সাতক্ষীরা মেডিক্যাল কলেজ ছাত্রলীগের দু’গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনায় আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতির আশঙ্কায় শিক্ষার্থীদের হল ত্যাগের নির্দেশ দিয়েছে কর্তৃপক্ষ। মঙ্গলবার (২ এপ্রিল) সকালে দেওয়া এক জরুরি বিজ্ঞপ্তিতে এ নির্দেশ দেওয়া হয়।
মেডিক্যাল কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক ডা. মো. রুহুল কুদ্দুছ স্বাক্ষরিত ওই বিজ্ঞপ্তিতে বেলা ২টা ৩০ মিনিটের মধ্যে হলে অবস্থানরত সব শিক্ষার্থীকে জরুরি ভিত্তিতে হল ত্যাগের নির্দেশ দেওয়া হয়।
এ বিষয়ে অধ্যাপক রুহুল কুদ্দুছ বলেন, ছাত্রলীগের দুই গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনায় কলেজ ক্যাম্পাসে আইনশৃঙ্খলা পরিপন্থি পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। যেকোনো সময় নতুন করে সংঘর্ষ হতে পারে বা এমন আশঙ্কা রয়েছে। এ জন্য ছাত্রছাত্রীকে অনির্দিষ্টকালের জন্য হল ছাড়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
এর আগে সোমবার (১ এপ্রিল) বেলা ১২টার দিকে কলেজ চত্বরে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে সাতক্ষীরা মেডিক্যাল কলেজে ছাত্রলীগের দুই গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এতে মেডিক্যাল কলেজ ছাত্রলীগের সহসভাপতি প্রিন্স সাহাসহ কয়েকজন আহত হন।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচনকে প্রশ্নবিদ্ধ করতে গত ৩০ ডিসেম্বর রাতে সাতক্ষীরা সরকারি কলেজ ছাত্রদলের যুগ্ম-আহ্বায়ক শিহাবুজ্জামানের নেতৃত্বে সামেকের শিক্ষার্থী ও হাসপাতালের ইন্টার্ন চিকিৎসক আব্দুল মুহিত, শেষ বর্ষের শিক্ষার্থী তানভীর আহমেদসহ অজ্ঞাত আরও কয়েকজন হামলা চালায়। তারা আওয়ামী সমর্থিত ইন্টার্ন চিকিৎসকসহ শিক্ষকদের ওপর হামলার চেষ্টা করে। এ সময় উপস্থিত আনসার সদস্যরা পরিস্থিতি কিছুটা নিয়ন্ত্রণে আনলেও বহিরাগতদের নিয়ে পুরো ক্যাম্পাসজুড়ে ভীতিকর পরিবেশ সৃষ্টি করেন তারা।
পুরো ঘটনাটি সি ক্যামেরায় রেকর্ড হয়। পরে এ ঘটনায় একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে সাতক্ষীরা মেডিক্যাল কলেজ কর্তৃপক্ষ। তদন্ত শেষে কমিটির রিপোর্ট অনুযায়ী মেডিকেল কলেজের শৃঙ্খলা কমিটির গত ২৭ মার্চ ইন্টার্ন ডা. আব্দুল মুহিতকে দুই মাসের ইন্টার্নশিপ স্থগিত করে। তবে এ ঘটনার সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িত তানভীর আহমেদের ব্যাপারে কোনো ব্যবস্থা নেয়নি সামেক কর্তৃপক্ষ।
প্রসঙ্গত, গত ২৯ মার্চ সাতক্ষীরা মেডিক্যাল কলেজ ছাত্রলীগের নতুন কমিটি ঘোষণা করা হয়। এই কমিটিতে আব্দুল মুহিতকে সভাপতি ও তানভীর আহমেদকে সাধারণ সম্পাদক করা হয়েছে। কমিটি ঘোষণার পর থেকে তাদের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছে কমিটির বাকি সদস্য ও পদবঞ্চিতরা।
সোমবার বেলা ১২টায় মুখোমুখি অবস্থানে ছিল দুই গ্রুপের নেতাকর্মীরা। একপর্যায়ে সভাপতি আব্দুল মুহিত ও সাধারণ সম্পাদক তানভীর আহমেদকে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করে অপর গ্রুপের নেতাকর্মীরা। এরপর দুই পক্ষই ক্যাম্পাসে অবস্থান নেয় এবং সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। একপর্যায়ে জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি আশিকুর রহমান ও থানা পুলিশের হস্থক্ষেপে পরিস্থিতি শান্ত হয়।