কোটা সংস্কার আন্দোলন চলাকালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সুফিয়া কামাল হল শাখা ছাত্রলীগের তৎকালীন সভাপতি ছিলেন ইশরাত জাহান এশা। বুধবার (৫ ফেব্রুয়ারি) রাতে রাজধানীর ইস্কাটনের পু‌লিশ কন‌ভেনশন সেন্টারে তাদের বিয়ের অনুষ্ঠান সম্পন্ন হয়।

এদিকে, এ অনুষ্ঠানকে কেন্দ্র করে বুধবার রাতে পু‌লিশ কন‌ভেনশন সেন্টারে ছাত্রলীগের সাবেক-বর্তমান নেতাদের মিলন মেলা বসে। আবার সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তাদের বিয়ের অনুষ্ঠানের ছবি শেয়ার দিয়ে অভিনন্দনও জানিয়েছেন অনেকেই। ছাত্রলীগের সদ্য সাবেক সাধারণ সম্পাদক গোলাম রব্বানী ফেসবুকে তাদের বিয়ের অনুষ্ঠানের ছবি শেয়ার দিয়ে লিখেছেন, ‘প্রাণঢালা অভিনন্দন প্রিয় বড় ভাই। নিরন্তর শুভকামনা। আল্লাহ ভালো রাখুক’।

এর আগে, বিয়ে নিয়ে গণভবনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে দেখা করেছেন সোহাগ ও এশার পরিবারের সদস্যরা। এরপর প্রধানমন্ত্রীসহ দুই পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে তোলা একটি ছবি সোহাগের ভেরিফায়েড পেজে শেয়ার করেন।

পোস্ট করা ওই ছবির ক্যাপশনে সোহাগ লিখেছেন, ‘আমার অভিভাবক মাননীয় প্রধানমন্ত্রী দেশরত্ন শেখ হাসিনা আমাদের বিয়ের তারিখ ৫ ফেব্রুয়ারি, ২০২০ ঠিক করে দিয়েছেন। সবাই আমাদের জন্য দোয়া করবেন।’

গণমাধ্যমের তথ্যমতে, ২০১৮ সালের ১১ এপ্রিল মধ্যরাতে কোটা সংস্কারের দাবিতে টানা আন্দোলনের মধ্যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সুফিয়া কামাল হলে এক ছাত্রীর রগ কেটে দেওয়ার গুজব ছড়িয়ে পড়লে উত্তেজনা সৃষ্টি হয়। ওই সময় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সুফিয়া কামাল হলের মোর্শেদা নামের উদ্ভিদবিজ্ঞান বিভাগের এক ছাত্রীর রক্তাক্ত পায়ের ছবিও ইন্টারনেটে ছড়িয়ে পড়ে।

সেই সময়ে ওই ছবির সঙ্গে গুজব ছড়িয়ে পড়ে যে হলের মেয়েদের রগ কেটে দিয়েছেন এশা। এই গুজবের ওপর ভিত্তি করে হলের মেয়েরা তাঁকে অবরুদ্ধ করে ফেলেন। এরপর ছাত্রীরা এশাকে মারধর করেন এবং জুতার মালা পরিয়ে লাঞ্ছিত করেন। তাৎক্ষণিক খবর পেয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. এ কে এম গোলাম রব্বানী ওই হলে গিয়ে এশাকে বহিষ্কারের ঘোষণা দেন। ওই রাতেই ছাত্রলীগ সভাপতি সাইফুর রহমান সোহাগ ও সাধারণ সম্পাদক এস এম জাকির হোসাইন স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এশাকে সংগঠন থেকে বহিষ্কারের ঘোষণা দিয়ে গণমাধ্যমে বিবৃতি পাঠান। এ ছাড়া ঘটনা তদন্তে কমিটিও গঠন করে ছাত্রলীগ।

পরে জানা যায়, মোর্শেদার পা কেউ কাটেনি, বরং এশার কক্ষের জানালার কাচে লাথি মারতে গিয়ে তাঁর পা কেটে যায়। এরপর ছাত্রলীগের সাবেক নেতারা এশার সঙ্গে দেখা করেন এবং তাঁর সঙ্গে ঘটে যাওয়া ঘটনার তীব্র নিন্দা জানান। বিষয়টি নিয়ে একাধিকবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও গণমাধ্যমে কথা বলেছেন। পরবর্তী সময়ে এশার বহিষ্কার আদেশ প্রত্যাহার করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ও ছাত্রলীগ।

ওই ঘটনা তদন্তের জন্য গঠিত কমিটির দায়িত্বে থাকা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি আবিদ আল হাসান এবং সাধারণ সম্পাদক মোতাহার হোসেন প্রিন্স ওই সময় বলেন, সেই রাতে পরিস্থিতিটাই তখন এমন ছিল যে তাৎক্ষণিকভাবে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার জন্য এশাকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়েছিল। ওই ঘটনার সব ভিডিও এবং প্রমাণ বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, ওই হলে ছাত্রলীগের একটি অংশ এশার ওপর নির্মমভাবে নির্যাতন চালিয়েছে। অভিযোগে (রগ কাটা বা পা কাটা) সম্পৃক্ততা পাওয়া যায়নি।

Image Not Found

Leave a Reply

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।